সোমবার রাত ২টোর সময় রিয়াল মাদ্রিদের হোটেলের বাইরে হাজির হন একদল সমর্থক। প্রতীকী ছবি
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে দু’বার হারতে হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে। এ বার সাক্ষাৎ প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে। পুরনো শত্রুর বিরুদ্ধে রাগে প্রতিশোধ নেওয়ার ফন্দি খুঁজছিলেন লিভারপুলের সমর্থকরা। বিপক্ষের ফুটবলারদের উত্ত্যক্ত করতেও পিছপা হলেন না। তবে ফল হল মারাত্মক। ঘরের মাঠে হজম করতে হল পাঁচ গোল।
ম্যাচের আগে নিজেদের কাণ্ডের জন্যে লিভারপুলের সমর্থকরা লজ্জিত হতেই পারেন। পুরনো ছক নিয়েছিলেন তারা। ম্যাচের আগের দিন, অর্থাৎ সোমবার রাত ২টোর সময় রিয়াল মাদ্রিদের হোটেলের বাইরে হাজির হন একদল সমর্থক। ফাটাতে থাকেন আতশবাজি। ঢোল নিয়ে বাজাতে থাকেন আর এক দল। চিৎকার-চেঁচামেচি তো ছিলই। ফুটবলারদের ঘুম যাতে ভেঙে যায় এবং মনঃসংযোগ নড়ে, সেটাই ছিল উদ্দেশ্য। তবে হিতে বিপরীত হয়েছে। দু’গোলে পিছিয়ে পড়েও রিয়ালের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন দেখা গিয়েছে ম্যাচে।
অতীতে দুই দলের সমর্থকরাই একে অপরের মধ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছেন। গত বছর প্যারিসের ফাইনালে হারের পর উন্মত্তের মতো আচরণ করতে থাকেন লিভারপুল সমর্থকরা। ফ্রান্সের পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। এ দিনও ম্যাচের পর রিয়ালের বাসের উদ্দেশে প্লাস্টিকের বোতল ছুড়তে দেখা গিয়েছে কিছু লিভারপুল সমর্থককে।
গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। ভিনিসিয়াসের একমাত্র গোলে ট্রফি জেতে রিয়াল। মঙ্গলবার ১৩ মিনিটের মধ্যে লিভারপুল দু’গোলে এগিয়ে যাওয়ায় অনেকেই মনে করেছিলেন, ম্যাচ একপেশে হতে চলেছে। রিয়াল সেই ধারণা পাল্টে দেয়। প্রথমার্ধেই সমতা ফেরায় তারা। দ্বিতীয়ার্ধের ২০ মিনিটের মধ্যে ৫-২ এগিয়ে যায়। লিভারপুল আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি।
রিয়ালের ডিফেন্ডারদের ভুলে চতুর্থ মিনিটেই লিভারপুলকে এগিয়ে দেন ডারউইন নুনেজ়। মহম্মদ সালাহর পাস থেকে ব্যাক হিলে গোল করেন তিনি। রিয়াল দ্বিতীয় গোল খায় গোলকিপার থিবো কুর্তোয়ার ক্ষমাহীন ভুলে। সতীর্থের থেকে পাস পেয়েছিলেন কুর্তোয়া। বুকে রিসিভ করলেও বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। সামনেই ছিলেন সালাহ। চলতি বলে শট নিয়ে গোল করেন।
২১ মিনিটে এক গোল শোধ করেন ভিনিসিয়াস। বক্সের সামান্য ভেতর থেকে ডান পায়ের বাঁকানো শটে বিপক্ষ গোলকিপারকে পরাস্ত করেন তিনি। রিয়ালের দ্বিতীয় গোল লিভারপুলের গোলকিপার অ্যালিসন বেকারের ভুলে। কুর্তোয়ার মতো তিনিও সতীর্থের থেকে পাস পেয়েছিলেন। তা আবার সতীর্থকেই ফেরাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভিনিসিয়াস বাধা দেন। বল তাঁর পায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়।
বিরতির পরেই এগিয়ে যায় রিয়াল। লুকা মদ্রিচের ফ্রিকিক থেকে হেডে গোল করেন মিলিটাও। তার পরেই গোল করেন বেঞ্জেমা। রদ্রিগোর সঙ্গে পাস খেলে বক্সের কাছাকাছি পৌঁছে যান তিনি। সেখান থেকে বাঁ পায়ে শট লিভারপুলের এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে গোলে ঢোকে। রিয়ালের পঞ্চম গোল প্রতি আক্রমণের ফসল। লিভারপুলের ফুটবলারের থেকে বল কেড়ে নেন মদ্রিচ। তিনি পাস দেন ভিনিসিয়াসকে। ব্রাজিলের ফুটবলারের পাস থেকে বিপক্ষের গোলকিপারকে কাটিয়ে বল জালে জড়ান বেঞ্জেমা।