ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে একাধিক নতুন মুখ। তাঁদের মধ্যে অন্যতম দিল্লির নভদীপ সাইনি। এই ২৬ বছরের ডান হাতি জোড়ে বোলার সম্বন্ধে কিছু জানা-অজানা তথ্য আবার ফিরে দেখা। ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়ে কী নিজেকে মেলে ধরতে পারবেন সাইনি?
সাইনির জন্ম এক লড়াকু পরিবারে। সাইনির দাদু, করম সিংহ ছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির সদস্য। সেই লড়াই বোধ হয় ছোট থেকেই ঢুকে গিয়েছে সাইনির মধ্যে। কারণ তাঁর ভারতীয় দলে খেলার সুযোগ খুব সহজে আসেনি।
ভারতের নতুন এই পেসারের বাবা, হরিয়ানা সরকারের ড্রাইভারের কাজে নিযুক্ত। ক্রিকেট খেলার খরচ বহনের সামর্থ্য তাঁর ছিল না। তাই সুযোগ হয়নি কোনও দিন কোনও বয়স ভিত্তিক খেলায় যোগ দেওয়ার।
২০১৩ সালের আগে ডিউস বলে খেলেননি তিনি। খেলতেন টেনিস বল ক্রিকেট। ম্যাচ প্রতি ২০০ টাকার বিনিময় ক্রিকেট খেলতেন তিনি বিভিন্ন জায়গায়। টেনিস বলেই তখন আগুন ছোটাচ্ছেন সাইনি।
কার্নাল প্রিমিয়ার লিগে খেলার সময় চোখে পড়ে যান দিল্লির মিডিয়াম পেসার সুমিত নরওয়ালের। তিনিই নভদীপকে নিয়ে আসেন দিল্লির নেটে।
মুলত নেট বোলার হিসেবেই শুরু তাঁর জীবন। দিল্লির নেটে তাঁর বল বিপাকে ফেলে গৌতম গম্ভীরকেও। গম্ভীরের বিচক্ষণ চোখ চিনে নেয় প্রতিভা। জোগাড় করে দেন বুট জুতো।
গম্ভীরের নির্দেশে নভদীপ সাইনি হয়ে ওঠেন দিল্লির নেটে নিয়মিত বোলার। নিজেকে তৈরি করতে থাকেন নভদীপ সাইনি। গম্ভীরের বিশ্বাস ছিল, একদিন ঠিক ভারতীয় দলে খেলবেন সাইনি।
গম্ভীরের চাপেই দিল্লির রঞ্জি দলে সুযোগ পান সাইনি। কারণ বয়সভিত্তিক খেলার সঙ্গে যোগ না থাকায় তাঁকে নিতে চায়নি দিল্লি ক্রিকেট বোর্ড। গম্ভীর যে ভুল করেননি, তার প্রমাণ পাওয়া যায় কিছু দিনেই।
২০১৭-১৮ সালে মূলত এই সাইনির কাঁধে চেপেই রঞ্জির ফাইনালে ওঠে দিল্লি। ৮ ম্যাচে ৩৪ উইকেট নিয়ে তিনিই হন দিল্লির সর্বাধিক উইকেট সংগ্রাহক।
ডাক আসে আইপিএলেও। ২০১৭-এ তাঁকে নেয় দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ১০ লক্ষ টাকায়। তবে ২০১৮ ভাগ্য ফেরে সাইনির। বিরাটের বেঙ্গালুরু তাঁকে তুলে নেয় ৩ কোটি টাকায়। সুযোগ আসে অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়াটসনের বিরুদ্ধে বল করার।
প্রথম বলেই চেন্নাই ওপেনারের হেলমেটে আছড়ে পড়ে বাউন্সার। গতি ১৫১কিমি প্রতি ঘণ্টা। বুঝিয়ে দেন কেন তাঁকে নেওয়ার জন্য এত টাকা খরচ করে বিরাটরা।
ভারতীয় দলে প্রথম ডাক আসে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্ট ম্যাচে, চোটের জন্য শামিবাদ পড়ায়। যদিও প্রথম এগারোয় খেলার সুযোগ আসেনি।
তবে এবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে একদিনের ও টি২০ দলে সুযোগ পাওয়ায়, মনে করা হচ্ছে যে প্রথম এগারোয় সুযোগ আসবেই। এখন দেখার সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন কিনা সাইনি।