প্রত্যয়ী: আগের চেয়ে অনেক পরিণত রাহুল। ফাইল চিত্র
ওপেন করতে নেমে তিনি আগেও সফল হয়েছেন। কিন্তু পাঁচ নম্বরে নেমে ফিনিশারের ভূমিকাতেও যে কে এল রাহুল এতটা সফল হবেন, তা অনেকেই ভাবেননি। কিন্তু শুক্রবার রাজকোটে নতুন এক রাহুলকে দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া। যে শেষের দিকে ঝড়ের গতিতে রান তুলতে পারেন। আর এই ‘নতুন’ রাহুলের উঠে আসার পিছনে রয়েছেন এমন কয়েক জন ক্রিকেটার, যাঁরা প্রত্যেকেই বিপক্ষ শিবিরের হয়ে খেলতে নামেন। যেমন, স্টিভ স্মিথ, এ বি ডিভিলিয়ার্স, কেন উইলিয়ামসন।
শুক্রবার রাতে ম্যাচের সেরা সাংবাদিক বৈঠকে এসেছিলেন। প্রশ্ন করা হয়, আপনাকে তো নানা ভূমিকায় নামতে হচ্ছে এখন। কখনও ওপেনার, কখনও মিডল অর্ডারে। এ দিন আবার ফিনিশারের ভূমিকায় দেখা গেল। কী ভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন? রাহুলের জবাব, ‘‘আমি এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি। প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করছি। মিডল অর্ডার ব্যাটিং নিয়ে বিরাটের সঙ্গে কথা বলেছি। তা ছাড়া স্টিভ স্মিথ, ডিভিলিয়ার্স, উইলিয়ামসনদের ব্যাটিংয়ের ভিডিয়ো মন দিয়ে দেখেছি। কী ভাবে ওরা ইনিংসটা তৈরি করে সেটা বুঝতে চেষ্টা করেছি। মনে হয়, ম্যাচ রিডিংটা এখন অনেক ভাল হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাট করতে পারছি।’’
যাঁর ভিডিয়ো তিনি খুব মন দিয়ে দেখছেন ইদানিং, সেই স্মিথও শুক্রবার বলেন, ‘‘বিরাট, ধওয়ন, কে এল রাহুল— সবাই খুব ভাল ব্যাট করল। বিশেষ করে রাহুল শেষ দিকে খুব দ্রুত রান তুলে ফেলল।’’
যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে হলেও ওপেনিংয়ে যে তিনি সব চেয়ে স্বচ্ছন্দ, তা মনে করিয়ে কর্নাটকের এই ২৭ বছর বয়সি ব্যাটসম্যান বলছেন, ‘‘আমি সব সময় ওপেন করে এসেছি। ওই জায়গায় খেলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি। কিন্তু তিন, চার, পাঁচ— নানা জায়গায় খেলে অনেক পরিণত হয়েছি। নিজের ব্যাটিং উন্নত করেছি।’’
স্বাভাবিক ভাবেই এই রাহুলের সঙ্গে তুলনা চলে আসছে আর এক কিংবদন্তি ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড়ের। দু’জনেই একই রাজ্যের। দু’জনেই দলের স্বার্থে বিভিন্ন জায়গায় ব্যাট করতে প্রস্তুত। সব চেয়ে বড় কথা, দু’জনকেই সামলাতে হয়েছে উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব। কী ভাবে দেখছেন এই তুলনাকে? রাহুলের জবাব, ‘‘এই তুলনাটা অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে। আমরা একই রাজ্যের ক্রিকেটার, নামও এক। তাই তুলনাটা হয়। ওর মতো কিংবদন্তির সঙ্গে তুলনা হওয়াটা সত্যিই সম্মানের।’’
উইকেটকিপিংয়েও চমকে দিয়েছেন রাহুল। যশপ্রীত বুমরা, কুলদীপদের কিপ করার অভিজ্ঞতা কী রকম? রাহুল বলছেন, ‘‘যখন আইপিএলে বুমরাকে খেলতাম, তখন মনে হত, সব চেয়ে ভাল জায়গা বোধ হয় উইকেটের পিছনে। কিন্তু এখন দেখছি বুমরাকে কিপ করাও দুঃস্বপ্ন। ওয়াংখেড়ে আর রাজকোটে বল নড়াচড়া করেছে।’’ আর কুলদীপ? ‘‘ওকে বুঝতে পারাটা বেশ কঠিন। রাজ্য স্তরে ওর মতো কোনও বোলারের বিরুদ্ধে কিপিং করতে হয়নি। তবে এই চ্যালেঞ্জটা নিতে তৈরি। ’’
নতুন এই রাহুলকে পেয়ে খুশি ভারতীয় ক্রিকেটও।