ভরসা: ভারতীয় বোলিংয়ের অন্যতম দুই অস্ত্র বুমরা ও চাহাল। ফাইল চিত্র
শুরুতেই যখন একটা দলের সব কিছু গণ্ডগোল হয়ে যায়, তখন তারা মরিয়া হয়ে ওঠে। এখন পর্যন্ত দুটো ম্যাচ দেখার পরে এটা পরিষ্কার, দল হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা একেবারেই জমাট বাঁধতে পারেনি। কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে ওদের। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদের প্রতিভা নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু দল হিসেবে ওরা খেলতে পারছে না। যার জেরে প্রথম দুটো ম্যাচে হারতে হল দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ে গভীরতা নেই বলে মনে হচ্ছে। শুরুর দিকে ব্যাটসম্যানরা রান পেলেও মিডল অর্ডারে ভরসা দেওয়ার লোক কোথায়? কুইন্টন ডি’কক এবং ফ্যাফ ডুপ্লেসি ছাড়া আর কাউকে দেখে ভরসা পাওয়ার উপায় নেই। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হারের পরে ওদের অধিনায়ক ডুপ্লেসি ঠিক সমস্যাটার দিকেই আঙুল তুলেছে। ব্যাটসম্যানদের ৩০-৪০ রান করে আউট হলে চলবে না। কোনও এক জনকে বড় রান করতে হবে।
কাগিসো রাবাডার ওপর অনেকটা নির্ভর করে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু ওদের সেরা বোলারকে ছন্দে দেখলাম না। যার ফলে বাকিদের উপরে চাপ পড়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ডেল স্টেনের অভিজ্ঞতা ওদের খুব কাজে আসত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ম্যাচের এক দিন আগেই ছিটকে গেল স্টেন। ভারতের মতো শক্তিশালী ব্যাটিংয়ের বিরুদ্ধে স্টেনের মতো বোলারকে দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার।
আরও পড়ুন: কেদার না শঙ্কর? দেখে নিন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ
অন্য দিকে একটু দেরি করেই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে ভারত। এতে যেটা হল, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলার নীল নকশা ভাল মতো তৈরি করে নিতে পারছে ওরা। তরতাজা অবস্থায় মাঠে নামছে বিরাট কোহালিরা। অন্যতম ফেভারিট হওয়ার চাপ সত্ত্বেও কোহালিরা ফুরফুরে আর হাল্কা মেজাজেই মাঠে নামবে বলে আমার বিশ্বাস।
ভারতের তিন পেসার— যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামি এবং ভুবনেশ্বর কুমারের বোলিং আক্রমণ এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা। ইংল্যান্ডের পরিবেশে কী ভাবে বল করতে হয়, সেটা ওরা ভালই জানে। দক্ষিণ আফ্রিকার নড়বড়ে মিডল অর্ডারের পক্ষে ভারতীয় পেসারদের সামলানো কঠিন হবে। তবে আমার মনে হয়, এই বিশ্বকাপে ভারতের তুরুপের তাস হবে দুই ওপেনার। রোহিত শর্মা এবং শিখর ধওয়ন— দু’জনেই কিন্তু ইংল্যান্ডে সাদা বলের ক্রিকেটে অতীতে দাপট দেখিয়ে এসেছে। ভারত যদি এই বিশ্বকাপে ভাল কিছু করে, তা হলে বুঝতে হবে ওপেনাররা বোর্ডে বড় তুলেছে নিয়মিত।
ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে দাড়িপাল্লায় বসালে স্বাভাবিক ভাবেই ফেভারিট হিসেবে শুরু করবে কোহালির দল। একের বিরুদ্ধে এক তুলনায় ওরা দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে অনেক এগিয়ে। ভারতীয় দলের ভারসাম্যও অনেক ভাল। সাউদাম্পটনের বাইশ গজ সাধারণত রানে ভরা থাকে। আমার মত হল, টস জিতে ব্যাটিং নাও আর স্কোরবোর্ডে বড় রান তুলে বিপক্ষকে চাপে ফেলো। ঠিক বাংলাদেশ যেটা করেছিল।দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি। আর একটা হার মানে বিশ্বকাপ অভিযান মোটামুটি শেষ। কিন্তু তা বলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হাল্কা ভাবে নিলে চলবে না। বিশেষ করে এই ধরনের ফর্ম্যাটে। মনে রাখবেন, ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে যারা পাকিস্তানকে পাত্তা দেয়নি, পরে তারা কিন্তু বড় ধাক্কা খেয়েছিল। (টিসিএম)