ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল্ল পটেল।—ফাইল চিত্র।
ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতো ঐতিহ্যময় ক্লাবগুলি মৃতপ্রায়, আইএসএলের ক্লাবগুলিই এ দেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎ— ফের জানিয়ে দিল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ঐতিহ্যের ক্লাবগুলির মৃত্যু ঘটছে। ডেম্পো, সালগাওকরের মতো দল বন্ধ হয়েছে। ঐতিহ্য ধরে বেঁচে থাকতে পারেনি। আই লিগের ক্লাবগুলিও আকর্ষণ বাড়াতে পারেনি। সে জন্যই মহীন্দ্রা, জেসিটির মতো ক্লাবগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’
ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান-সহ আই লিগের ক্লাব জোটের সঙ্গে ফেডারেশনের লড়াই ফিফার দরজায় পৌঁছেছে। ফিফা চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। সেই চিঠিকে কোনও গুরুত্ব যে ফেডারেশন দিচ্ছে না, তা আরও পরিষ্কার প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘‘আই লিগের সঙ্গে বিরোধ নেই। কিন্তু দেখা গিয়েছে আই লিগ চালানোর জন্য যে স্পনসর ছিল, প্রতিযোগিতা থেকে তারা মুনাফা না পেয়ে চলে যেতে চেয়েছিল। সেই সময় আইএমজিআর সমস্যা সত্ত্বেও এগিয়ে এসে কর্পোরেট সংস্থাগুলোকে নিয়ে নতুন একটি লিগ করছে। অর্থলগ্নি করছে। আকর্ষণও বাড়ছে। আই লিগ যা পারেনি।’’
ফেডারেশনের এই মনোভাব শুনে ক্ষুব্ধ প্রাক্তন ফুটবলাররা। চুনী গোস্বামী রেখেঢেকে বললেও ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, সুব্রত ভট্টাচার্য, গৌতম সরকারের মতো প্রাক্তনরা তোপ দেগেছেন। চুনী গোস্বামী বলে দিয়েছেন, ‘‘টাকার যেমন দরকার, তেমনই ঐতিহ্যের দরকার। শুধু ঐতিহ্য বা সমর্থক নিয়ে বেঁচে থাকা যায় না। ক্লাবগুলিকে আধুনিক হতে হবে।’’ চুনী এ রকম বললেও সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত ভারতীয় ফুটবল দেখভালের দায়িত্বে থাকা ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘যিনি এটা বলছেন, ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে তাঁর কোনও জ্ঞানই নেই। ওঁর জন্যই এই দুর্দশা। আইএসএল তো এখন নিজেই আর্থিক সমস্যায়। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের মতো ক্লাবগুলিই বাঁচাতে পারে আইএসএলকে।’’
ভাস্করের পাশে দাঁড়িয়ে সুব্রত ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘‘ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, বার্সেলোনার মতো ক্লাবগুলির তো তা হলে কোনও মূল্যই নেই! ছোট বা নতুন কোনও ক্লাব দিয়ে নামী প্রতিযোগিতা যে চলে না, সেটা আইএসএল দেখেই বোঝা যাচ্ছে।’’ আর গৌতম সরকার বললেন, ‘‘ঐতিহ্যের প্রয়োজন আছে। আবার ক্লাবগুলিরও আধুনিক হওয়া দরকার।’’