আর্চার-উড অস্ত্রে লর্ডসে ইতিহাস লেখার অঙ্গীকার প্রত্যয়ী মর্গ্যানের

ফাইনাল নিয়ে মর্গ্যানের মন্তব্য, ‘‘আমাদের কোনও চাপ নেই। ভয়ে গুটিয়ে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। নিজেদের যোগ্যতায় লর্ডসে ফাইনাল খেলার টিকিট অর্জন করেছি। ফাইনালটাও উপভোগ করব। আশা করছি, সে ভাবেই সাফল্য আসবে।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ০৪:৩৪
Share:

তৃপ্ত: ফাইনালে উঠে দলীয় সংহতিকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন মর্গ্যান। ফাইল চিত্র

চার বছর আগের বিশ্বকাপে প্রাথমিক পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল ইংল্যান্ড। এ বারের দলের অধিনায়ক অইন মর্গ্যান স্বপ্নেও ভাবেননি, তাঁর নেতৃত্বে ইংরেজ ক্রিকেটাররা ২৭ বছর পরে বিশ্বের সব চেয়ে বড় ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলবে। তা-ও অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলকে সেমিফাইনালে কার্যত ধরাশায়ী করে।

Advertisement

আবেগে ভাসতে থাকা ইংরেজ অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘মাঠের প্রত্যেক ক্রিকেটার এবং ড্রেসিংরুমে প্রতিটি সদস্য আমাদের সেমিফাইনাল ম্যাচটার প্রত্যেকটি বল উপভোগ করেছে। দলের কোনও এক জনের মধ্যেও নিজেকে প্রয়োগ করা বা দায়বদ্ধতার প্রশ্নে খামতি ছিল না। সব চেয়ে বড় কথা, গোটা দলটা মারাত্মক মাথা ঠান্ডা রেখে ম্যাচটা বার করেছে। যেন আমরা কোথাও ঘুরতে বেরিয়ে ছিলাম। বিশেষ করে, আমাদের বোলাররা যেন অনায়াসে সব কিছু করে দেখাল। যা সত্যিই আমার কাছে অবিশ্বাস্য। একই সঙ্গে অবিশ্বাস্য বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠাও। যা সত্যি হবে স্বপ্নেও ভাবিনি।’’ মর্গ্যান সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আমাদের দলের বিশেষত্বটা কোথায় জানেন? ক্রিকেট কী ভাবে উপভোগ করতে হয়, তা আমরা শিখে গিয়েছি। সেমিফাইনাল ম্যাচটা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এমনকি কোনও ম্যাচে খারাপ খেললেও আমরা ভেঙে পড়িনি। এখন যদি আপনারা কেউ বলেন যে, ২০১৫-তে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পরেও কী ভাবে এ বার আমরা ফাইনালে খেলছি তা হলে আমার হেসে ফেলা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। কারণ এ বার যা কিছু হয়েছে, তা খেলা উপভোগ করতে করতেই হয়েছে।’’

রবিবারের ফাইনাল নিয়ে মর্গ্যানের মন্তব্য, ‘‘আমাদের কোনও চাপ নেই। ভয়ে গুটিয়ে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। নিজেদের যোগ্যতায় লর্ডসে ফাইনাল খেলার টিকিট অর্জন করেছি। ফাইনালটাও উপভোগ করব। আশা করছি, সে ভাবেই সাফল্য আসবে।’’ লর্ডসে ফাইনাল। যে মাঠে গ্রুপ লিগে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পরে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ-ভবিষ্যতই কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সেখান থেকে মর্গ্যানরা ঘুরে দাঁড়ান টানা তিনটি ম্যাচে জিতে। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক তার জন্য বোলারদের অনেকটাই কৃতিত্ব দিচ্ছেন। এমনকি সেমিফাইনালেও জোফ্রা আর্চারদের জন্য সব কিছু এতটা সহজে হাতের মুঠোয় চলে এসেছে বলে তিনি মনে করছেন। ‘‘আমাদের বোলিং বিভাগের জন্য যতই প্রশংসা করি, সেটা যথেষ্ট হবে না। ওরা ধারাবাহিক ভাবে উইকেট তুলেছে। অবশ্যই এই ধরনের টুর্নামেন্টে ভাগ্যের সাহায্যও একটু হলে দরকার পড়ে। আমরা সেটাও পাচ্ছি। কিন্তু আসল কথা তো লাইন ঠিক রেখে সেরা বোলিংটা করে যাওয়া। সেটা আমাদের বোলাররা দারুণ ভাবেই করেছে। তা ছাড়া একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় দল খেলেছে। যা কাজেও লেগেছে। যে কারণে স্টিভ (স্মিথ) আর ক্যারি (অ্যালেক্স) যে ভাবে ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছিল, তখনও আমাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা কাজে এসেছে।’’

Advertisement

ফাইনালে প্রতিপক্ষ নিউজ়িল্যান্ড নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওরা ভারতের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে সত্যিই অসাধারণ খেলেছে। বিশেষ করে, ওদের বোলিং বিভাগ তো দুরন্ত। তাই রবিবার ফাইনালে ওদের মোটেই সহজে হারানো যাবে না।’’

ইংল্যান্ড দলের অস্ট্রেলীয় কোচ ট্রেভর বেলিস কিন্তু অসম্ভব সাবধানী। বিশ্বকাপের পরে তিনি ইংল্যান্ডের দায়িত্ব ছাড়বেন। অর্থাৎ অ্যাশেজ সিরিজে তাঁকে জো রুটদের কোচের ভূমিকায় আর দেখা যাবে না। বেলিস অবশ্য এখনই সে সব নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চান না। আপাতত রবিবারের ফাইনালই তাঁর ধ্যানজ্ঞান। তিনি বলেছেন, ‘‘এজবাস্টনে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে উঠে আমরা নিজেদের মধ্যে অনেকটা সময় নিয়ে কথা বলেছিলাম। যে আলোচনা থেকে আমাদের উপলদ্ধি, এখনও এই টুর্নামেন্টে কিছুই জিতিনি।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আমি ক্রিকেটারদের বলছি, এখন তোমাদের নিয়ে অনেক কথা হবে। সবাই তোমাদের ফেভারিট হিসেবে চিহ্নিত করে হইচই করবে। কিন্তু তোমাদের এখন একটাই কাজ। কোনও ভাবেই আশপাশে যা কথা হচ্ছে, তাতে কান দিলে চলবে না। ফোকাস যেন কোনও ভাবে সরে না যায়। এখনও অনেক কাজ বাকি। চার বছর ধরে দলটা ওয়ান ডে-তে সাফল্য পাচ্ছে। কিন্তু বিশ্বকাপটা জিততে না পারলে সে সব কেউ মনে রাখবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement