আগ্রাসী: ভারতের জন্য তৈরি রাবাডা। ফাইল চিত্র
ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের এখনও দিন চারেক বাকি। কিন্তু তার আগেই কাগিসো রাবাডার ‘বাউন্সার’ ধেয়ে এল বিরাট কোহালির উদ্দেশে। দক্ষিণ আফ্রিকার ফাস্ট বোলার বলে দিলেন, কোহালি তো এখনও পরিণত হননি।
আগামী ৫ জুন, দু’দলের দ্বৈরথে অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে কোহালি বনাম রাবাডার লড়াই। তার আগে একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাবাডা বলে দিয়েছেন, কোহালিকে পাল্টা কেউ কিছু বললে ভারত অধিনায়ক সেটা সহ্য করতে পারেন না। রাবাডা যে ঘটনার কথা বলেছেন, সেটি ঘটেছিল আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ম্যাচে।
ঠিক কী হয়েছিল সে দিন? রাবাডা বলেছেন, ‘‘আমার বলে একটা বাউন্ডারি মেরে বিরাট এগিয়ে এসে আমাকে কিছু একটা বলে। তার পরে আমি যেই ওকে পাল্টা বলি, ও রেগে যায়। আমি ওকে ঠিক বুঝতে পারি না। হয়তো এ সব করে ও নিজেকে তাতিয়ে তোলে। কিন্তু আমার কাছে ব্যাপারটা খুব অপরিণত লেগেছে। কোনও সন্দেহ নেই, বিরাট অসাধারণ ক্রিকেটার। কিন্তু ওকে কেউ কিছু বললে, সেটা সহ্য করতে পারে না।’’
রাবাডা এও মনে করিয়ে দিয়েছেন, তাঁকে কেউ কিছু বললে তিনিও পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি থাকেন। তবে জবাবটা বল হাতে দিতেই পছন্দ করেন তিনি। রাবাডা বলেছেন, ‘‘কেউ কিছু বলে আমার মনঃসংযোগ নষ্ট করতে পারবে না। বরং উল্টে কেউ এ রকম কিছু বললে আমি তেতে যাই। আমাকে কেউ এসে যদি বলে, তোমাকে পিটিয়ে দেব, তুমি তো নরম-সরম ছেলে, তা হলে আমি তাকে বল হাতে জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যাই। ব্যাপারটা খুব সহজ। কেউ যখন আপনাকে এ রকম কিছু বলছে, তখন আপনার কাছে দুটো রাস্তা থাকে। হয় লড়াই করো না হলে পালিয়ে যাও।’’
রাবাডা যে পালিয়ে যাওয়ার লোক নয়, সেটা সে দিন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার। কোহালির শরীর লক্ষ করে ওই ওভারে বল করেন তিনি। যা নিয়ে রাবাডা বলেছেন, ‘‘আমাকে পরিস্থিতি অনুযায়ী, উইকেট অনুযায়ী কৌশল তৈরি করতে হয়েছিল। আমার আর বিরাটের মধ্যে যেটা হয়েছিল, সেটা বাগ্যুদ্ধ ছিল। আমি তো আগেই বলেছি, ও রকম ঘটনা আমাকে তাতিয়ে দেয়। আর আমি আরও বেশি করে নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকি। ধারাবাহিক ভাবে ঠিক জায়গায় বল ফেলার চেষ্টা করে যাই।’’
তবে ভারত অধিনায়ককে নিয়ে যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীলও রাবাডা। গত বছর আইসিসির বর্ষসেরা ক্রিকেটারের দৌড়ে কোহালির কাছে হেরে গিয়েছিলেন রাবাডা। যা নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘কোনও সন্দেহ নেই, কোহালি ওই পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য ছিল। অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলছে ও। গত পাঁচ বছর ধরে ভারতীয় ক্রিকেটের স্তম্ভ। কোহালির কোনও খুঁত খুঁজে পাওয়া কঠিন।’’
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এখন নানা রকম অস্ত্র কাজে লাগান বোলাররা। যেমন নাকল বল, স্লোয়ার বাউন্সার, স্লোয়ার ইয়র্কার। রাবাডা আবার মনে করেন, গতির কোনও বিকল্প হয় না। তিনি বলেছেন, ‘‘গতি সব সময়ই একটা বড় অস্ত্র। কারণ, ব্যাটসম্যানরা কম সময় পায় শট খেলার। তবে গতির পাশাপাশি লাইন-লেংথটাও ঠিক রাখতে হবে। কারণ ব্যাটসম্যানরা এখন গতি কাজে লাগিয়ে নানা রকম শট খেলতে পারে। বিশেষ করে প্রথম ১৫ ওভারে।’’
ভবিষ্যতে দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্ব দেওয়ার কি ইচ্ছে আছে? ‘‘আমি এখনও ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছি না। তবে কোনও দিন যদি সুযোগ আসে, তা হলে চ্যালেঞ্জটা নিতে তৈরি থাকব,’’ বলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান প্রজন্মের অন্যতম সেরা বোলার।
আইপিএলে করা তাঁর একটা ওভারের কথা এখনও ভুলতে পারেননি ক্রিকেটপ্রেমীরা। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে রাবাডার সুপার ওভার। যেখানে তিনি আন্দ্রে রাসেলকে বোল্ড করে দিল্লিকে ম্যাচ জিতিয়ে দিয়েছিলেন। ওই ওভারে টানা ছ’টি বলই ইয়র্কার করেছিলেন রাবাডা। রাসেলকে যে ইয়র্কারে বোল্ড করেন তিনি, সেটাকে আইপিলের সেরা বল বলেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
ও রকম একটা ওভার কি বিশ্বকাপে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে? রাবাডার জবাব, ‘‘ওই একটা ওভার মনে করাবে, যে আমি অতীতে সফল হয়েছি। আর এক বার সফল হলে আবারও হতে পারব।’’