তুরস্কে ধ্বংসস্তূপের মাঝে আটকে পড়েছেন দুই ফুটবলার। ছবি: রয়টার্স
ভয়াবহে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক। সোমবার সকালে হওয়া ভূমিকম্পে তুরস্ক এবং সিরিয়া মিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২৩০০-র বেশি মানুষের। সেই ধ্বংসস্তূপের মাঝে আটকে পড়েছেন দুই ফুটবলার। তার মধ্যে একজন চেলসিতে আগে খেলে গিয়েছেন। আর এক ফুটবলার খেলেন স্থানীয় ক্লাবে। দু’জনের সন্ধানেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে জোরকদমে।
ইংল্যান্ডের দুই ক্লাব চেলসি এবং নিউক্যাসলে খেলেছেন ক্রিশ্চিয়ান আতসু। তিনি এখন খেলেন তুরস্কের ক্লাব হাতায়স্পরে। সেই ক্লাবটি অবস্থিত কাহরামানমারাস এলাকায়, যে ভূমিকম্পের প্রভাব মারাত্মক। আতসুর বেশ কিছু সতীর্থও ধ্বংসস্তূপের মাঝে আটকে পড়েছিলেন। তাঁদের নিরাপদে উদ্ধার করা গেলেও আতসুর খোঁজ মিলছে না। পুলিশের তরফে তল্লাশি অভিযান চলছে। ওই ক্লাবের স্পোর্টিং ডিরেক্টর তানের সাভুটও আটকে পড়েছেন। এই দু’জন জীবিত না মৃত, তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
রবিবারই ক্লাবের হয়ে গোল করেছেন আতসু। তাঁর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সে দেশে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছে। স্ত্রী ছাড়াও দুই পুত্র এবং এক কন্যাকে নিয়ে তুরস্কের ওই শহরে থাকেন আতসু। তাঁদেরও খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। ইংল্যান্ড এবং তুরস্কের ফুটবল সমর্থকরা আপাতত আতসুর জন্যে প্রার্থনা করছেন। ২০১৩-য় পোর্তো থেকে চেলসিতে যোগ দিলেও কোনও দিন সিনিয়র দলের হয়ে খেলা হয়নি তাঁর। লোনে এভার্টনে খেলেছেন।
ক্রিশ্চিয়ান আতসু। ফাইল ছবি
ভূমিকম্পের কবলে পড়েছেন মালাতিয়াসপরের গোলকিপার এয়ুপ তুর্কসালানও। তাঁর স্ত্রীকে বাঁচানো গিয়েছে। কিন্তু এই ফুটবলারের খোঁজ চলছে। তাঁর ক্লাব ইতিমধ্যেই টুইটে লিখেছে, “আমাদের প্রার্থনা তোমার সঙ্গে রয়েছে।”
সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টে ১৭ মিনিটে প্রথম কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, কম্পনের উৎসস্থল ছিল তুরস্কের গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ২৪.১ কিলোমিটার গভীরে। এর প্রায় ৯ ঘণ্টা পর আবার শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয় তুরস্কে। সে বার রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৫।
১৯৩৯ সালের পর তুরস্কে এই প্রথম এত শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হল। ইউএসজিএস জানিয়েছে, সে বছরও তুরস্কে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৮। এরজিনকান প্রদেশে ভূমিকম্পে সে বার ৩৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ৭ কম্পাঙ্কের ভূকম্প গত ২৫ বছরে ৭ বার অনুভূত হয়েছে তুরস্কে।
কম্পনের জেরে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। চার দিকে শুধুই ধ্বংসের ছবি। হাসপাতালগুলিতে ভিড় বাড়ছে জখমদের। সিরিয়া এবং তুরস্ককে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে বিভিন্ন দেশ। ভারতের তরফেও উদ্ধারকারী এবং চিকিৎসকদের দল পাঠানো হচ্ছে। সাহায্য পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনও।