অভিনন্দন: ম্যাচের পরে দুই অধিনায়ক। বুধবার ম্যাঞ্চেস্টারে। রয়টার্স
তাঁর চোখমুখ দেখে কে বলবেন, ভারতকে ১৮ রানে হারিয়ে আরও একবার তাঁর দল পৌঁছে গেল বিশ্বকাপের ফাইনালে?
বুধবার ম্যাঞ্চেস্টার মহারণ জেতার পরে টেলিভিশনে এক ঝলক দেখা গেল কেন উইলিয়ামসনকে। নির্লিপ্ত মুখে তিনি তখনও চিবিয়ে চলেছেন চিউইং গাম। শান্ত ভাবে হাত মেলাচ্ছেন সতীর্থদের সঙ্গে। আলিঙ্গন করছেন ম্যাট হেনরি, ট্রেন্ট বোল্টদের। রুদ্ধশ্বাস জয়ের দিনে নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়কের এমন নির্বিকার মুখচ্ছবি এ বারের বিশ্বকাপ অ্যালবামে দুর্দান্ত এক ছবি হিসেবেও রয়ে গেল।
ফাইনালে উঠে নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক বলে দিলেন, ‘‘ম্যাচের দিনে কখন কী হবে, তা কেউ বলতে পারবেন না। যে কোনও অকল্পনীয় ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আমি খুশি, আমর দলের প্রত্যেকে দু’দিন ধরে অনবদ্য লড়াই করেছে।’’ আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমরা আন্ডারডগ দল হিসেবে সেমিফাইনালে পৌঁছেছিলাম। ফাইনালে উঠল দল। অধিনায়ক হিসেবে আমার কাছে তা তৃপ্তির।’’
তবে জয়ের দিনেও রবীন্দ্র জাডেজার ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করে গেলেন উইলিয়ামসন। তিনি বলেন, ‘‘জাডেজা খুবই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ক্রিকেটার। ওর বড় শটগুলো একটা সময় আমাদেরও চাপে ফেলে দিয়েছিল। ভারত হারলেও ওর ব্যাটিং ছিল অসাধারণ।’’ এ-ও মেনে নিলেন, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির রান আউটই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। উইলিয়ামসনের কথায়, ‘‘এই পরিস্থিতি থেকে আগেও ধোনি অনেক ম্যাচ বার করে দিয়েছে। আমি মনে করি, ওর রান আউট এই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।’’ আর যিনি ধোনিকে ফেরালেন, সেই মার্টিন গাপ্টিল সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি মনে করি, ওই জায়গা থেকে একমাত্র গাপ্টিলই পারে কাউকে রান আউট করতে। ওর ফিল্ডিং আমাদের দলের সেরা সম্পদ।’’
চাপের মুখে দাঁড়িয়ে ব্যাট হাতে ৬৭ রানের ইনিংস। ফিল্ডিংয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা হার্দিক পাণ্ড্য এবং রবীন্দ্র জাডেজার ক্যাচ মাথা ঠান্ডা রেখে তালুবন্দি করে তিনিই ভারতের ফাইনালে ওঠার স্বপ্নে কাঁটা হয়ে গেলেন। কিন্তু নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক একক কৃতিত্বের তত্ত্বে বিশ্বাসই রাখেন না। তিনি বরং বেশি বিশ্বাস করেন দলীয় সংহতিতে। বলেছেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য ছিল দ্বিমুখী। প্রথমত বোলিং দিয়ে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের চাপের মধ্যে রেখে দাও। দ্বিতীয়ত দুর্দান্ত ফিল্ডিং করতে হবে। আমরা কোনও সময়েই সেই পথ থেকে সরিনি। সেটাই জয় এনে দিল।’’
উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘‘আমাদের মনে হয়েছিল এই পরিবেশে হাতে ২৪০ রান রাখতে পারলে ভারতকে চাপে ফেলা সম্ভব। আর তার জন্য প্রয়োজন ছিল দ্রুত ভারতের উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের ফিরিয়ে দেওয়া। ওরা সেটাই করেছে।’’