চারমূর্তি: জিমে গা ঘামানোর ফাঁকে সিরাজ, অশ্বিন ও পুজারার সঙ্গে এই ছবি টুইট করলেন পন্থ (বাঁ-িদক থেকে তৃতীয়)।
তাঁদের ঘিরে স্বপ্ন দেখছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। অথচ, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দু’ম্যাচেই নতুন বলে ব্যর্থ ভারতীয় পেস বিভাগ। প্রথম ম্যাচে ১৫৬ ও দ্বিতীয় ম্যাচে ১৪২ রানের জুটি গড়ে ভারতকে বিপদে ফেলে দেন অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। নতুন বলে যশপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ শামি উইকেট না পাওয়ার ফলেই যে বিপক্ষ এতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে, তা মেনে নিচ্ছেন চেতন শর্মা, লক্ষ্মীপতি বালাজি, রজার বিনিরা। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খাটো লেংথে বল করার প্রবণতা কমানোর পরামর্শও দিচ্ছেন তাঁরা।
চেতন শর্মা যেমন ফোনে বলছিলেন, "অস্ট্রেলিয়ায় তরুণ পেসাররা খাটো লেংথে বল করার জন্য উত্তেজিত হয়ে থাকে। শামি-বুমরাদের এই প্রবণতা মানায় না। ওরা অস্ট্রেলিয়ায় আগেও খেলেছে। ওদের জানা উচিত, কোন লেংথে বল করলে সুইং পাওয়া যায়। প্রথম দুই ম্যাচে বুমরাদের বল সুইং করতে দেখলাম না। সেটাই ওদের ব্যর্থতার মূল কারণ।’’
কেন সুইং পাচ্ছেন না বুমরা-শামি? চেতনের পর্যবেক্ষণ, ‘‘বল সুইং করানোর জন্য খাটো লেংথের বদলে থ্রি-কোয়ার্টার লেংথে বল করতে হবে। অর্থাৎ, গুড লেংথ ও শর্ট লেংথের মাঝামাঝি জায়গায়। সেই জায়গায় বল রাখলে সুইং করার পর্যাপ্ত সময় পাবে। আমি যখন অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলাম, কপিল দেব প্রথমেই আমাকে এটা বুঝিয়ে দিয়েছিল।’’
প্রাক্তন ভারতীয় মিডিয়াম পেসার বালাজি অস্ট্রেলিয়ায় খেলেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। তাঁর বিশ্লেষণ, ‘‘বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় ড্রপ-ইন পিচ ব্যবহৃত হয়। এই উইকেট তৈরি হয় অন্য কোথাও। সিরিজ শুরু হওয়ার আগে বসিয়ে দেওয়া হয়। এ ধরনের পিচে পেসাররা খুব বেশি সাহায্য পায় না। তাই ভারতীয় পেসারদের দোষারোপ করব না। অস্ট্রেলিয়াও একই সমস্যায় পড়ছে।’’ বালাজির মতে, ‘‘সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে টানা ১৪-১৫টি ম্যাচ খেলার ধকল তো রয়েইছে। সেটা সামলে ওঠার আগেই নতুন পরীক্ষার মধ্যে পড়েছে আমাদের বোলাররা। মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় তো লাগবেই।"
প্রাক্তন ভারতীয় অলরাউন্ডার রজার বিনির মত ভিন্ন। ১৯৮৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় বেনসন অ্যান্ড হেজেস বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে ১৭ উইকেট নেওয়া বিনি বলছেন, ‘‘সিডনিতে এক রকম উইকেটের চরিত্র। ব্রিসবেন অথবা অ্যাডিলেডে অন্য রকম। সিডনিতে বরাবরই উইকেট স্পিনার ও ব্যাটসম্যানকে সাহায্য করে। এ ধরনের পিচে কাটার ব্যবহার করা উচিত ছিল বুমরা, শামিদের। প্যাট কামিন্সের অস্ত্র গতি। অথচ সিডনিতে শেষ দু’টি ম্যাচে অফকাটার দিয়ে রান আটকানোর কাজ করছিল। স্টার্ক বা বুমরা যা একেবারেই ব্যবহার করেনি। বিপক্ষের উপর তাই চাপ তৈরি করতেও পারেনি।’’
মাঠে ফেরার লগ্নে দাঁড়িয়ে থাকা শ্রীসন্ত আবার মনে করেন, ব্যাটসম্যানকে অতিরিক্ত শট খেলার জায়গা দিয়ে ফেলছেন বুমরা, শামি, নবদীপ সাইনিরা। তাঁর কথায়, ‘‘ওয়ার্নার ও ফিঞ্চ উইকেটের আড়াআড়ি শট খেলতে পছন্দ করে। ওদের শরীর লক্ষ্য করে বল করা উচিত। তা ছাড়া ফিঞ্চ যে ইনসুইংয়ের বিরুদ্ধে সাবলীল নয়, তা গত বারই দেখা গিয়েছে। কেন ওর ব্যাট ও পায়ের মধ্যে ফাঁক তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে না, বুঝতে পারছি না।’’ যোগ করছেন, ‘‘বুমরার হাতে ভাল ইনসুইং আছে। ওরই উচিত ছিল, ফিঞ্চের বিরুদ্ধে এই অস্ত্র ব্যবহার করা।’’