আজ থেকে মনোজ-যুবরাজের পরীক্ষা।
পাহাড়ের উপর ছোট্ট এক হিমাচলী আধা শহরের মাঠ। মাঠের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ছোট নদী। না বেশি ঠান্ডা, না বেশি গরম। মনোরম আবহাওয়া। ভাল ক্রিকেটের পক্ষে উপযুক্ত পরিবেশ। এমন পরিবেশের মধ্যে পড়ে বাংলার রঞ্জি ক্রিকেটাররা রীতিমতো ফুরফুরে মেজাজে। কেবল একটা কথা মনে পড়লেই তাঁদের চোয়াল শক্ত হয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁদের সামনে যুবরাজ সিংহের পঞ্জাব। যারা আগের ম্যাচেই মধ্যপ্রদেশকে সরাসরি হারিয়েছে। যে ম্যাচে যুবরাজ আড়াইশোর উপর রান করেন।
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে নামার আগে তাই যুবরাজের জন্য পরিকল্পনা তো রয়েছেই বাংলা শিবিরে। কিন্তু পরিকল্পনা যে শুধু যুবরাজের জন্যই নয়, গোটা দলের জন্য তা কোচ, ক্যাপ্টেন দু’জনেই বোঝাতে চাইলেন। বুধবার রাতে বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি শৈলশহর থেকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘যুবরাজ বড় ক্রিকেটার, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই ঠিকই। কিন্তু আমরা বড় নামের কথা বেশি ভাবছি না। পুরো টিমটার কথাই ভাবছি। ক্রিকেট তো আর এক জনের খেলা নয়। যুবরাজকে রোখার প্ল্যান যেমন আছে, তেমন প্রত্যেকের জন্যই আলাদা প্ল্যান আছে আমাদের।’’
জয়পুরে উত্তর প্রদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে এসে বেশ আত্মবিশ্বাসী বাংলা শিবির। কোচের গলাতেও একই সুর। বললেন, ‘‘আমাদের বোলাররা তো ভাল ফর্মে রয়েছে। ব্যাটসম্যানরাও ভাল করছে। তা হলে আর চিন্তা করব কেন? পঞ্জাব বিপক্ষে থাকলেও এই ম্যাচে ভাল খেলার ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’’
কোচের গলায় এমন সুর শোনা গেলেও লুহনু স্টেডিয়ামের সবুজ উইকেট নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তায় বাংলা শিবির। প্রথমে ব্যাট করতে নামলে সন্দীপ শর্মা, এম এস গোনিদের সামলাতে পারবেন কি না মনোজরা, চিন্তা তা নিয়েই। এক সপ্তাহ আগেই এই মাঠে রেলওয়েজ বোলাররা প্রথম ইনিংসে যা বিধ্বংসী হয়ে উঠেছিলেন, তাতে তামিলনাড়ুর ব্যাটসম্যানদের বেহাল দশা হয়েছিল। পাল্টা মার দেন তামিল বোলাররাও। প্রথম ইনিংসে দুই দল মিলে তিনশো রানও তুলতে পারেনি। যা রান ওঠার দ্বিতীয় ইনিংসেই ওঠে। এবং শেষে তামিলনাড়ুই শেষ হাসি হাসে।
বৃহস্পতিবার সেই উইকেট দেখার পরই মনোজ বুঝলেন, তাঁদের ম্যাচেও এমন হতে পারে। বাইশ গজ নিয়ে মনোজ বলেন, ‘‘এই ধরনের উইকেটে প্রথম দু’দিন পেসাররা দাপট দেখায়। তৃতীয় দিন থেকে যখন উইকেটে ঘাস কমতে থাকে তখন স্পিনাররা একটু সাহায্য পেতে পারে। ব্যাটসম্যানরাও ধরে ব্যাট করতে পারে।’’ ইঙ্গিতটা বোধহয় টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে না নামার দিকেই।
তাই তিন পেসারেই হয়তো দল সাজাবে বাংলা। অশোক দিন্দা, সায়নশেখর মন্ডলের সঙ্গে অয়ন ভট্টাচার্যের কথা ভাবছে বাংলা শিবির। গত ম্যাচে অগ্নিভ পানের মতো এই ম্যাচে মিডিয়াম পেসার অয়নের অভিষেক হতে পারে বলে বাংলা শিবিরের খবর। নেটে অয়ন নাকি বেশ ভাল বোলিং করেছেন। যা দেখে টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁকে দলে রাখার কথা ভাবছে। অয়নের ব্যাপারে তাঁর ভাবনার কথা জিজ্ঞাসা করতে মনোজ বলেন, ‘‘ও নেটে ভাল বোলিং করছে। এই কন্ডিশনে ওকে নেওয়া যেতে পারে। তবে কাল সকালের কন্ডিশন দেখে তবেই ঠিক করব।’’
দলে অন্য কোনও পরিবর্তনের ইঙ্গিত নেই। অয়ন প্রথম এগারোয় এলে হয়তো আমির গনি বসতে পারেন। কারণ, এই আবহাওয়ায় বাড়তি স্পিনার রাখা নাও হতে পারে।