আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে যুবরাজ সিংহ অবসরের কথা ঘোষণা করতেই অবসাদে ছেয়ে গিয়েছে গোটা ক্রিকেট মহল। ফেসবুক, টুইটারে এখন আলোচনার কেন্দ্রে তিনিই। বিশ্বকাপজয়ী তারকা ক্রিকেটারের এ ভাবে অবসর নেওয়া নক্ষত্র পতন বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। চলুন দেখে নেওয়া যাক যুবরাজ সিংহের শেরা পারফরম্যান্সগুলি।
২০০০ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে আইসিসি-র নক আউট টুর্নামেন্টে আবির্ভাব হয় যুবির। প্রথম ম্যাচে ব্যাট না পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার পেসার ব্রেট লি, গ্লেন ম্যাগ্রাথ, জাসন গিলেস্পির বিরুদ্ধে ৮০ বল খেলে দুর্ধর্ষ ৮৪ রান করেন। বিশ্ব ক্রিকেটে তার আবির্ভাবটা হয়েছিল ঠিক এ ভাবেই।
২০০২-এর ন্যাটওয়েস্ট সিরিজে ইংল্যান্ডের দেওয়া ৩২৫ রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে মহম্মদ কাইফের সঙ্গে ১২১ রানের পার্টনারশিপ কোনও ভারতীয় ভুলতে পারেন! ব্যক্তিগত ৬৯ রানে আউট হয়ে গেলেও এই জয়ের পেছনে তার অবদান ভোলার নয়।
২০০৪-এ ত্রিদেশীয় এক দিনের সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিডনিতে ১৩৯ রান করে অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের কোমর ভেঙে দেন যুবরাজ। এটাও তাঁর জীবনের সেরা ইনিংসগুলির মধ্যে একটি।
২০০৪ সালেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্টে প্রথম শতরান করেন তিনি। ওই ম্যাচে ১৫০ রানের মধ্যে ৭টি উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও ইরফান পঠানের সঙ্গে জুটি বেঁধে এই শতরান করেন যুবি।
২০০৭-এ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও একটি শতরান করেন যুবি। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি ভারতের ঝুলিতে জয় এনে দেন। এই ম্যাচে যুবি ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা বললেই ভারতের কাপ জয় ছাড়াও যে ঘটনাটি সবার মনে আসে, সেটি হল যুবরাজের ছয় বলে ছ’টি ছয়। এই ম্যাচে স্টুয়ার্ট বর্ডের বলে ছয় বলে ছ’টি ছয় তো তিনি মারেনই, সঙ্গে করেন সবচেয়ে কম বলে হাফ সেঞ্চুরি করার রেকর্ড।
২০০৭ সালেই টেস্টে তাঁর জীবনে সর্বাধিক ব্যক্তিগত রানটি করেন যুবি। বেঙ্গালুরুতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৬৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুর্দান্ত ৭০ রানের একটি ইনিংস খেলেন যুবরাজ, যা অস্ট্রেলিয়ার হারের একটি মুখ্য কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তিনি ওই ৭০ রান করেন মাত্র ৩০ বল খেলে।
২০০৮ সালে রাজকোটে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য ১৩৮ রান করে ৩৮৭ রানের পাহাড় সমান লক্ষ্যমাত্রা রাখতে প্রধান ভূমিকা নেন যুবরাজ। মাত্র ৬৪ বলে শতরান করে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্রুততম শতরান করার রেকর্ডও করেন তিনি। গোটা ইনিংসে কোমরে একটি বেল্ট পরে ব্যাট করেছিলেন যুবি।
২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে বল হাতে ম্যাজিক দেখান যুবরাজ। এই ম্যাচে একাই তিনি ৫টি উইকেট তুলে নেন। যা এক দিনের ক্রিকেটে তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ বোলিং পারফরম্যান্স। এ ছাড়াও এই ম্যাচে তিনি হাফ সেঞ্চুরি করে বিশ্বকাপে একটি ম্যাচে ৫ উইকেট ও ৫০ রান করার বিশ্ব রেকর্ড করেন।
২০১২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাত্র ১৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন। এটাই তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সর্বশ্রেষ্ঠ বোলিং পারফরম্যান্স।
২০১৩ সালে কটকে আস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৫ বলে ৭৭ রানের মারকুটে ইনিংস খেলেন। যা তাঁর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি কেরিয়ারে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান।
২০১৭ সালে কটকেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক দিনের ক্রিকেটে নিজের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানটি করেন যুবরাজ। এই ম্যাচে ১২৭ বলে ১৫০ রান করে ইংল্যান্ডের বোলিং লাইনআপের কোমর একা হাতেই ভেঙে দিয়েছিলেন।