ছবি: এএফপি।
বিশ্বকাপে সব চেয়ে দাপুটে দল দেখাচ্ছে ভারতকেই। এ জন্য বিরাট কোহালির দুরন্ত অধিনায়কত্বকে ধন্যবাদ দিতে হবে। ঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট দল। প্রতিযোগিতার মাঝামাঝি পর্যায়ে তাই বলাই যায়, সব দলের মধ্যে ভারতকেই মাঠে সবথেকে বেশি শাসন করতে দেখা যাচ্ছে। ইংল্যান্ড তবু একটু হলেও হোঁচট খেয়েছে, কিন্তু ভারতের কাছে যেন সব কিছুর জবাব তৈরি।
তাই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত যা ফল, তাতে আশ্চর্য হওয়া উচিত নয়। কোহালির ইতিবাচক অধিনায়কত্বে দলের মানসিকতাতেও বদল এসেছে। ভারতীয় খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষা দেখলেই এখন সেটা বোঝা যায়। প্রতিটা ম্যাচেই ভারত এখন ফেভারিট হিসেবে নামছে, তবু দলের উপর কোনও চাপ আছে বলে মনে হচ্ছে না, সবাই নিজের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলছে।
এক জন নেতার সব চেয়ে বড় সাফল্য হল, সতীর্থদের কাছ থেকে সম্মান অর্জন করা। এই দিক থেকে কোহালির কোনও দিন সমস্যা হয়নি। ওর ব্যাটই যা বলার বলে এবং সেটা নিয়মিত ভাবে। তার সঙ্গে ওর কঠোর পরিশ্রম করার ক্ষমতা এবং মাঠে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার মানসিকতাও রয়েছে। আমি নিশ্চিত এগুলো ওর সতীর্থরা অনুসরণ করতে ভালবাসে এবং নিজেদের সেরাটা দিতেও তৈরি থাকে।
কৌশলগত দিক থেকেও কোহালির কিন্তু সব সময় লক্ষ্য থাকে উইকেট তোলার। এই প্রসঙ্গে বলি, ওয়ান ডে ক্রিকেটে সেই দলই দাপট দেখিয়েছে, যারা বোলিংয়ে ক্রমাগত আক্রমণ করে গিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিনটে স্লিপ ফিল্ডার রাখা হোক বা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেরা বোলারদের টানা বোলিং করতে আনা, কোহালি প্রমাণ করে দিয়েছে আক্রমণই
সেরা রক্ষণ।
কোহালির অধিনায়কত্বে আরও একটা দিক আমার দারুণ লেগেছে। সেটা হল, ক্রমশ পরিণত হয়ে ওঠা। কোহালি জানে মাঠে ধৈর্য রাখার একটা সুফল রয়েছে। তাই প্রয়োজনে সময় দিতে ও রাজি। পাকিস্তান ম্যাচে ওদের দ্বিতীয় উইকেটের পার্টনারশিপ চলার সময় যে ভাবে কোহালি বোলারদের বদলে বদলে ব্যবহার করেছে, তাতেই এটা বোঝা যায়।
ভারতের অন্যতম শক্তি রিজার্ভ বেঞ্চও। ধওয়নের ছিটকে যাওয়া নিঃসন্দেহে ধাক্কা। কিন্তু কে এল রাহুল রোহিত শর্মার যোগ্য সঙ্গী হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছে। বিপক্ষ এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী ঋষভ পন্থ, দীনেশ কার্তিক বা বিজয় শঙ্কর ব্যাটিংয়ে চার নম্বর জায়গাটা নিতে পারে।
ভুবনেশ্বর চোটের জন্য কয়েকটা ম্যাচে নামতে পারবে না। তবে আমি নিশ্চিত, ওর জায়গায় মহম্মদ শামি দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব সামলাতে পারবে। তাই এই হঠাৎ চোট পেয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলোয় কোহালির পরিকল্পনায় প্রভাব পড়া উচিত নয়। ব্যাটিং অর্ডারে প্রথম তিন জন সেরা ফর্মে আছে বলে মনে হচ্ছে। সঙ্গে কুলদীপ যাদবও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছন্দে ফেরায় দুই বিভাগেই ভারতীয় দলকে অপ্রতিরোধ্য লাগছে।
কয়েকটা হাই ভোল্টেজ লড়াইয়ের পরে এ বার ভারতের সামনে কিছুটা সহজ প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। তবে ভারতীয় দলকে দেখে মনে হয় না প্রতিপক্ষকে হাল্কা ভাবে নেবে ওরা। প্যাডেল থেকে পা সরালে চলবে না। বরং কয়ের জন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান যাতে আরও কিছুটা সময় মাঠে পেতে পারে সেটা নিশ্চিত করা যেতে পারে। তাতে নক আউট পর্বের জন্য সবাই আরও ভাল করে প্রস্তুত থাকতে পারবে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।