মাথা গোঁজার ঠিকানার খোঁজে বনি 

দু’দশক আগে বন্দনার গোলেই বাংলার মহিলা ফুটবল দল মণিপুরকে হারিয়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তার পরে এশিয়ান গেমসের আগে তাঁর মহিলা পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ০২:০০
Share:

প্রশিক্ষণ: মাঠে বনি। নিজস্ব চিত্র 

জীবনের একটা পর্ব পেরিয়েছেন লড়াই করে। আরেকটি পর্ব পার হওয়ার লড়াই শুরু করেছেন এক সময়ের নামী ফুটবলার বন্দনা পাল। যিনি এখন নিজেকে বদলে বনি নামে পরিচিত। মাথা গোঁজার স্থায়ী একটা ঘর চাইছেন তিনি।

Advertisement

দু’দশক আগে বন্দনার গোলেই বাংলার মহিলা ফুটবল দল মণিপুরকে হারিয়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তার পরে এশিয়ান গেমসের আগে তাঁর মহিলা পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। প্রবল সামাজিক চাপের মুখে পড়েন তিনি। পরিবারকেও সেই সময়ে পাশে পাননি। একসময় অজ্ঞাতবাসে চলে যান। তাঁকে নিয়ে তৈরি হয় স্বল্প দৈর্ঘ্যের সিনেমা, ‘আই অ্যাম বনি’। দীর্ঘ এক দশক পরে আড়াল থেকে প্রকাশ্যে আসেন তিনি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। সম্প্রতি বারাসত লোক আদালত বসেছিল। লোক আদালতের একটি বেঞ্চের বিচারকের ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। কিন্তু লড়াই এখনও শেষ হয়নি তাঁর।

বছর দুয়েক হল উত্তরবঙ্গ থেকে উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙায় ফিরে এসেছেন বনি। সঙ্গে স্ত্রী স্বাতী। শিশু কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী তাঁকে সরকারি কিশলয় হোমে একটা কাজের সুযোগ দিয়েছেন। হোমের ছেলেদের ফুটবল শেখানোর কাজ। ১০ থেকে ১৭ বছরের ৪২ জন ছাত্র তাঁর কাছে ফুটবল শেখে। আবার ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে পেরে খুশি তিনি। মন দিয়ে কাজ করছেন।

Advertisement

ফুটবল ছাড়াও আরেকটি কাজ করতে পারেন বনি। মাটির মূর্তি গড়তে পারেন তিনি। পেটের তাগিদেই শিখেছিলেন সেই কাজ। শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় থাকার সময়ে মূর্তি গড়তেন। এবারও দুর্গা প্রতিমা গড়ার বরাত পেয়েছেন। একটি প্রতিমা যাবে সুকন্যা হোমে, একটি থাকবে তাঁর কিশলয় হোমেই। আরেকটি একটি ক্লাবের জন্য গড়া চলছে।

আরও পড়ুন: বনির লড়াইয়ে রজত কমল

কিন্তু কাজ থাকলেও মাথা গোঁজার নিজস্ব ঠিকানা নেই বনির। স্ত্রী স্বাতীকে নিয়ে থাকেন দাদার বাড়িতে। নিজের ঘর হোক, চান প্রাক্তন ফুটবলার। এক সময়ে পরিচয়ের সংকটে ভেসে বেড়িয়েছেন রাজ্য জুড়ে। এখন নিজের পরিচয়েই পরিচিত তিনি। কিন্তু থিতু হওয়াটা দরকার। নিজের একটা স্থায়ী ঠিকানা যে বড় দরকার। বারবার সেই ভাবনাই ভাবাচ্ছে তাঁকে।

আবার খোঁজ শুরু করেছেন বন্দনা ওরফে বনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement