অস্ট্রেলিয়ায় এ ভাবেই বাউন্সার সামলেছেন শুভমন। ফাইল ছবি।
বহু বছরের সাধনার সুফল। স্বপ্নের টেস্ট অভিষেক ঘটিয়ে ও ওপেনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাদের দেশে টেস্ট সিরিজ জয়। প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজেলউড, মিচেল স্টার্কদের গুলিগোলা সামলে অনায়াসে রান করে যাওয়া। চিন মিউজিক, বাউন্সার, ইয়র্কারের তোয়াক্কা করেননি পঞ্জাব তনয় শুভমন গিল। তাই তো ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা তাঁকে ‘নেক্সট বিগ থিং ইন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট’ বলছেন। কিন্তু কীভাবে এত অনায়াসে ব্যাট করলেন এই ডানহাতি ওপেনার?
শুভমন বলছিলেন, “ছোটবেলা সিমেন্টের পিচে ভেজা টেনিস বলে প্র্যাকটিস করতাম। তাছাড়া বাবা খাটিয়া পেতেও প্র্যাকটিস করাতেন। তাই ব্যাকফুট পাঞ্চ, স্কোয়ার কাট, হুক, পুল করতে কোনও সমস্যা হয় না। তবে অনেক সময় শরীরের ভেতরে আসা শর্ট বল খেলতে সমস্যা হতো। তাই শরীরকে একটু পিছনে নিয়ে গিয়ে ওই বলগুলো খেলতাম। এভাবেই শর্ট বল খেলা রপ্ত করেছি। আর এই শটগুলোই এখন আমার ফেভারিট।”
তবে শর্ট বল খেলাকে রপ্ত করতে অনেকবার চোট পেয়েছেন শুভমন। তবুও পিছপা হননি। মোহালি স্টেডিয়ামের পেস বোলিং সহায়ক পিচও তাঁকে অনেক সাহায্য করেছে। সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “মাত্র ৯ বছর বয়স থেকে লাল বলে অনুশীলন করছি। পাড়ার সিনিয়র দাদাদের সঙ্গে খেলতাম। তাদের মধ্যে অনেকেই বেশ জোরে বল করতো। সেই বলগুলো অনেকবার গায়ে, মাথায় খেয়েছি। তবুও ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাইনি। একজন ব্যাটসম্যান যতো আঘাত খাবে, ততোই তার মনোবল শক্ত হবে। আন্তর্জাতিক স্তরে খেলতে হলে এটাই একমাত্র নিয়ম। তাই আমিও স্রেফ কঠোর পরিশ্রম করে গিয়েছি।”
মফস্বলে বেড়ে ওঠা প্রত্যেক ছেলের মতো শুভমনও লজেন্স খেতে ভালবাসতেন। হজমোলা ক্যান্ডি ছিল ওঁর খুব প্রিয়। সেটা বেশ জানতেন লখবিন্দর সিংহ। শুভমনের আগ্রাসী মানসিকতা দেখার জন্য ওঁর বাবা লজেন্স খাওয়ানোর লোভ দেখাতেন। শৈশবের কথা মনে পড়ছিল ওঁর। বলছিলেন, “ছোটবেলায় গ্রামে এক বিশেষ ধরনের উইকেট পুঁতে আমরা খেলতাম। সেই উইকেট আবার আমার থেকেও লম্বা ছিল। বাবা বলতেন আমাকে যে আউট করতে পারবে তাকে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পুরস্কার দেবেন। কিন্তু ওরা কেউ আমাকে আউট করতে পারত না। তাই সেই টাকাগুলো আমার কাছে চলে আসতো। তারপর সেই টাকা থেকে হজমোলা কিনে খেতাম।”