১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের খেলাগুলো হয় রাউন্ড রবিন ফরম্যাটে। সেমিফাইনালে পাকিস্তান হারায় নিউজিল্যান্ডকে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে পাকিস্তান। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২২ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ জেতে পাকিস্তান।
১৯৯২ বিশ্বকাপে প্রথম বার খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগে পূর্ব আফ্রিকা বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রোটিয়া বাহিনীর ম্যাচটা এখনও জীবন্ত ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতিতে। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ড তুলেছিল ৬ উইকেটে ২৫২ রান। ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার যখন দরকার ১৩ বলে ২২, ঠিক তখনই বৃষ্টি নামে। ডাকওয়ার্থ-লিউয়িস পদ্ধতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য জেতার সমীকরণ বদলে দাঁড়ায় ১ বলে ২২। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ হারে।
১৯৯২ ছিল ইমরান খানের বিশ্বকাপ। ১৯৮৭ সালে অবসরের পরের বছরই প্রত্যাবর্তন ঘটে জাতীয় দলে। ১৯৯২ সালে অধিনায়ক হিসাবে পাকিস্তানকে বিশ্বকাপ জেতান। বিশ্বকাপে নামার আগে সাত ম্যাচের প্রতিটিতেই হেরেছিল পাকিস্তান। বিশ্বকাপ শুরুর পরে পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই হার। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৭৪ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। সেই পাকিস্তানই ইংল্যান্ডকে মাটি ধরিয়ে বিশ্বকাপ জেতে।
১৯৯২ বিশ্বকাপে প্রথম বার মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। এর আগে কোনও বিশ্বকাপে দুই প্রতিবেশী দেশের সাক্ষাৎ হয়নি। প্রথম বার সাদা বলে বিশ্বকাপ খেলা হয়েছিল। বিশ্বকাপে প্রথম বার দিন ও রাতের ক্রিকেট ম্যাচ হয় সে বছরই। রঙিন জার্সি পরে সে বার খেলতে নেমেছিল দেশগুলো।
গ্রাহাম গুচ একমাত্র ক্রিকেটার যিনি তিনবার বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেও এক বারও ট্রফি জিততে পারেননি। ইংল্যান্ডের হয়ে ১৯৭৯,১৯৮৭ ও ১৯৯২ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেন গুচ। বিশ্বকাপ তাঁর কাছে অধরা। (ছবিতে গুচ (ডান দিকে), তাঁর পাশে অ্যালেক্স স্টুয়ার্ট।)
১৯৯২ বিশ্বকাপ হয়েছিল রাউন্ড রবিন লিগ ফরম্যাটের। গ্রুপ পর্বে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে কিরণ মোরে লাগাতার আবেদন করে যাচ্ছিলেন। মোরেকে নকল করে মিয়াঁদাদ লাফাতে শুরু করে দেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্টি রোডস দুরন্ত রান আউট করেন পাকিস্তানের ইনজামাম উল হককে। শরীর ছুড়ে উইকেট ভেঙে দিয়েছিলেন জন্টি। আইসিসি-র তরফ থেকে পরে টুইট করে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এটাই কি ইতিহাসের সেরা রান আউট? ওই রকম দুরন্ত রান আউটের পরে জন্টির নাম হয়ে যায় ‘সুপারম্যান’। সে বারের বিশ্বকাপে জন্টি ফিল্ডিংকে নিয়ে গিয়েছিলেন শিল্পের পর্যায়ে।
ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্য দু’টি ডেলিভারি করেন ওয়াসিম আক্রম। পর পর দু’ বলে আক্রম ফেরান অ্যালান ল্যাম্ব ও ক্রিস লিউয়িসকে। ম্যাচের রাশ হাতে নিয়ে নেয় পাকিস্তান।