উন্মাদনা: প্রবল ঠান্ডা উপেক্ষা করে শ্রীনগরে দলের খেলা দেখতে হাজির রিয়াল কাশ্মীরের ভক্তেরা। এআইএফএফ
ভূস্বর্গে ফুটবল ফেরার দিনেই জয়ের সরণিতে প্রত্যাবর্তন রিয়াল কাশ্মীরের।
চলতি বছরের অগস্টের শুরুতে বিশেষ মর্যাদা লোপের পর থেকেই অশান্ত কাশ্মীর। টানা কার্ফু। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। ভূস্বর্গের ছবিটাই বদলে গিয়েছে। প্রকাশ্যে কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। ৫ অগস্টের পরে কোনও ফুটবল ম্যাচও হয়নি। প্রায় পাঁচ মাস পরে ফুটবলের হাত ধরেই ছন্দ ফিরল কাশ্মীরে।
প্রবল তুষারপাত ও প্রতিকূল আবহাওয়ায় আই লিগে ঘরের মাঠে গোকুলম এফসি এবং চার্চিলের বিরুদ্ধে ম্যাচ বাতিল হয়ে গিয়েছিল রিয়াল কাশ্মীরের। বৃহস্পতিবারের চেন্নাই সিটি এফসির বিরুদ্ধে ম্যাচ নিয়েও চাপা আতঙ্ক ছিল। কড়া নিরাপত্তায় শ্রীনগরের সোনওয়ারে রাখা হয়েছিল চেন্নাই দলকে। দু’দিন আগে থেকেই টিআরসি টার্ফ স্টেডিয়ামকেও নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। এ দিন সকাল থেকেই স্টেডিয়ামের চারপাশে টহল দিয়েছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া গাড়ি। ম্যাচের সময়ও তা বন্ধ হয়নি।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই শ্রীনগরের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে। অনেকেই মনে করেছিলেন প্রবল ঠান্ডা ও আতঙ্কের আবহে সমর্থকেরা হয়তো খেলা দেখতে আসবেন না। কিন্তু সকাল থেকেই স্টেডিয়ামের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে ফুটবলপ্রেমীদের। আট হাজার দর্শকাসনের টিআরসি টার্ফ স্টেডিয়ামে প্রায় ১৭০০ দর্শক হাজির ছিলেন খেলা দেখতে। এর মধ্যে শ’দুয়েক মহিলা ও শিশু। নিরাপত্তার একাধিক বলয় পেরিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকতে হয়েছে সকলকে। তবে এ দিন দর্শক কম হওয়ার আরও একটা কারণ, অনেকেই জানতেন না যে ম্যাচ হচ্ছে।
প্রবল ঠান্ডার জন্যই বৃহস্পতিবার ম্যাচ দুপুর বারোটায় শুরু হয়েছিল। পরিচিত আবহাওয়ায় শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলেন কাশ্মীরের ফুটবলারেরা। ম্যাচের ২৩ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন দানিশ ফারুখ। চার মিনিট পরে কাশ্মীরের হয়ে ২-০ করেন বাজি আর্মান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ছন্দে ফেরে গত বারের চ্যাম্পিয়নেরা। পরিবর্ত হিসেবে নামা সৈয়দ সুহেল পাশা ৪৯ মিনিটে ব্যবধান কমালেও চেন্নাইয়ের হার বাঁচাতে ব্যর্থ।
আই লিগে প্রথম দু’টো ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল ও ট্রাউয়ের বিরুদ্ধে এগিয়ে থেকেও জয় অধরা থেকে গিয়েছে কাশ্মীর শিবিরে। তৃতীয় ম্যাচে অবশেষে জয়। ম্যাচের পরে উচ্ছ্বসিত কাশ্মীর কোচ ডেভিড রবার্টসন বলেছেন, ‘‘ফুটবলারেরা এই ম্যাচটা নিয়ে প্রচণ্ড উত্তেজিত ছিল। ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে জিতে আমিও দারুণ খুশি।’’ ভূস্বর্গের ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা দেখে অভিভূত চেন্নাইয়ের ফুটবলারেরাও। তাঁরা বলেছেন, ‘‘কাশ্মীরে আসার আগে আতঙ্কে ছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, না এলে ভুল করতাম। অসাধারণ উপলব্ধি হল।’’