প্রতীকী ছবি।
এ বার করোনা পরিস্থিতিতে আদালতের নির্দেশে যে কোনও বাজি পোড়ানোই নিষিদ্ধ। কিন্তু শনিবার কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার— দুই জেলা থেকেই বিস্তর অভিযোগ এসেছে, দিনের বেলাতেও বিক্ষিপ্ত ভাবে কোথাও কোথাও প্রকাশ্যে বাজি-পটকা পোড়ানো ও ফাটানো হয়েছে। এ দিন সন্ধের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, শহর ও মফস্সলের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের নজরের বাইরে বাজি পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
যদিও দুই জেলা প্রশাসনের দাবি, তারা সর্বক্ষণ নজর রাখছে পরিস্থিতির দিকে। বাজি পোড়ানো বা ফাটানোর অভিযোগ পেলেই তারা এলাকায় ছুটে যাবে বলে আশ্বাস দেন দুই জেলার পুলিশ কর্তৃপক্ষই। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে করোনা রোগী বা বয়স্কদের কথা ভেবে প্রয়োজনীয় সমস্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারণ, কালীপুজোর আগের কয়েকদিনের অভিজ্ঞতায় আশ্বস্ত হতে পারছেন না অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে রাতভর বাজি এবং পটকার দৌরাত্ম্যে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল ও ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কিছু ভেন্টিলেশন তৈরি রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা। কোচবিহারের চকচকার কোভিড হাসপাতাল থেকে সরকারি মেডিক্যাল কলেজেও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। মালবাজারেও রাতভর চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ারের তপসিখাতার কোভিড হাসপাতালে সিসিইউয়ে মাত্র আটটি শয্যা রয়েছে। যেখানে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই সেগুলি ভর্তিই থাকে। আর তাই জেলা হাসপাতাল ও ফালাকাটার সুপার স্পেশালিটিকেও তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।
আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘বাজি পোড়ানোর ফলে বায়ু দূষণের জেরে প্রচণ্ড ক্ষতি হতে পারে রোগীদের। তাই দু’টি বড় হাসপাতাল ছাড়াও বাকি সব হাসপাতালই সতর্ক রয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষকেও আরও বেশি করে সচেতন হতে হবে।” জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, “সমস্ত ব্যবস্থাই রয়েছে।” কোচবিহারের মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি রাজীব প্রসাদ এ দিন সন্ধেয় বলেন, “বাজি দূষণ হলে শ্বাসকষ্টের রোগী বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বক্ষরোগ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞেরা টানা থাকছেন।”
বাজি পুড়লে যে তীব্র শব্দ কানে আসে তা থেকে আচমকা ট্রমাও তৈরি হতে পারে। সেজন্য দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থার মালবাজার হাসপাতালে। মালবাজারের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রিয়াঙ্কু জানা জানান, বাজি ফেটে হাত পুড়ে যাওয়া বা বাজির শব্দে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্যে রাতভর পরিষেবা চলবে।
(তথ্য সহায়তাঃ অরিন্দম সাহা, পার্থ চক্রবর্তী, সব্যসাচী ঘোষ)