ফুসফুসে ক্যানসার দ্বিতীয় বার ছোবল বসিয়েছে কিছু দিন আগে। ক্রমশ শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকায় হাসপাতালে ভর্তি হলেন কিংবদন্তি পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান হানিফ মহম্মদ। তাঁর শারীরিক অবস্থা উদ্বেগজনক। একাশি বছরের ক্রিকেটারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি আর কাজ করছে না বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে, প্রাক্তন পাক ওপেনার শোয়েব মহম্মদ। ফলে চিকিৎসা জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে উঠেছে। হানিফের চিকিৎসার সব খরচ সরকার বহন করবে বলে এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নওয়াজ শরিফ। বলেছেন, ‘‘উনি যাতে সেরা চিকিৎসাটা পান, সেটা দেখা এখন সরকারের দায়িত্ব।’’ হানিফের টানা ষোলো ঘণ্টা ব্যাট করে টেস্ট ক্রিকেটে দীর্ঘতম ইনিংস খেলার বিশ্বরেকর্ড ৫৮ বছর পরেও অক্ষত।
হানিফের ফুসফুসে ক্যানসার প্রথম ধরা পড়ে তিন বছর আগে। সেই সময় লন্ডনের হাসপাতালে ফুসফুসে অস্ত্রোপচার হয়। পরে কেমোথেরাপির সাহায্যে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন হানিফ। কিন্তু শোয়েব এ দিন জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে আবার নিঃশ্বাসের কষ্ট বাড়তে থাকায় বায়েপসি করে দেখা যায় ক্যানসার ফের থাবা বসিয়েছে হানিফের শরীরে। শোয়েব বলেছেন, ‘‘বায়েপসির রিপোর্ট আমরা লন্ডনের চিকিৎসকদের কাছে পাঠিয়ে পরামর্শ নিয়েছি। ওঁরা জানিয়েছেন, বাবার শরীরে কেমোথেরাপিতে আর কাজ হবে না। তাই এ বার চিকিৎসাটা খুব জটিল হয়ে গিয়েছে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘লন্ডনে অস্ত্রোপচার করানোর পর ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে ছিল। বাবাও ভাল ছিলেন। কিন্তু রোগ ফের ছড়িয়েছে।’’
শোয়েবের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা চিকিৎসার খরচের দিকটি। তবে পাক প্রেসিডেন্টের এ দিনের ঘোষণায় অনেকটা আশ্বস্ত হতে পেরেছেন হানিফ-পুত্র। ‘‘আমি পাকিস্তান এয়ারলাইন্সের এক জন সামান্য কর্মী। প্রথম বার লন্ডনে অস্ত্রোপচারের খরচ করতে পেরেছি। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলে দিয়েছেন এ বার চিকিৎসার খরচ তারও দ্বিগুণ বা বেশিতে গিয়ে দাঁড়াবে। প্রেসিডেন্ট সাহায্য করতে এ ভাবে এগিয়ে আসায় আমরা কৃতজ্ঞ।’’
চিকিৎসার খরচ নিয়ে চিন্তা কাটলেও এ বার হানিফকে সুস্থ করে তোলা যে কঠিন হবে সেটা জানেন শোয়েব এবং তাই অসম্ভব উদ্বেগে। জানিয়েছেন, বর্ষীয়ান ক্রিকেটারের শ্বাসকষ্ট ক’দিন আগেও হয়েছিল। তখনও হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল হানিফকে। চিকিৎসায় তিনি কতটা সাড়া দেন সেটা দেখতে হবে।
২১ ডিসেম্বর ১৯৩৪ জুনাগড়ে জন্ম হানিফের। সেলিম দুরানির বাবা আব্দুল আজিজ দুরানির কাছে ক্রিকেটে হাতেখড়ি হওয়া হানিফ পাকিস্তানের হয়ে ৫৫ টেস্ট খেলেন।