মেগান রাপিনো। ছবি: রয়টার্স।
গত বার মেয়েদের বিশ্বকাপ জেতার পর বেতনসাম্যের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। পাশাপাশি সমকামীদের হয়ে মুখ খুলে নড়িয়ে দিয়েছিলেন আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। দেশপ্রধানের আমন্ত্রণ সত্ত্বেও যাননি হোয়াইট হাউসে। তাঁর দাবিতেই পুরুষ এবং মহিলা ফুটবলারদের সমান বেতন দেওয়ার নিয়ম চালু করেছে আমেরিকা। সেই ফুটবলার আমেরিকার মেগান রাপিনো নিজের শেষ বিশ্বকাপে ফিরছেন খালি হাতেই। সুইডেনের কাছে হেরে আমেরিকার দৌড় শেষ হয়ে গিয়েছে। চোখের জলে বিশ্বকাপ এবং জাতীয় দলকে বিদায় জানিয়েছেন রাপিনো।
ফুটবলমাঠে তাঁর কীর্তি অসংখ্য। কিন্তু মাঠের বাইরে তাঁর কীর্তি অনেক বেশি। এতটাই যে খোদ প্রেসিডেন্টকে আসরে নেমে পড়তে হয় তাঁর কথার জবাব দিতে। ২০১৯-এর বিশ্বকাপের আগে থেকেই ট্রাম্পের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। বিশ্বকাপ জিতে স্পষ্ট জানান, কোনও মতেই হোয়াইট হাউসে যাবেন না। সঙ্গে প্রয়োগ করেছিলেন অশ্লীল শব্দও। জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, দেশ এবং জাতীয় পতাকাকে সম্মান করা উচিত রাপিনোর।
কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বর্ণবিদ্বেষী আচরণের প্রতিবাদে ২০১৫ সালে জাতীয় সঙ্গীতের সময় হাঁটু মুড়ে বসেছিলেন এনএফএল তারকা কলিন কায়পারনিক। তাঁকে সমর্থন জানিয়ে একটি ফুটবল ম্যাচে একই কাজ করেন রাপিনো। তার পরে রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে লেগে যায় তাঁর। এর পর সমবেতনের দাবিতে আমেরিকার ফুটবল সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি এবং অ্যালেক্স মর্গ্যান। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে সমকামীদের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।
এ হেন রাপিনো রবিবার পেনাল্টি শুট-আউটে আমেরিকার হয়ে গোল করতে পারেননি। দলও হেরেছে। ম্যাচের পর বলেছেন, হয়তো এটাই খেলাটার মহিমা। ভাল দিনের পাশাপাশি ভয়ঙ্কর দিনও দেখতে হয়। দিনটা আমাদের ছিল না। তবু যা অর্জন করেছি তার জন্যে আমি কৃতজ্ঞ।” হারের পর কাঁদতে কাঁদতে প্রথমে কোচকে জড়িয়ে ধরেন। তার পর একে একে বাকি সতীর্থদের। পরে আরও বলেন, “এই দেশের হয়ে খেলতে পেরে গর্বিত।”
গত বারের বিশ্বকাপে আসল তারকাই ছিলেন রাপিনো। সোনার বুট এবং সোনার বল দুটোই জিতেছিলেন। পরে পান বালঁ দ্যর। তবে ২০১১ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে তাঁর একটি গোল বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা গোল বলে বিবেচিত হয়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপও জিতেছেন তিনি।