আমন সেহরাবত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
অলিম্পিক্সে খেলা নিয়ে এক সময় তৈরি হয়েছিল সংশয়। দেশের হয়ে ‘কোটা’ অর্জন করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন আমন সেহরাবত। সেই সময় জেলে থাকা সুশীল কুমারের একটি ফোনই বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন। নিজের খেলায় সামান্য বদল এনে তিনি অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করেছেন। ভারতের একমাত্র পুরুষ কুস্তিগির হিসাবে অলিম্পিক্সে যাচ্ছেন তিনি।
যে কুস্তি দীর্ঘ দিন ধরে অলিম্পিক্সে ভারতকে পদক দিয়েছে, সেখানেই এ বার অবস্থাটা করুণ। প্রাক্তন কুস্তিকর্তা ব্রিজভূষণ শরন সিংহের সঙ্গে বিবাদে অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন হয়নি বজরং পুনিয়া-সহ একাধিক কুস্তিগিরদের। পুরুষ বিভাগে একমাত্র প্রতিনিধি হিসাবে সুযোগ পাওয়া আমন শেষ মুহূর্তে সুযোগ পেয়েছেন।
এশিয়ান কোয়ালিফায়ারে অলিম্পিক্স ‘কোটা’ জিততে পারেননি আমন। তখন হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। দরকার ছিল মনোবল বাড়ানোর। সেই সময়েই জেল থেকে তাঁকে ফোন করেন সুশীল। অলিম্পিক্সে একমাত্র ভারতীয় হিসাবে কুস্তিতে দু’টি পদক পাওয়া সুশীল যেখান থেকে পরিচিতি পেয়েছেন, সেই ছত্রশল স্টেডিয়াম থেকেই উত্থান আমনের। আদর্শ হিসাবেও দেখেন সুশীলকে। তাঁর ফোন পেয়ে নিজের আবেগ সামলাতে পারেননি আমন।
কী কথা হয়েছিল দু’জনের? আমন বলেছেন, “এশিয়ান কোয়ালিফায়ারের পর আমি চাপে ছিলাম। কোটা পাইনি। আমার উপর অনেকের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু নিজেকে নিয়েই সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। এর পরেই সুশীল পেহেলওয়ানের সঙ্গে কথা বলি। বিশ্ব কোয়ালিফায়ারের জন্য তিন সপ্তাহ বাকি ছিল। ছত্রশলেই অনুশীলন করছিলাম। সুশীলজি আমাকে বলেন বেশি রক্ষণাত্মক না হতে। পুরো ছ’মিনিটই লড়াই করতে।”
আমনের সংযোজন, “উনি আরও বলেন, লড়াইয়ের সময় দু’রকম মানসিকতা যেন না থাকে। যদি রক্ষণ করতে হয় তা হলে রক্ষণ। তার পর সুযোগ এলেই তাঁর পূর্ণ সদ্ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে বারণ করেছিলেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, আমার মধ্যে আগ্রাসী কুস্তিগিরকে দেখতে চেয়েছিলেন।”
সঠিক সময়ে সঠিক মানুষের ফোন বাঁচিয়ে দেয় আমনকে। বিশ্ব কোয়ালিফায়ারে উত্তর কোরিয়ার চংসং হানকে ১২-২ পয়েন্টে হারিয়ে পুরুষ বিভাগে ভারতের প্রথম এবং একমাত্র ‘কোটা’ অর্জন করেন আমন। ছত্রশলে থাকাকালীন সুশীলই এক দিন জানিয়েছিলেন, আমনের মধ্যে বড় কুস্তিগির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমন সেই স্বপ্নই সফল করার অপেক্ষায়।