বৃষ্টির কবলে ম্যাঞ্চেস্টার। ছবি: পিটিআই।
শেষ মেশ বৃষ্টিই জিতল। লিগের খেলায় একাধিক ম্যাচে বৃষ্টি থাবা বসিয়েছিল। সেমিফাইনালেও অব্যাহত বরুণদেবতার দৌরাত্ম্য। ম্যাঞ্চেস্টারের স্থানীয় সময় সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ জানিয়ে দেওয়া হল, ভারত-নিউজিল্যান্ড প্রথম সেমিফাইনাল আর সম্ভব নয় মঙ্গলবার। আজ যেখানে শেষ হয়েছে, বুধবার রিজার্ভ ডে-তে সেখান থেকেই শুরু হবে বাকি ম্যাচ।
এ দিন স্থানীয় সময় দুপুর দুটো নাগাদ বৃষ্টি হয়। ভারতীয় বোলাররা তত ক্ষণে ৪৬.১ ওভার বল করে ফেলেছেন। কিউয়িদের রান ৫ উইকেটে ২১১। খেলা চলাকালীন বৃষ্টি নামায় হতাশ ক্রিকেটভক্তরা। তাঁরা হতাশ হলেও সব চেয়ে খুশি বোধ হয় ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। কারণ ম্যাচ শুরু হলে ওভার সংখ্যা কমিয়ে আনা হত। ২০ ওভারে ভারতের টার্গেট তখন দাঁড়াত ১৪৮ রান। এরকম পরিস্থিতিতে কিউয়ি পেসারদের সামলানো কঠিন হয়ে যেত ভারতের পক্ষে। সেই জায়গায় বুধবার নতুন করে রান তাড়া করতে পারবে কোহালির দল। ফাইনালে পৌঁছনোর স্বপ্ন জিইয়ে রাখল ভারত।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ড যখন বৃষ্টির দখলে, তখন নানা ধরনের জল্পনা চলছিল। বুধবারও যদি বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে কী হবে? সেক্ষেত্রে ভারতেরই ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কারণ লিগ তালিকায় ভারত ১৫ পয়েন্ট পেয়ে একনম্বরে শেষ করেছিল। ১১ পয়েন্ট নিয়ে নিউজিল্যান্ড ছিল চার নম্বরে। ম্যাঞ্চেস্টারের আকাশের দিকেই নজর ভারত সমর্থকদের? মেঘ সরে গিয়ে কি ক্রিকেট হবে?
বিলেতের হাওয়া অফিস আগেই জানিয়েছিল, মঙ্গলবার বৃষ্টি হতে পারে। সেটাই হল। এ দিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। নতুন পিচে আগে ব্যাট করে বড় রান করাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য। কিন্তু, খেলা শুরু হতেই অন্য ছবি।
আরও পড়ুন: ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ভারত-নিউজিল্যান্ড ধুন্ধুমার, বন্ধ রাখা হল আকাশপথ
আরও পড়ুন: শামি বাদ, দেখে নিন নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম একাদশ
কিউয়ি ব্যাটসম্যানদের দাপটের পরিবর্তে ভারতীয় বোলাররা বলকে কথা বলাতে শুরু করেন। প্রথম তিন ওভারে মাত্র এক রান দেন বুমরা-ভুবি জুটি। ১০ ওভারে এক উইকেটে ২৭ রান করে নিউজিল্যান্ড। বুমরাদের কৃপণতম বোলিংয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতে এই বিশ্বকাপে সব চেয়ে কম রান করল কিউয়িরা।
নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে প্রথম ধাক্কাটি দেন বুমরা। তাঁর বলে মার্টিন গাপ্তিলকে দ্বিতীয় স্লিপে ধরেন কোহালি। ঘণ্টায় ১৩৮ কিমি গতিতে শরীর লক্ষ্য করে ধেয়ে আসা বল এড়াতে পারেননি গাপ্তিল (১)। কিউয়িদের রান তখন মাত্র ১।
বুমরার ওই ধাক্কাতেই বেসামাল হয়ে যায় কিউয়িরা। কেন উইলিয়ামসন ও নিকোলস প্রাথমিক ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, রানের গতি বাড়াতে পারেননি কিউয়ি ব্যাটসম্যানরা। নিকোলস ও উইলিয়ামসন জুটিতে ৬৮ রান করার পরে জাডেজার ঘূর্ণিতে ফিরতে হয় নিকোলসকে (২৮)। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক অন্য দিকে দাঁত কামড়ে পড়ে থেকে ইনিংস গড়ার কাজ করেন। উইলিয়ামসন দ্রুত গতিতে রান তোলার মতো ব্যাটসম্যান নন। এ দিন ৯৫ বলে ৬৭ রান করে চহালের বলে ফেরেন উইলিয়ামসন। রস টেলর ৬৭ রানে অপরাজিত থেকে যান। বুমরা, পাণ্ড্য, ভুবি, জাডেজা ও চহাল একটি করে উইকেট নেন। তার পরেই ম্যাঞ্চেস্টার জুড়ে শুধু বৃষ্টি আর বৃষ্টি। খেলা আর শুরু করা সম্ভব হয়নি। বুধবার ফাইনালে যাওয়ার বড় সুযোগ ভারতের। স্বপ্ন দেখছে দেশ।