লক্ষ্য: মোহনবাগানের প্রাক্তন হেনরিই ভরসা গোকুলমের। নিজস্ব
ডুরান্ড কাপ সেমিফাইনালে উবেইদের পরে ফাইনালে গোকুলমের বাজি কে?
জানতে চাইলে শুক্রবার সকালের অনুশীলনে হাসতে থাকেন মহম্মদ সালাহ। এই সালাহ লিভারপুলের নন। ভারতীয়। খেলেন কেরলের দল গোকুলমেই। তিনি দেখিয়ে দেন হেনরি কিসেক্কাকে। বলেন, ‘‘উবেইদের মতোই হেনরিও মুখিয়ে নিজের সেরাটা দিয়ে মোহনবাগানকে হারিয়ে ডুরান্ড জিততে।’’ সেই হেনরি! গত বছর কলকাতা লিগে এই গোকুলম থেকেই তিনি খেলতে এসেছিলেন মোহনবাগানে। সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে দিপান্দা ডিকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গোল করে ক্লাবকে জিতিয়েছিলেন কলকাতা লিগ। কিন্তু আই লিগের মাঝপথে কোচ বদল হতেই মোহনবাগানে দুর্দিন শুরু হয় তাঁর। নিয়মিত সুযোগ পেতেন না। আই লিগের দ্বিতীয় পর্বের ডার্বির আগে তাঁকে দলে রাখা হয়নি। তাই মন খারাপ করেই স্টেডিয়ামে এসেছিলেন। মাঠে এসে জানতে পারেন ইউতা কিনোয়াকি অনুশীলনে চোট পাওয়ায় তাঁকে খেলতে হবে। কিন্তু সেটা তাঁর পছন্দের জায়গা আক্রমণ ভাগে নয়। মাঝমাঠে। মানসিক প্রস্তুতি না থাকায় সেই ডার্বিতে ছন্দে ছিলেন না। সুপার কাপের আগে তাঁকে ছেড়েও দেয় মোহনবাগান।
এ বার ডুরান্ড ফাইনালে হেনরির গোকুলমের সামনে সেই মোহনবাগান। সেই ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে পুরনো কথা মনে করালে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় উগান্ডার এই ফুটবলারের। ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পথে বিড়বিড় করে বলে যান, ‘‘আমাকে গোল করতেই হবে। ফুটবলটা আমিও খেলতে পারি। সঙ্গে মার্কাস জোসেফ রয়েছে। কাজেই গোলের সুযোগ আমরা পাবই। কাপ জিততে গেলে সেই সুযোগ কাজে লাগাতেই হবে।’’
ঘণ্টা ছ’য়েক পরে গোকুলম কোচের সঙ্গে হেনরি যখন সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন, তখন ফের ছুটে যায় প্রশ্ন, মোহনবাগানকে জবাব দিয়ে নিজেকে চেনানোর সেরা মঞ্চ কি শনিবারের ডুরান্ড ফাইনাল? এ বার আবেগ সংবরণ করে হেনরি বলেন, ‘‘আমার কিছু প্রমাণ করার নেই।’’ তবে সাংবাদিক বৈঠক সেরে বেরোনোর সময়ে পরিচিত ফুটবল লেখককে বলেন, ‘‘প্রার্থনা করুন শনিবার যেন মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গোল পাই।’’ ফলে বোঝাই যাচ্ছে, সেমিফাইনালে লাল-হলুদে বাতিল উবেইদের পরে ফাইনালে এ বার সবুজ-মেরুনে বাতিল হেনরির জেদই ফাইনালে গোকুলম শিবিরের অন্যতম শক্তি।
কেরলের দলটির কোচ ফের্নান্দো সান্তিয়াগো বারেলা যদিও বলছেন, ‘‘এই ফাইনাল স্নায়ুর লড়াই। সেই যুদ্ধে যারা জিতবে কাপটা হাতে তুলবে তারাই।’’ স্পেনীয় কোচ কৌশলী ভাবে যোগ করেন, ‘‘মোহনবাগানে সালভা চামোরো, জোসেবা বেইতিয়া, ফ্রান মোরান্তের মতো ফুটবলাররা রয়েছে। ঘরের মাঠে খেলায় এগিয়ে মোহনবাগানই।’’ উঠে আসে উবেইদের কথাও। যা শুনে তিনি বলেন, ‘‘রক্ষণের পিছনে উবেইদ থাকায় ভরসা বাড়ে। ইস্টবেঙ্গলের পরে মোহনবাগান। তাই জিততে গেলে নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে। আমাদের যে পরিকল্পনা সে ভাবেই খেলে ম্যাচটা বার করতে চাই।’’
কেরলের দলটির অনুশীলন থেকে পরিষ্কার, মাঝমাঠে ব্রুনো পেলিসারি শুরু থেকে খেলবেন না ফাইনালে। তাঁর ফিটনেসে সমস্যা। তাই পরে নামবেন। সামনে হেনরি ও ক্যারিবিয়ান মার্কাসকে রেখে প্রতি-আক্রমণেই মোহনবাগানকে হারানোর পরিকল্পনা করছেন গোকুলম কোচ।