প্রতিবাদ: গ্লেজ়ার পরিবারের বিরুদ্ধে সমর্থকদের বিক্ষোভ। ফাইল চিত্র
বিদ্রোহী সুপার লিগে অংশগ্রহণ নিয়ে সমর্থকদের তীব্র তোপের মুখে ইতিমধ্যে পড়তে হয়েছে মালিক গ্লেজ়ার পরিবারকে। আজ, বৃহস্পতিবার উয়েফা ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে এএস রোমার বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড দলের ম্যানেজার ওয়ে গুন্নার সোলসার জানালেন, সেই স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে তাঁর কাছে ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষমা চেয়েছেন গ্লেজ়ার পরিবারের সদস্যরা।
গত সপ্তাহেই ক্ষিপ্ত সমর্থকরা মাঠে ঢুকে পড়ায় ইপিএলে লিভারপুল বনাম ম্যান ইউ ম্যাচ বাতিল করে দিতে হয়েছিল। তার পরেও কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। বিশেষ করে, গ্লেজ়ার পরিবারের অন্যতম সদস্য আভ্রাম স্পষ্ট করে দেন, বিদ্রোহী লিগে ম্যান ইউ-এর অংশগ্রহণ নিয়ে তিনি ক্ষমা চাইবেন না সমর্থকদের কাছে। তবে সেই উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে ঠান্ডা করতে এ বার আসরে নামলেন সোলসার। বুধবার তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “গোটা বিষয় নিয়ে গ্লেজ়ার পরিবারের সদস্যরা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। আমার কাছে ব্যক্তিগত ভাবে তাঁরা ক্ষমা চেয়েছেন।”
সোলসার বলেছেন, “ইউরোপীয় সুপার লিগে খেলার সম্মতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, সেটা সকলেই মেনে নিয়েছেন। তাঁরাও এখন মনে করেন, খুব ভুল পদক্ষেপ করা হয়েছিল।” পল পোগবাদের গুরু আরও বলেছেন, “এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে যে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে পারে, সেটা বোঝার জন্য রকেট-বিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। গ্লেজ়ার পরিবারের সদস্যরাও উপলব্ধি করেছেন, এই কঠিন অবস্থা সামাল দেওয়া কতটা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। নিজেদের ভুলস্বীকার করে ওঁরা আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।”
প্রথম লেগে ৬-২ গোলে রোমার বিরুদ্ধে জয়ের ফলে ইউরোপা লিগের ফাইনালে ওঠা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা ম্যান ইউ-এর কাছে। কিন্তু সমর্থকদের প্রতিবাদের ধরন হঠাৎ করে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠায় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ছবিটা সার্বিক ভাবে বদলে গিয়েছে। আর সেটাই চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে সোলসারের। তিনি বলেছেন, “এমন এক অবাঞ্ছিত পরিস্থিতিতে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছি আমি। কোচ হিসেবে আমি ম্যান ইউ-এর থেকে সেরা ফুটবল চাইছি, অথচ সেই পরিবেশই নেই। তবে আমার সঙ্গে গ্লেজ়ার পরিবারের সমস্ত সদস্যের সম্পর্ক খুব ভাল। ওঁরা খুব গুরুত্ব সহকারে আমার মতামত শুনে নিজেদের ভুলটা ধরতে পেরেছেন। আমাকে ওঁরা এমনও জানিয়েছেন, এই বিষয় নিয়ে সমর্থকদের বক্তব্য শুনতে রাজি আছেন এবং কয়েক দিন পরেই তা নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেবেন। তাই আমিও চাই, সকলেই একজোট হয়ে ম্যান ইউ-এর সাফল্যের জন্য কাজ করুন। এ ক্ষেত্রে সমর্থকদের বড় ভূমিকা রয়েছে। আশা করি, এই অস্থির পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা যাবে।”
সোলসারের মতো বিদ্রোহী সুপার লিগে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় এগোতে চাইছে ফিফাও। প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেছেন, “চটজলদি ১২টি ক্লাবকে শাস্তি দিয়ে জনপ্রিয় হয়ে যাওয়ার ইচ্ছা আমার নেই। এই বিষয়ে সমাধান করতে হলে বিস্তারিত কথা বলতে হবে ক্লাবগুলির সঙ্গে।” তিনি আরও বলেছেন, “মনে রাখতে হবে কোনও ক্লাবকে শাস্তি দেওয়ার অর্থ সেই প্রতিষ্ঠানের ফুটবলার, কোচ এবং সমর্থকদেরও শাস্তি দেওয়া।কিন্তু এ বিষয়ে এদের তো কিছুই করণীয় থাকে না। তাই ধীরে চলো মনোভাব নিয়ে এগোতে হবে।”