বেয়ারস্টোর ঝড়ে ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে

ভারতের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো দুর্দান্ত রান করে ইংল্যান্ডকে ম্যাচ জেতানোর পরেই ছন্দে ফিরে গিয়েছে অইন মর্গ্যানের ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচের ৭২ ঘণ্টা পরেই ফের শতরান জনি বেয়ারস্টোর ব্যাটে। ফের অর্ধশতরানের ইনিংস খেললেন জেসন রয়ও। 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৯ ০৪:৩২
Share:

কারিগর: টানা দু’ম্যাচে সেঞ্চুরি করে হুঙ্কার ওপেনার জনি বেয়ারস্টোর। (ডানদিকে) নিউজ়িল্যান্ড ইনিংসে ভাঙন ধরালেন জোরে বোলার মার্ক উড। পেলেন তিন উইকেট। ইংল্যান্ডও চলে গেল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। রয়টার্স, গেটি ইমেজেস

বিশ্বকাপের শুরুটা দারুণ করেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু লিগ পর্বের মাঝখানে পর পর শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হারের ধাক্কায় সেমিফাইনালে অইন মর্গ্যানের দল যেতে পারবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল।

Advertisement

সেই প্রশ্ন যাঁরা তুলেছিলেন, তাঁদের ভুল প্রমাণিত করেই বুধবার এই বিশ্বকাপের তৃতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে চলে গেল ইংল্যান্ড। তাও ২৭ বছর পরে। যার মাঝে কেটে গিয়েছে ছ’টি বিশ্বকাপ। শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ইংল্যান্ড করেছিল ৩০৫-৮। সেই রান তাড়া করতে নেমে ৪৫ ওভারে নিউজ়িল্যান্ডের ইনিংস শেষ হয় ১৮৬ রানে। অইন মর্গ্যানের দল ম্যাচ জেতে ১১৯ রানে।

ভারতের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো দুর্দান্ত রান করে ইংল্যান্ডকে ম্যাচ জেতানোর পরেই ছন্দে ফিরে গিয়েছে অইন মর্গ্যানের ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচের ৭২ ঘণ্টা পরেই ফের শতরান জনি বেয়ারস্টোর ব্যাটে। ফের অর্ধশতরানের ইনিংস খেললেন জেসন রয়ও।

Advertisement

এ দিন নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৯৯ বলে ১০৬ রান করলেন বেয়ারস্টো। যে ইনিংস সাজানো ছিল ১৫টি চার ও একটি ছক্কায়। ৬১ বলে ৬০ রান করলেন জেসন রায়। কেন উইলিয়ামসনের দলের বিরুদ্ধে বেয়ারস্টো-জেসন ওপেনিং জুটিতে উঠল ১২৩ রান।

বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হয়ে পর পর দুই ম্যাচে শতরান পাওয়ায় স্বভাবতই খুশি বেয়ারস্টো। ম্যাচ শেষে বলে গেলেন, ‘‘সত্যিই পর পর দুই ম্যাচে শতরান পেয়ে সত্যিই দারুণ লাগছে। সেমিফাইনালেও দলের হয়ে ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চাই। ২৭ বছর পরে সেমিফাইনালে যাওয়ার মজাই আলাদা।’’

টস জিতে ইংল্যান্ড অধিনায়ক মর্গ্যান ব্যাটিং নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর দুই ওপেনার ভাল খেললেও মাঝের সারির ব্যাটসম্যানেরা এ দিন রান পাননি। প্রথম ৩০ ওভারে ইংল্যান্ডের রান ছিল ১৯৪-১। কিন্তু তার পরের ২০ ওভারে সে ভাবে নিউজ়িল্যান্ড বোলিং বিভাগকে আক্রমণ করতে পারেননি ইংল্যান্ডের মাঝের সারির ব্যাটসম্যানরা। শেষ ২০ ওভারে সাত উইকেটের বিনিময়ে ১১১ রান তোলে ইংল্যান্ড। না হলে আরও বাড়তে পারত তাদের রান। ইংল্যান্ডের হয়ে আর বলার মতো রান করেন জো রুট (২৫ বলে ২৪ রান) ও অধিনায়ক অইন মর্গ্যান (৪০ বলে ৪২ রান)। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে এ দিন নিউজ়িল্যান্ডের প্রথম একাদশে ছিলেন না পেসার লকি ফার্গুসন। তার সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগায় ইংল্যান্ড দল।

অন্য দিকে, শুরুতেই হেনরি নিকোলস (০) ও মার্টিন গাপ্টিলের (৮) উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে নিউজ়িল্যান্ড। এর আগের ম্যাচগুলোতে চাপের মুখে একা কুম্ভ হয়ে লড়া নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও (৪০ বলে ২৭ রান) এই ম্যাচে রান পাননি। নিউজ়িল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ রান টম লাথামের (৬৫ বলে ৫৭ রান)। ইংল্যান্ডের হয়ে নয় ওভার বল করে ৩৪ রানে তিন উইকেট নেন মার্ক উড।

স্কোরকার্ড
ইংল্যান্ড ৩০৫-৮ (৫০)
নিউজ়িল্যান্ড ১৮৬ (৪৫)

ইংল্যান্ড
রয় ক স্যান্টনার বো নিশাম ৬০•৬১
বেয়ারস্টো বো হেনরি ১০৬•৯৯
রুট ক লাথাম বো বোল্ট ২৪•২৫
বাটলার ক উইলিয়ামসন বো বোল্ট ১১•১২
মর্গ্যান ক স্যান্টনার বো হেনরি ৪২•৪০
স্টোকস ক হেনরি বো স্যান্টনার ১১•২৭
ওকস ক উইলিয়ামসন বো নিশাম ৪•১১ প্লাঙ্কেট ন. আ. ১৫•১২
রশিদ বো সাউদি ১৬•১২
আর্চার ন. আ. ১•১
অতিরিক্ত ১৫
মোট ৩০৫-৮(৫০)
পতন: ১-১২৩ (রয়, ১৮.৪), ২-১৯৪ (রুট, ৩১.৪), ৩-২০৬ (বেয়ারস্টো, ৩১.৪), ৪-২১৪ (বাটলার, ৩৪.২), ৫-২৪৮ (স্টোকস, ৪১.৬), ৬-২৫৯ (ওকস, ৪৪.৫), ৭-২৭২ (মর্গ্যান, ৪৬.১), ৮-৩০১ (রশিদ, ৪৯.৩)।
বোলিং: মিচেল স্যান্টনার ১০-০-৬৫-১, ট্রেন্ট বোল্ট ১০-০-৫৬-২, টিম সাউদি ৯-০-৭০-১, ম্যাট হেনরি ১০-০-৫৪-২, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ১-০-১১-০, জেমস নিশাম ১০-১-৪১-২।

নিউজ়িল্যান্ড
গাপ্টিল ক বাটলার বো আর্চার ৮•১৬
িনকলস এলবিডব্লিউ বো ওকস ০•১
উইলিয়ামসন রান আউট ২৭•৪০
টেলর রান আউট ২৮•৪২
লাথাম ক বাটলার বো প্লাঙ্কেট ৫৭•৬৫
নিশাম বো উড ১৯•২৭
গ্র্যান্ডহোম ক রুট বো স্টোকস ৩•১৩
স্যান্টনার এলবিডব্লিউ বো উড ১২•৩০
সাউদি ন. আ. ৭•১৬
হেনরি বো উড ৭•১৩
বোল্ট স্টাঃ বাটলার বো রশিদ ৪•৭
অতিরিক্ত ১৪ মোট ১৮৬ (৪৫)
পতন: ১-২ (নিকলস, ০.৫), ২-১৪ (গাপ্টিল, ৫.২), ৩-৬১ (উইলিয়ামসন, ১৫.১), ৪-৬৯ (টেলর, ১৬.৪), ৫-১২৩ (নিশাম, ২৫.১), ৬-১২৮ (গ্র্যান্ডহোম, ২৮.১), ৭-১৬৪ (লাথাম, ৩৮.৩), ৮-১৬৬ (স্যান্টনার, ৩৯.২), ৯-১৮১ (হেনরি, ৪৩.৪), ১০-১৮৬ (বোল্ট, ৪৪.৬)।
বোলিং: ক্রিস ওকস ৮-০-৪৪-১, জোফ্রা আর্চার ৭-১-১৭-১, লায়াম প্লাঙ্কেট ৮-০-২৮-১, মার্ক উড ৯-০-৩৪-৩, জো রুট ৩-০-১৫-০ আদিল রশিদ ৫-০-৩০-১, বেন স্টোকস ৫-০-১০-১।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement