ছবি: এএফপি।
বিরাট কোহালির ভারতকে দেখে আমার ২০০৩-এর বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়ার কথা মনে পড়ছে। ভারত এমন একটা দল যাদের প্রত্যেকের বিকল্প আছে। কেউ অপরিহার্য নয়। সে বার ওয়ার্নের গৌরবহীন বিদায়ের পরে রিকি পন্টিংয়েরও এটাই মন্ত্র ছিল। বিরাটও যদি একই সুরে কিছু বলে, তা হলে কারও ক্ষমতা নেই ওকে দোষ দেওয়ার।
মনে পড়ছে, সে বারের অস্ট্রেলিয়ার কথা। নিষিদ্ধ মডুরেটিক নেওয়ায় টুর্নামেন্ট থেকে নির্বাসিত হয় ওয়ার্ন। তবু ওকে ছাড়াই অস্ট্রেলিয়া কাপ জিতেছিল। আমার বিশ্বাস রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তির জোরে এই ভারতও অনেক দূর যাবে। শনিবার আফগানিস্তানের মতো দলের বিরুদ্ধে যে দলই খেলুক, হাসতে হাসতে জিতবে। মানছি, আফগানরা ভারতের মতো দলের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পেয়ে নজর কাড়া কিছু করে দেখাতে চাইবে। সেটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে রশিদ খান আর মহম্মদ নবি। কিন্তু এ বারের ভারতীয় দলটা এত ভাল যে, ওদের বিরুদ্ধে দারুণ কিছু করা কঠিন।
শিখর ধওয়ন ছিটকে যাওয়ায় প্রচুর হইচই হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কে এল রাহুল যে ভাবে খেলেছে তাতে মনে হয় না, ভারতীয় ওপেনারদের নিয়ে সংশয় থাকবে। সেই কারণে এ বার অন্য আর পাঁচটা দেশ থেকে ভারতকে অনেক এগিয়ে রাখছি। শিখরের জায়গায় এসেছে ঋষভ পন্থ। ছেলেটা দুর্দান্ত ব্যাট করে। বিশ্বকাপের প্রথম দলেই ওকে রাখা উচিত ছিল। এমনিতে কোহালির দলে প্রতিটি জায়গায় এত দক্ষ ক্রিকেটার আছে যে, ওদের কোথাও কোনও খামতি চোখে পড়ে না। ভুবনেশ্বর কুমারের জায়গা নিতে তৈরি মহম্মদ শামি। ঋষভ হয়তো কেদার যাদব বা পায়ে চোট পাওয়া বিজয় শঙ্করের জায়গায় খেলবে। ভারতের উচিত আফগানিস্তান ম্যাচটা ঋষভকে খেলিয়ে দেওয়া। তা হলে ও বড় ম্যাচের জন্যে নিজেকে তৈরি করে ফেলবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা ইংল্যান্ডের মতো দলের বিরুদ্ধে ছ’নম্বরে ঋষভ দারুণ মানিয়ে নিতে পারে। তা ছাড়া ফিনিশারের জায়গাটা নিয়ে ভারতের একটু উদ্বেগ থাকতেই পারে। মনে হয় ঋষভকে পেলে সেটাও থাকবে না।
এ বার আমার নিজের দেশের কথা বলি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জয়ের পরে পরিসংখ্যান বলছে, ছ’ ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া। এই পাঁচটা জয়ের তিনটি বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা আর আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেও দাপটে জিতিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়কেও একই চোখে দেখছি। অস্ট্রেলীয় বোলিং দুর্বলতা ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে। বাংলাদেশও ওদের ৩৮১-র জবাবে ৩৩৩ তুলেছে। যেখানে আক্রমণে কামিন্স, স্টার্ক, জ়াম্পারা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ এত রান করলে কী-ই বা বলব! দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড আর নিউজ়িল্যান্ড ম্যাচ বাকি আছে। কঠিনতম পরীক্ষা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ইংল্যান্ড দল ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে রীতিমতো ভাল। নিউজ়িল্যান্ডও কম যায় না। তুলনায় এনগিডিহীন দক্ষিণ আফ্রিকাকে একমাত্র তুলনায় দুর্বল দেখিয়েছে। কিন্তু চোট সারিয়ে ও এ বার দলে ফিরেছে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারলেও আমি অস্ট্রেলিয়াকে কিছুটা নম্বর দেব। এমনিতে বাকি তিন ম্যাচের একটাতে জিতলে অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনালে ওঠা নিশ্চিত হয়ে যাবে। তবে শেষ চারের যুদ্ধে ভারতকে এড়াতে অ্যারন ফিঞ্চদের বাকি সব ম্যাচ জিততে হবে। হয়তো অস্ট্রেলিয়া চায় নিউজ়িল্যান্ড বা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালটা খেলতে। নিশ্চিত ভাবেই ভারতের বিরুদ্ধে নয়।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।