রবিবার ম্যাঞ্চেস্টারে চলতি বিশ্বকাপের সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেই মহারণের আগে আমরা বেছে নিলাম দুই দল থেকে সেরা এগারো। কেমন দেখতে হল ভারত-পাক সম্মিলিত একাদশ? দেখে নিন।
অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচে দুরন্ত পারফরম্যান্স দেখানো শিখর ধওয়ন আগামী ম্যাচটা খেলতে পারবেন না। আঙুলে চোট পাওয়ার কারণে দলে তাঁর পরিবর্তে অন্য কাউকে নামানো হবে। তাই শিখরকে আপাতত বাইরে রেখেই দেখে নেওয়া যাক আগামী ভারত-পাক ম্যাচে দুই দলের সম্মিলিত সেরা একাদশ।
ওপেনার হিসাবে প্রথমেই রোহিত শর্মার নাম উঠে আসবে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুরন্ত ইনিংস খেলেছেন রোহিত শর্মা। উইকেটের একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে রোহিত পার্টনারশিপ করে গিয়েছেন কখনও কোহালি, কখনও লোকেশ রাহুল আবার কখনও ধোনির সঙ্গে। ফলে প্রথম ম্যাচ জিততে সমস্যা হয়নি ভারতের। এটা ছিল তাঁর কেরিয়ারের ২২তম শতরান। পরের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন হিটম্যান।
রোহিতের সঙ্গে থাকবেন ইমাম উল হক। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৫৩ রান করার পরে লেগস্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে আউট হন ইমাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে রান না পেলেও পরের দুই ম্যাচে বেশ ভাল খেলেছেন। তাই আমাদের দলের ওপেনার তিনিই।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে খুব একটা রান করতে পারেননি কোহালি। মাত্র ১৮ রান করেছিলেন। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্ধর্ষ খেলেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৭২ বলে ৮২ রান করেছেন। তাই তিন নম্বরে থাকবেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান।
টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম হাজার রানের রেকর্ড বিরাট কোহালির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন পাকিস্তানের বাবর আজম। প্রথম থেকেই তিনি মিডল অর্ডারেই রয়েছেন। ওয়ান ডে ক্রিকেটে তাঁর গড় রান ৫০ এবং স্ট্রাইক রেট ৮৬.১৫। আমাদের দলের ৪ নম্বর তিনিই।
বাবর আজম ছাড়া পাকিস্তানের আরও এক মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হলেন মহম্মদ হাফিজ। অল রাউন্ডার হাফিজের স্ট্রাইক রেট ৪৮.৬৭। তিনি থাকছেন পাঁচ নম্বরে।
ছ’নম্বরে থাকছেন ওয়ান অ্যান্ড ওনলি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে ধোনির পারফরম্যান্স খুব একটা ভাল ছিল না। তবে ২০১৯টা বেশ ভাল কাটছে তাঁর। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মাঠে নেমে নতুন বিশ্বরেকর্ড করেন ধোনি। তিনি প্রথম উইকেট রক্ষক, যিনি ৬০০টি আন্তর্জাতিক ইনিংসে উইকেট কিপিং করলেন।
কিংবদন্তী অলরাউন্ডার কপিল দেবের সঙ্গে ইতিমধ্যে তুলনা টানা হয় হার্দিকের। যদিও এই তুলনা হার্দিকের অপছন্দ। এখনও পর্যন্ত ৪৭টি ওয়ান ডে খেলেছেন হার্দিক। তাঁর ব্যাটিং গড় ৩০.৫৩। টেস্ট সেঞ্চুরিও রয়েছে। তাঁর ওয়ান ডের বোলিং গড় ৪১.৯৭। উইকেট ৪৪টি। তিনি এই দলের সাত নম্বরে থাকছেন।
দুই দলের বোলারদের মধ্যে চারজনকে বেস্ট বোলারের তকমা পেতে পারেন। ভারতের যুজবেন্দ্র চহাল, যশপ্রীত বুমরা এবং পাকিস্তানের মহম্মদ আমির ও ওয়াহাব রিয়াজ।
বিশ্বকাপে অভিষেক ম্যাচেই ৫১ রানে চার উইকেটে নিয়েছেন যুজবেন্দ্র চহাল। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ডেভিড ওয়ার্নার এবং গ্রেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট নিয়ে ভারতের জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে দিয়েছিলেন। চহালের লেগ-স্পিন সব সময়েই প্রতিপক্ষের ভয়ের কারণ।
স্লো বল এবং ইয়র্কারের তারতম্যে যশপ্রীত সব সময়ই অনবদ্য। এখনও পর্যন্ত ভারত বিশ্বকাপে যে দুটো ম্যাচ খেলেছে, দুটোটেই প্রশংসনীয় বল করেছেন বুমরা। রবিবার ম্যাঞ্চেস্টারের ম্যাচে ভারত-পাকিস্তানের পাশাপাশি আরও একটি লড়াই চলবে, যশপ্রীত বুমরা বনাম মহম্মদ আমির।
২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে একা হাতে ভারতীয় দলের টপ অর্ডারকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের মহম্মদ আমির। সে বার মাত্র ৬ ওভার বল করে ১৬ রান খরচ করেই ডাগ আউটে পাঠিয়ে ছিলেন রোহিত, শিখর ও বিরাটকে। ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপে সর্বাধিক উইকেট নেওয়ার তালিকায় পয়লা নম্বরে রয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ১০টি উইকেট। আমাদের দলের পেস ব্যাটরির দায়িত্বে থাকবেন তিনি।
দু’বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে ৮.৪ ওভারে ৮৯ রান খরচ করার পরেই ওয়াহাব রিয়াজকে কার্যত বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছিলেন নির্বাচকেরা। তার পরেই অদ্ভুত ভাবে শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপের দলে ডাক পান ওয়াহাব। ৩৩ বছরের বাঁ হাতি এই পাক পেসার বিশ্বকাপে ভাল ফর্মে রয়েছেন। চলতি বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ৪টে উইকেট পেয়েছেন তিনি।