হারের পর নাদাল।
চ্যাম্পিয়নদের হারানো যায়। কিন্তু চ্যাম্পিয়নদের ধ্বংস করা যায় না।
রাফায়েল নাদাল দেখিয়ে দিলেন, কোর্টে হার মানতে হলেও কোর্টের বাইরে তিনি সমান উজ্জ্বল। হারের মধ্যেও যিনি থেকে গেলেন ব্যতিক্রমী। সোমবার গভীর রাতে, প্রায় পাঁচ ঘণ্টার লড়াইয়ে, ১৬ নম্বর বাছাই, জাইলস মুলারের কাছে ৩-৬, ৪-৬, ৬-৩, ৬-৪, ১৩-১৫ হারতে হল নাদালকে। যাঁকে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখা শুরু হয়েছিল, তাঁর এই আকস্মিক হারে স্তব্ধ টেনিস দুনিয়া।
এই অবস্থায় কী হতে পারে নাদালের প্রতিক্রিয়া? ক্ষিপ্ত হয়ে র্যাকেট ছুড়ে ফেলা? কারও দিকে না তাকিয়ে কোর্ট ছেড়ে চলে যাওয়া? এ রকম কিছু করলে আশ্চর্যের কিছু ছিল না। কিন্তু ব্যতিক্রমী থেকে গেলেন নাদাল। পাঁচ ঘণ্টার ওই লড়াইয়ের পরেও তিনি কোর্টের পাশে দাঁড়িয়ে রইলেন। অপেক্ষায় থাকলেন, কখন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কাঁধে কিট নিয়ে এসে দাঁড়াবেন এবং তাঁকে সঙ্গ দিয়ে লকাররুমে নিয়ে যাবেন। এরই ফাঁকে দর্শকদেরও নিরাশ করেননি নাদাল। সোমবার এক নম্বর কোর্টে হাজির দর্শকদের দেখা গিয়েছে, জয়ী মুলারের চেয়ে তাঁরা বেশি অটোগ্রাফ দাবি করেছেন পরাজিত নাদালের থেকে। সই শিকারিদের হতাশ করেননি স্প্যানিশ মহাতারকা। তার পর মুলারকে নিয়ে মিলিয়ে যান লকাররুমের দিকে।
আরও পড়ুন: গেইলের রেস্তোরাঁয় পার্টিতে মজলেন রাহানেরা
জাইলস মুলার
আবার দেখা দিলেন সাংবাদিক সম্মেলনে। যেখানে ১৫ গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী মহাতারকাকে প্রশ্ন করা হল, এটাই কি আপনার শেষ উইম্বলডন? নাদাল জবাব দিলেন, ‘‘আমি তো কখনও বলিনি, ফিরব না। আমি অবশ্যই ফিরে আসতে চাই। সেন্টার কোর্টে আরও সময় কাটাতে চাই।’’
দশম ফরাসি ওপেন জিতে ফর্মের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় উইম্বলডনে এসেছিলেন নাদাল। লক্ষ্য ছিল তৃতীয় উইম্বলডন জয়। ‘‘এখানকার পরিবেশটাই অসাধারণ। আমি কোর্টে নিজের সবকিছু দিয়ে লড়েছিলাম। হৃদয় দিয়ে লড়েছিলাম। দর্শকরা আমার পাশে ছিলেন। যাঁরা আমাকে সমর্থন করেছেন, তাঁদের জন্য আমি দুঃখিত।’’ মুলারের বিরুদ্ধে ১৬টি ব্রেক পয়েন্ট পেয়ে মাত্র দু’টো কাজে লাগান নাদাল। অন্য দিকে, মুলার ৩০টি এস এবং ৯৫টি উইনার মারেন। শেষ সেটে ১০ এবং ২০ নম্বর গেমে দু’টো করে ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচান নাদাল। কিন্তু লাভ হয়নি।
তবে কেন নাদালকে এক নম্বর কোর্টে খেলতে হয়েছে, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর কাকা টনি নাদাল। উইম্বলডনের সংগঠকদের ছোট টুর্নামেন্টের সংগঠক বলে ব্যঙ্গ করেছেন করেছেন তিনি।