অজান্তে না বুঝে ওষুধ খাওয়ার দাবি করলেন দীপা। ছবি: টুইটার।
ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় দীপা কর্মকারকে ২১ মাস নির্বাসিত করেছে ইন্টারন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (আইটিএ)। নিষিদ্ধ ওষুধ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বাঙালি জিমন্যাস্টও। যদিও, তিনি জানিয়েছেন তাঁর এই ভুল ইচ্ছাকৃত বা জেনে বুঝে নয়।
নির্বাসিত হওয়ার পর সমাজমাধ্যমে নিজের পক্ষে সওয়াল করেছেন দীপা। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি অজান্তে নিষিদ্ধ ওষুধ খেয়েছি। সে সময় বিষয়টা বুঝতে পারিনি। আন্তর্জাতিক ফেডারেশনের সঙ্গে দ্রুত সমাধানের আশায় রয়েছি। দ্রুত অস্থায়ী স্থগিতাদেশ পাওয়ার চেষ্টা করছি।’’ ২৯ বছরের জিমন্যাস্ট আরও লিখেছেন, ‘‘নিষিদ্ধ ওষুধ বা উপাদান আমার শরীরে কী ভাবে প্রবেশ করেছে, তাও আমার জানা নেই। এই ধরনের ঘটনা যে কোনও খেলোয়াড়কেই সমস্যা ফেলতে পারে এবং তাকে মানসিক ভাবে ভেঙে ফেলতে পারে। এটা ক্ষতিকারক তো বটেই। এই পরিস্থিতিতে আমাকে মানসিক যুদ্ধও করতে হচ্ছে। ২০১৭ এবং ২০১৯ সালে আমার দু’টি অস্ত্রোপচার হয়েছিল। যখনই খেলায় ফেরার চেষ্টা করেছি, তখনও কোনও না কোনও ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছি। তবু মানসিক জোর সম্বল করে আমি আবার ফিরে আসতে চাই।’’
আইটিএ এত দিনে দীপাকে নির্বাসিত করলেও এই শাস্তি কার্যকর হয়েছে ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে। তখন থেকে কোনও খেলায় অংশ নিতে পারছেন না দীপা। ২০২৩ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত তাঁর শাস্তি বহাল থাকবে। এই সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক স্তরের কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন না তিনি।
দীপার ডোপ পরীক্ষার নমুনায় নিষিদ্ধ হিগেনামাইন এস ৩ এবং বেটা ২ অ্যাগোনিস্ট পাওয়া গিয়েছে। যেগুলি ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি ডোপিং এজেন্সির (ওয়াডা) নিষিদ্ধের তালিকায় রয়েছে। রিয়ো অলিম্পিক্সে একটুর জন্য পদক হাতছাড়া হওয়া বাঙালি জিমন্যাস্টের দাবি, তিনি যে ওযুধ খেয়েছিলেন তাতে এই নিষিদ্ধ উপাদানগুলি থাকার কথা জানতেন না।
ইউএস অ্যান্টি ডোপিং এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী হিগেনামাইন সাধারণ ওযুধে ব্যবহৃত বিভিন্ন ভেষজের মধ্যে পাওয়া যায়। অনেক সময়ই উপকরণের তালিকায় হিগেনামাইন থাকার কথা উল্লেখ থাকে না। ২০১৭ সালে ওয়াডা হিগেনামাইনক সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ করে। প্রতিযোগিতার সময় তো বটেই সাধারণ সময়ও ওই ধরনের ভেষজ ব্যবহার করা হয়েছে এমন ওষুধ ক্রীড়াবিদদের জন্য ব্যবহার নিষিদ্ধ।
দীপা জানিয়েছেন, খেলোয়াড় জীবনের দীর্ঘতম লড়াই করছেন তিনি। তাঁর শাস্তির মেয়াদ তিন মাস কমানো হয়েছে। তিনি এখন খেলায় ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। খেলতে না পারার থেকেও তাঁকে বেশি কষ্ট দিয়েছে সততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায়। দীপা বলেছেন, ‘‘কখনও নিষিদ্ধ ওষুধ খেয়ে খেলার কথা ভাবিনি। সত্যিই জানি না কী ভাবে আমার শরীরে নিষিদ্ধ উপাদানগুলি প্রবেশ করল। জিমন্যাস্টিকই আমার কাছে সব। এমন কোনও কাজ করার কথা ভাবতেও পারি না যা আমার দেশের সম্মান নষ্ট করতে পারে।’’