ছবি এপি।
ভারত-পাক ম্যাচ যে কতটা উত্তেজক ও ভয়ঙ্কর হতে পারে তার আন্দাজ পাওয়া গেল হরভজন সিংহের বলা গল্পে। ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারত-পাক ম্যাচের বিরতিতে প্রায় হাতাহাতির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল হরভজন ও মহম্মদ ইউসুফের তর্ক। এমনকি সেই লড়াই অন্যরা না থামালে দৃষ্টিকটূ পরিণতি হতে পারত।
১৬ বছর আগের সেই গল্প বলার সময় মুখে হাসি ভাজ্জির। সেই মুহূর্তে যদি ওয়াসিম আক্রম, রাহুল দ্রাবিড় ও জভগল শ্রীনাথ ঝগড়া না থামাতেন তা হলে বিশ্বকাপের মাঝে বড় বিতর্কে মধ্যে জড়িয়ে পড়তেন হরভজন। কারণ, তর্কের সময় দু’জনের হাতেই ছিল কাঁটা চামচ। উত্তেজনাও ক্রমশ বাড়ছিল। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে হরভজন বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কথা শুরু হয়েছিল মজার ছলে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তা তর্কে পরিণত হয়। সে ম্যাচের প্রথম একাদশে আমি সুযোগ পাইনি। আমার পরিবর্তে অনিল (কুম্বলে) ভাইকে খেলানো হয়। এ ধরনের ম্যাচে সুযোগ না পেলে এমনিতেই মেজাজ ঠিক থাকে না।’’
সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘লাঞ্চের সময় আমি যে টেবলে বসেছিলাম, ঠিক তার উল্টো দিকে বসেছিল ইউসুফ ও শোয়েব আখতার। ইউসুফ ও আমি দু’জনেই পঞ্জাবি বলি। তাই আমরা কথা বলছিলাম। ঠাট্টা করছিলাম একে অপরের সঙ্গে। হঠাৎ আমার ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে ইউসুফ। আমিও কথা শোনাতে ছাড়িনি। কেউ কোনও আন্দাজ পাওয়ার আগেই আমরা নিজেদের চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়েছিলাম। দু’জনের হাতেই ছিল কাঁটা চামচ।’’
গল্প বলতে, বলতে হাসছিলেন ভাজ্জি। কিন্তু সেই মুহূর্তে বিষয়টি একেবারেই মজার ছিল না। হরভজন বলেন, ‘‘রাহুল (দ্রাবিড়) ও শ্রী (শ্রীনাথ) আমাকে থামায়। ওয়াসিম (আক্রম) ও সইদ (আনোয়ার) ভাই সরিয়ে নিয়ে যায় ইউসুফকে। দুই শিবিরেই সিনিয়র ক্রিকেটারেরা আমাদের আচরণে বিরক্ত হয়েছিল। দ্বিতীয় বার এই ভুল না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল আমাদের।’’ আরও বলেন, ‘‘১৬ বছর কেটে গিয়েছে। ইউসুফের সঙ্গে এখন দেখা হলে এই মুহূর্তটার কথা ওঠেই। দু’জনেই বুঝি কতটা সরল ছিলাম আমরা। কত বড় ভুল করে ফেলছিলাম।’’
২০০৩ বিশ্বকাপের পরে ২০১১ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালেও ভারত-পাক ম্যাচ ঘিরে ছিল উত্তেজনা। কারণ, সীমান্তের খুব কাছেই মোহালি। দু’দেশের মধ্যে দূরত্ব একেবারেই কম। হরভজন বলছিলেন, ‘‘একেবারে অন্য রকম ছিল সে ম্যাচ। মোহালি আমার ঘরের মাঠ। ভারতীয় সমর্থকরা চেয়েছিলেন, যে করেই হোক সে ম্যাচটি জিততে। সবার মধ্যেই সে ম্যাচ ঘিরে অদ্ভুত উত্তেজনা লক্ষ্য করেছিলাম।’’ হরভজন জানিয়েছেন, পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাঁর এখনও খুব ভাল বন্ধুত্ব। ‘‘শাহিদ আফ্রিদি ও শোয়েব আখতার খুব ভাল বন্ধু। একসঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছি। লাঞ্চ করেছি। কিন্তু মাঠে নামলে কোনও বন্ধুত্ব আর কাজ করে না।’’