ঘরছাড়া বিজয়ন।
ভয়াবহ বন্যায় ঘর ছেড়ে শ্বশুরবাড়ির আশ্রয়ে আই এম বিজয়ন! ত্রিশূর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে এর্নানুলেই গত পাঁচ দিন ধরে রয়েছেন ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক।
প্রবল বৃষ্টিতে এই মুহূর্তে কেরলের অধিকাংশ জায়গা জলের নীচে। শনিবারই বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজয়নের শহর ত্রিশূরের অবস্থা রীতিমতো ভয়াবহ। মারা গিয়েছেন বহু মানুষ। ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারের বাড়ির অর্ধেক ডুবে গিয়েছে জলে। মোবাইল ফোনে যোগাযোগও করা যাচ্ছিল না তাঁর সঙ্গে। শনিবার অবশেষে পাওয়া গেল বিজয়নকে। এর্নানুল থেকে ফোনে আতঙ্কিত প্রাক্তন জাতীয় অধিনায়ক আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘বন্যার ভয়াবহতা সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না। এর আগে টেলিভিশনেই শুধু বন্যা দেখেছি। এ বারই প্রথম এই অভিজ্ঞতা হল।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘দেশের অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে কেরলে বরাবরই বৃষ্টি বেশি হয়। তাই সপ্তাহখানেক আগে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পরেও ভয় পাইনি। নিশ্চিন্ত মনে কালিকটে অফিসের হয়ে খেলতে চলে গিয়েছিলাম। ত্রিশূর ফিরতেও সমস্যা হয়নি। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই নাটকীয় ভাবে বদলে গেল পরিস্থিতি। বাড়িতে জল ঢুকতে শুরু করল। কী করব বুঝতে পারছিলাম না।’’ তার পরে? কেরল পুলিশের কর্মী বিজয়ন বললেন, ‘‘ত্রিশূর শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে এর্নানুলে আমার স্ত্রীর বাপের বাড়ি। ওখানে পরিস্থিতি তুলনায় কিছুটা ভাল। ভাগ্যিস দ্রুত এর্নানুলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, না হলে সমস্যা আরও বাড়ত।’’ কেন? বিজয়নের কথায়, ‘‘বন্যার কারণে যান চলাচলও প্রায় বন্ধ ত্রিশূরে। এর্নানুলে যাওয়া অসম্ভব ছিল। আমাকেও হয়তো পরিবার নিয়ে ত্রান শিবিরে আশ্রয় নিতে হত।’’
এই মুহূর্তে অবশ্য কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বিজয়নের। কারণ, গত আটচল্লিশ ঘণ্টায় সে রকম বৃষ্টি হয়নি। যদিও আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী ফের প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কেরলের বিভিন্ন অঞ্চলে। আশাবাদী বিজয়ন বললেন, ‘‘আশা করছি, আর বৃষ্টি হবে না। বৃষ্টি বন্ধ হলে জল কমবে। নিজের বাড়িতে ফিরতে পারব।’’ তবে পুরোপুরি দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। বলছিলেন, ‘‘জল ঢুকে বাড়ির কী অবস্থা হয়েছে বুঝতে পারছি না। তাই খুব অস্থির লাগছে।’’ বিজয়নের আত্মীয়েরা অবশ্য এখনই তাঁকে ত্রিশূর ফিরতে বারণ করেছেন। জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। তাই আপাতত এর্নানুলেই থাকা উচিত বিজয়নের।
উদ্বিগ্ন বিজয়নের সতীর্থ আর এক প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক জো পল আনচেরিও। এই মুহূর্তে তিনি দুর্গাপুরে মোহনবাগান অ্যাকাডেমিতে। কিন্তু আনচেরির পরিবার রয়েছে তিরুঅনন্তপুরমে। যদিও কেরলের রাজধানীতে বন্যার প্রভাব খুব একটা পড়েনি। তা সত্ত্বেও দুশ্চিন্তা কমছে না জাতীয় দলের এই প্রাক্তন তারকার।