ছবি পিটিআই।
ভারত বনাম ইংল্যান্ড প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিন চা বিরতির পরে একটা প্রশ্ন নিয়ে উত্তাল হয়েছিল ক্রিকেট মহল। সুনীল গাওস্কর, মাইকেল ভন থেকে শুরু করে শেন ওয়ার্ন— সবার মুখে তখন একটাই প্রশ্ন। কেন ইংল্যান্ড তখনও ইনিংস ডিক্লেয়ার করেনি? কেন কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে মন্থর গতিতে ব্যাট করে চলেছে জো রুটের দল? বিশেষ করে চতুর্থ দিন চা বিরতির পরেও? এই প্রশ্নের একটা খুব সহজ জবাব আছে। ভারতীয় ব্যাটিংকে এতটাই সমীহ করছে ইংল্যান্ড, যে তারা কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। যে কারণে এমন একটা রান স্কোরবোর্ডে তোলার দিকে নজর দিয়েছিল তারা, যে রান ভারতের পক্ষে শেষ দিনে তাড়া করা কঠিন হবে। এমনটাই জানিয়ে গেলেন রুটদের দলের বোলিং কোচ জন লুইস।
ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে গাওস্কর থেকে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার মার্ক বুচার, সবাই রুটদের কৌশল নিয়ে মাথা চুলকোতে শুরু করেছিলেন। গাওস্কর তো মজা করে বলেই ফেলেন, ‘‘নিশ্চয়ই চুক্তিতে আছে, ইংল্যান্ডকে পুরো দুটো ইনিংস ব্যাট করতে হবে!’’ ওয়ার্ন টুইট করেন, ‘‘ইংল্যান্ডের মানসিকতা হল, এই টেস্টে হারা চলবে না। কী ভাবে টেস্টটা জেতা যায়, কত বেশি ওভার বল করা যায়, এই সব ওরা ভাবছেই না। এই ভাবে ব্যাট করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কিন্তু ইংল্যান্ড বোলারদের চাপে ফেলে দেবে। বিশেষ করে স্পিনারদের।’’ রুটদের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভারতের প্রাক্তন বাঁ-হাতি স্পিনার বিষাণ সিংহ বেদীর টুইট, ‘‘ইংল্যান্ড মনে হচ্ছে জেতার চেষ্টা করতে ভয় পাচ্ছে। এটা একেবারে সেই ইংল্যান্ডের ‘আগে নিজে বাঁচো’ নীতির আদর্শ উদাহরণ।’’
সব চেয়ে অবাক করার ব্যাপার হয়, চারশো রানে এগিয়ে যাওয়ার পরেও ব্যাটিং চালিয়ে যায় ইংল্যান্ড। এমনকি জ্যাক লিচ, জেমস অ্যান্ডারসনকেও ব্যাট করতে নামতে হয়। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড অলআউট হয় ১৭৮ রানে। ভারতের সামনে ৪২০ রানের লক্ষ্য দিয়ে। অলআউট না হয়ে আপনারা কি আগেই ইনিংস ডিক্লেয়ার করতে পারতেন না? সোমবার ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে প্রথমেই এই প্রশ্ন করা হয় ইংল্যান্ডের বোলিং কোচকে। জবাবে লুইস বলেন, ‘‘আমাদের পরিকল্পনা মতোই আমরা খেলেছি। চেয়েছিলাম, ভারতীয় ইনিংসে ১০০ ওভার মতো বল করতে। নতুন বলে যাতে ২০ ওভার বল করা যায়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সব কিছু হয়েছে।’’
আপনারা কি চিন্তায় ছিলেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা এর কমে কোনও রান তাড়া করে তুলে দেবে? ভারতকে কি আপনারা সামান্যতম সুযোগও দিতে চাইছিলেন না রান তাড়া করার? ইংল্যান্ড বোলিং কোচের জবাবে পরিষ্কার, বিরাট কোহালিদের কতটা সমীহ করছেন তাঁরা। লুইস বলেন, ‘‘অবশ্যই সেই ভাবনাটা ছিল। সিরিজের প্রথম টেস্ট। আমরা ভারতকে কোনও রকম সুযোগ দিতে চাইনি। ওদের দলে বেশ কিছু ভাল ব্যাটসম্যান আছে। তা ছাড়া বড় রান চাপিয়ে দিলে আগ্রাসী ফিল্ডিং সাজানো যায়। স্পিনারদের বলে ব্যাটের কাছাকাছি ফিল্ডার রাখা যায়। আমাদের মনে হয়েছে, টেস্ট জেতার জন্য এটাই আমাদের সেরা কৌশল।’’
কিন্তু চা বিরতির পর থেকে হঠাৎ করে রান তোলার গতি কেন কমে গেল? অলি পোপ আউট হওয়ার পরে রান রেট নেমে আসে আড়াইয়েরও কম! ইংল্যান্ড বোলিং কোচের ব্যাখ্যা, ‘‘এই পিচে ব্যাটিং করা কিন্তু খুব সোজা কাজ নয়। এসেই শট খেলা যায় না। বিশেষ করে অশ্বিনদের মতো অভিজ্ঞ বোলারদের বিরুদ্ধে।’’