অশোক ডিন্ডা। —ফাইল চিত্র
একেই বলে ভবিতব্য। বাংলা রবিবার ওড়িশার বিরুদ্ধে সৈয়দ মুস্তাক আলি অভিযান শুরু করলেও, অশোক ডিন্ডা নতুন ইনিংস শুরু করবেন সোমবার। বিপক্ষ মধ্যপ্রদেশ। ২০১০-১১ মরসুমে ডিন্ডার দুর্দান্ত বোলিংয়েই এই মধ্যপ্রদেশকে হারিয়ে প্রথমবার সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি জিতেছিল বাংলা। সেগুলো অবশ্য ইতিহাসের পাতায় চলে গিয়েছে। বঙ্গ ড্রেসিংরুম ছেড়ে বাংলার সর্বকালের অন্যতম সেরা ম্যাচ উইনার এখন গোয়ায়।
গত মরসুম বাংলার হয়ে শেষবার মাঠে নেমেছিলেন। প্রতিপক্ষ ছিল কেরল। সেই ম্যাচের পর টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ঝামেলা চরমে ওঠে। বঙ্গ ড্রেসিংরুম ছাড়তে বাধ্য হন ‘নৈছনপুর এক্সপ্রেস’। তবে নতুন আশোক ডিন্ডা পুরনো ঘটনা আর মনে রাখতে চাইছেন না। বরং কেরিয়ারের বাকিটা গোয়ার জন্য নিংড়ে দিতে চান। ইনদওর থেকে টেলিফোনে আনন্দবাজার ডিজিটালকে মনের কথা উজাড় করে দিলেন এই ম্যাচ উইনার।
আপনি বল হাতে ফের নামছেন। তবে জার্সিতে বাংলার লোগো থাকবে না। অদ্ভুত লাগছে?
কয়েক মাস আগে গোয়া এসে নতুন দলের সঙ্গে অনুশীলন করার সময় অদ্ভুত লাগত। তবে এখন মানিয়ে নিয়েছি। না মানিয়ে কি উপায় আছে? আমি তো পেশাদার ক্রিকেটার। এটাই আমার রুটি-রুজি। পরিবারের দিকে তাকিয়ে আমাকে তো খেলতেই হবে। তাছাড়া আমি খেলা-পাগল ছেলে। তাই এখন মানিয়ে নিতে অসুবিধা হয় না।
বাংলার হয়ে খেলে কেরিয়ার শেষ করতে পারবেন না। এই আক্ষেপ কি আদৌ মিটবে?
এই আক্ষেপ কোনওদিন মিটবে না। বাংলার হয়ে লড়াকু পারফরম্যান্স করার জন্যই তো দেশের কিছু মানুষ আমাকে চেনেন। সম্মান করেন। আগেও বলেছি, আবার বলছি বাংলা আমার কাছে মন্দিরের মতো। তাই মন্দিরের অসম্মান করতে পারব না। তবে এই মন্দিরের কিছু পুরোহিতের মানসিকতা ভাল নয়। তাই দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলাম।
আরও পড়ুন: আইপিএল তারকার অসভ্যতায় মুস্তাক আলি ট্রফিতে দল থেকে সরে গেলেন সতীর্থ
ক্রিকেট পরিকাঠামোর দিক থেকে বাংলা ও গোয়া দুটো দলের মধ্যে কতটা ফারাক?
অনেক ফারাক। প্রতিদিন সেটা বুঝতে পারছি। গোয়ায় ক্লাবের সংখ্যা কম। ক্রিকেটের থেকে ফুটবলের প্রতি প্যাশন বেশি। সেটাই সবচেয়ে বড় ফারাক। তবে গত কয়েক বছরে গোয়া ক্রিকেটে অনেকটা উন্নতি করেছে। প্লেট গ্রুপ থেকে এখন ঘরোয়া ক্রিকেটে এলিট দল গোয়া। একাধিক প্রতিভাবান ক্রিকেটারের পাশাপাশি বোলিং কোচ হিসেবে ডোডা গণেশ রয়েছেন। ছেলেদের মধ্যেও একটা তাগিদ দেখতে পাচ্ছি। আশা করি কোভিড পরবর্তী অধ্যায়ে আমরা ভাল পারফরম্যান্স করতে পারব।
গোয়ার মতো দলের হয়ে খেলা কি বাড়তি চাপ?
রণদেব বসু, শিবশঙ্কর পাল অবসর নেওয়ার পর বাংলা পেস বোলিংকে বছরের পর বছর একা টেনেছি। মহম্মদ শামি দেশের হয়ে খেলতে ব্যস্ত থাকত। সেই দিনগুলো নিশ্চয়ই ভুলে যাননি। সেই সময় প্রচন্ড চাপ নিয়েও পারফর্ম করেছি। তাই চাপ নেওয়া আমার কাছে ফ্যাক্টর নয়।
আরও পড়ুন: ফের বর্ণবৈষম্যের শিকার সিরাজ, মাঠ থেকে কিছু দর্শককে বার করে দিল পুলিশ
বাংলার বিরুদ্ধে গোয়া খেললেও কি সেই পুরোনো আগ্রাসন দেখা যাবে?
অবশ্যই দেখা যাবে। মনোজ, অনুষ্টুপের বিরুদ্ধেও একই আগ্রাসন, একই দৌড় দেখা যাবে। কারণ, ওই আগ্রাসী মানসিকতার জন্যই আমাকে সবাই সমীহ করে। তাই পুরোনো বন্ধুদের বিরুদ্ধে বোলিং করার সময়ও আমার হাত কাঁপবে না। তবে সবার আগে তো দুটো দলকে নক-আউটে উঠতে হবে।
নতুন মরসুমের আগে বাংলা দলের জন্য কোনও বার্তা?
মনোজদের জন্য আমার সবসময় শুভেচ্ছা রয়েছে। আমি চাই বাংলা চ্যাম্পিয়ন হোক।