পিয়ারলেসকে আটকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন রঞ্জন। ছবি: ফেসবুক।
বেশ কয়েক দিন আগে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছিলেন। সেটাই ছিল এ বারের কলকাতা লিগে লাল-হলুদের প্রথম ম্যাচ। দেখতে দেখতে কলকাতা লিগ পৌঁছে গিয়েছে ফাইনাল ল্যাপে।
বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে তাঁর হাতেই এখন ইস্টবেঙ্গলের হাসি-কান্না। তিনি জর্জ টেলিগ্রাফের কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য। রবিবার কাস্টমসকে হারালেও কলকাতা জিততে পারবেন না আলেয়ান্দ্রো মেনেন্দেজ। স্পেনীয় কোচকে তাকিয়ে থাকতে হবে পিয়ারলেস-জর্জ ম্যাচের দিকে। মেনেন্দেজের মুখে হাজার ওয়াটের আলো ছড়িয়ে দিতে পারেন একমাত্র রঞ্জনই। তাঁর দল আনসুমানা ক্রোমার পিয়ারলেসকে মাটি ধরালে বা রুখে দিলেই ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে উড়বে আবির। উদ্বেগের রাত কাটিয়ে ভোরের সন্ধান পাবেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা।
শুক্রবার রেনবোকে হারিয়ে লাল-হলুদ ভক্তদের টেনশন বাড়িয়ে দিয়েছে পিয়ারলেস। গোল পার্থক্যে ইস্টবেঙ্গলের থেকে বেশ এগিয়ে ক্রোমা-কালোনরা। ফলে লিগ জয়ের সমীকরণ কঠিন লাল-হলুদের। একমাত্র পিয়ারলেস হারলে বা ড্র করলে এবং ইস্টবেঙ্গল জিতলেই লিগ ঢুকবে লাল-হলুদ তাঁবুতে। কী হবে রবিবার? উৎকণ্ঠায় ইস্টবেঙ্গল ভক্তরা। তাঁদের টেনশন কমিয়ে রঞ্জন বলছেন, "পিয়ারলেস যদি একটা গোলের সুযোগ পায়, তা হলে আমরা দুটো গোলের সুযোগ তৈরি করব। ম্যাচটা আমরা জেতার জন্যই নামব।”
আরও পড়ুন: কার্ড কাঁটায় ফয়সালার ম্যাচে নেই কোলাদো
শেষ ম্যাচ জর্জ জিতলে ১৯ পয়েন্টে পৌঁছবে। লিগ তালিকায় ভাল জায়গায় শেষ করবে তারা। রঞ্জন বলছেন, "আমাদের এখন ১৬ পয়েন্ট। রবিবার জিতলে আমাদের ১৯ পয়েন্ট হবে। কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ম্যাজিক পয়েন্ট দাঁড়াচ্ছে ২৩। ১৯ পয়েন্ট পেলে আমাদের পজিশনও ভাল হবে। সেই সুযোগ তো আমি নেবই।’’
কিন্তু মাঠে নামার আগেই যে রঞ্জন পাচ্ছেন না তাঁর ডিফেন্সের স্তম্ভ ইচেকে। ক্রোমাকে রুখবেন কে? এগিয়ে তো তা হলে পিয়ারলেসই। চোয়াল শক্ত করে রঞ্জনের সাফ জবাব, "সহজ হবে না ম্যাচ। ইচে খুব ভাল ডিফেন্ডার। তবে আমরা দুর্বল হয়ে মাঠে নামছি, ভাবার কোনও কারণ নেই। সে দিন আমার তিন জন আপফ্রন্টে থাকবে। আমি কেন ভয় পাব।’’
আরও পড়ুন: একদিন ফুটবল খেলার মতো জুতোও ছিল না, আজ তিনিই ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার
ভয় পাওয়ার বান্দা যে তিনি নন, তা সন্তোষ ট্রফিতেই দেখিয়ে দিয়েছেন। প্রথম ম্যাচ বিহারের কাছে বাংলা হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ওড়িশাকে উড়িয়ে দিয়ে খাদের কিনারা থেকে বাংলাকে টেনে তুলেছেন পোড়খাওয়া কোচ। রসিকতা করে তিনি বলছেন, “এই মরসুমে আমার সঙ্গে অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে। জিতলে টানা তিনটি ম্যাচই জিতছি। আবার হারলে একসঙ্গে তিনটে ম্যাচই হেরে যাচ্ছি। এরিয়ান, কালীঘাট আর ইস্টবেঙ্গলকে পর পর তিনটে ম্যাচে হারিয়েছি। আবার বিএসএস, কাস্টমস আর বিহারের (সন্তোষ ট্রফি) কাছে হেরে গিয়েছি।"
রবিবারের ম্যাচের আগে ভবানীপুর ও ওড়িশাকে (সন্তোষ ট্রফি) টানা দুই ম্যাচে হারানো হয়ে গিয়েছে রঞ্জনের। তৃতীয় ম্যাচে কি তবে পিয়ারলেস? রঞ্জন হাসতে হাসতে বলছেন, "জানি না কী হবে।"
তবে সবাই একবাক্যে মানছেন, লিগ জেতার লড়াইয়ে না থেকেও রঞ্জনই শুষে নিচ্ছেন আলো। তাঁর হাতেই যে নির্ভর করে রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য।