সুপার কাপ নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। ছবি: এক্স।
সুপার কাপ জিতেছেন কিছু দিন আগেই। তার ছ’দিনের মধ্যেই ইস্টবেঙ্গলকে নেমে পড়তে হচ্ছে নতুন চ্যালেঞ্জে। আইএসএলের শুরুতে প্রথম ম্যাচেই মোহনবাগানের সামনে। ফলে আনন্দ করার সময় সে ভাবে পাওয়া যায়নি। তবু প্রত্যয়ী ইস্টবেঙ্গল কোচ জানিয়ে দিলেন, তারা তিন পয়েন্টের লক্ষ্যেই নামবেন শনিবার। সঙ্গে এটাও জানালেন, সুপার কাপ জেতায় তিনি সমর্থকদের জন্য গর্বিত। এখন লাল-হলুদ সমর্থকেরাও গর্ব করে বলতে পারবেন, তাঁরাও চ্যাম্পিয়ন।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই কুয়াদ্রাত বললেন, “ইস্টবেঙ্গল একটা বড় ক্লাব। এত সমর্থক তাদের। অনেক দিন পরে ক্লাব একটা ট্রফি জিতেছে। সমর্থকেরা আনন্দ করার একটা সুযোগ পেয়েছেন। শনিবার জিততে পারলে ওরা আবার আনন্দ করতে পারবেন। এখন ওঁরা গর্বিত। এখন ওঁরা অন্য ক্লাবের সমর্থকদের সামনে গিয়ে গর্ব করে বলতে পারবেন, আমরাও চ্যাম্পিয়ন।” অন্য ক্লাব বলতে তিনি যে মোহনবাগানকেই বুঝিয়েছেন, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সাধারণত কলকাতা ডার্বি বা ট্রফি জিতলে পরের ম্যাচেই ঠোক্কর খায় বড় দলগুলি। শনিবার কি সে রকম কিছু হতে পারে? প্রশ্ন করতেই কুয়াদ্রাত বেশ সাবধানী। বললেন, “বড় ম্যাচের পর ঠোক্কর খাওয়ার কথা জানি। এমনিতে কোনও একটা ট্রফি জিতে পরের ম্যাচেও ঠোক্কর খাওয়ার কথাও জানি। ২০১৯ সালে বেঙ্গালুরুর হয়ে আইএসএল জেতার পর সুপার কাপে আই লিগের একটা দলের কাছে হেরে গিয়েছিলাম। কিন্তু ফুটবলারদের মনঃসংযোগ ঠিক রাখাই আমার কাজ। ওরা আইএসএলের জন্য তৈরি। আরও একটা কঠিন ম্যাচ খেলতে নামবে। আমাদের কাছে তিন পয়েন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
ইস্টবেঙ্গলের কাছে ভাল খবর হল, অনুশীলনে ফিরেছেন গোলকিপার প্রভসুখন গিল। শুক্রবার বিকেলে তিনি গোটা দলের সঙ্গে অনুশীলন করেন। পাশাপাশি, সাউল ক্রেসপোর যে চোট ছিল ডান পায়ে, সেটাও সেরে গিয়েছে অনেকটাই। তিনি এ দিন পুরোদমে অনুশীলন করেছেন। এ দিন অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গল দলকে উদ্বুদ্ধ করতে হাজির হয়েছে কর্তা দেবব্রত সরকার। প্রত্যেকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এবং কথা বলে তিনি দলকে চাঙ্গা করেন।
ডার্বি জিতলে কি তারা ট্রফি জয়ের লড়াইয়ে এগিয়ে যাবেন? প্রশ্নটা শুনে হেসে ফেললেন কুয়াদ্রাত। বলেছেন, “এখনই ট্রফির কথা ভাবতে চাই না। আমরা লিগ তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছি। শনিবার জিততে পারলে মোহনবাগানের সঙ্গে পাঁচ পয়েন্টের পার্থক্য হবে। তা-ও পিছিয়ে থাকব আমরা। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে জিততে পারলে আমরা ছয় নম্বরে উঠব। কিন্তু তখনও অনেক কাজ বাকি থাকবে। তবে প্লে-অফের লড়াইতে চলে আসব। ট্রফির কথা এখন থেকেই ভাবতে চাই না।”
সুপার কাপ ফাইনাল এবং ডার্বির এই মাঝে ক’দিনে দুই বিদেশিকে ছেড়ে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। নতুন বিদেশিরা এখনও আসেননি। কুয়াদ্রাত অবশ্য তা নিয়ে হা-হুতাশ করতে চান না। বলেছেন, “দুই বিদেশিকে ছাড়ার কোনও অজুহাত দিতে চাই না। এখানে চার জন নিয়েই খেলতে হবে। আমরা দুটো জায়গায় দু’জন নতুন মুখ চেয়েছিলাম। সেই পরিবর্ত আমরা খুঁজে পেয়ে গিয়েছি। ভিক্টর ভাসকুয়েস এবং ফেলিসিয়ো কেমন ফুটবলার সেটা ওরা এলেই আপনারা দেখতে পাবেন। রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলোত্তির কথা ধার করে বলতে চাই, ফুটবলার এবং কোচ সবাই মানুষ। তাঁদের একটা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কাজ করতে হয়। যে দলেই থাকুক না কেন, নিজের সেরাটা দেওয়াই কাজ।”
মাঝমাঠে শৌভিক চক্রবর্তীর বিকল্পও খুঁজে বার করতে হবে কুয়াদ্রাতকে। শুক্রবার সে প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমরা ১১ জনকে নিয়ে নামব। শৌভিকের পরিবর্ত খুঁজে নেওয়ার জন্য আমাদের হাতে অনেক ফুটবলারই রয়েছে। তাদের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নিতে হবে। কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতেই হবে।”