এআইএফএফ-এর সভাপতি হলেন প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবে। ছবি টুইটার
ভারতীয় ফুটবল প্রশাসনে কল্যাণ চৌবের আবির্ভাব ধুমকেতুর মতো। প্রফুল্ল পটেলকে সুপ্রিম কোর্ট সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার (এআইএফএফ) সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর অনেকেই শীর্ষপদে লড়ার জন্য ইচ্ছুক বা আগ্রহী হয়েছিলেন। হঠাৎই সেই দৌড়ে ঢুকে পড়েন কল্যাণ। রাতারাতি মনোনয়ন জমা দেন তিনি। সিওএ-র জারি করা সেই নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যাওয়ার পর ফের নতুন করে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। শুরু থেকেই বেশির ভাগ রাজ্য সংস্থার সমর্থন পেয়েছিলেন। ফলে নির্বাচনে জিততে কোনও অসুবিধাই হল না তাঁর। ৩৩-১ ভোটে জিতে সভাপতি হলেন কল্যাণ।
গত শতাব্দীর শেষের দশকে ভারতীয় ফুটবলে বেশ নামডাক করেছিলেন। ১৯৯৫-এ টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েট হন তিনি। তৃণমূল স্তর থেকে উঠে এসে শুরু করেন পেশাদার পর্যায়ে ফুটবল খেলা। গোলকিপার হিসাবে ধীরে ধীরে খ্যাতি পেতে শুরু করেন। ১৯৯৭-৯৮ এবং ২০০১-০২ সালে ‘ভারতের সেরা গোলকিপারের’ পুরস্কার পান। তার আগে ১৯৯৪ সালে ইরানে অনূর্ধ্ব-১৭ এশীয় যুব প্রতিযোগিতায় ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন। ১৯৯৬-এ দক্ষিণ কোরিয়ায় অনূর্ধ্ব-২০ এশীয় যুব প্রতিযোগিতাতেও অংশ নেন। জাতীয় দলে ১৯৯৯ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন। তবে কোনও দিন কোনও ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি। দলের সদস্য হিসাবেই থেকে গিয়েছেন।
১৯৯৬-৯৭ পর্যন্ত তিনি খেলেন মোহনবাগান ক্লাবে। সেখানে ২৭টি ম্যাচ খেলেছেন। এর পর যোগ দেন ইস্টবেঙ্গলে। তিন বছরে ৬৭টি ম্যাচে খেলেছেন। এ ছাড়া বেঙ্গল মুম্বই এবং সালগাঁওকরের হয়েও ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে খেলেছেন কল্যাণ। সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা ছাড়াও ঝাড়খণ্ড, গোয়া, পঞ্জাব এবং মহারাষ্ট্রের হয়ে খেলেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবে সীমিত সময়ের জন্য খেলেছেন। এ ছাড়া জার্মানির দ্বিতীয় ডিভিশনের ক্লাব কার্লস্রুহের এফসি এবং ভিএফআর হেইব্রনের হয়ে ট্রায়াল দেন তিনি।
ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর কিছু দিনের জন্য মডেলিং করেন। তার পরেই সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৫ সালে যোগ দেন বিজেপিতে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর থেকে তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রর কাছে হেরে যান। এর পর ২০২১ বিধানসভা ভোটে মানিকতলা থেকে বিজেপি প্রার্থী হন। সেখানে হারেন তৃণমূলের সাধন পাণ্ডের কাছে। এই মুহূর্তে তিনি উত্তর কলকাতা জেলার সাংগঠনিক সভাপতি।
এর আগে কোনও দিন ভারতীয় ফুটবলের কোনও প্রশাসনিক পদে ছিলেন না কল্যাণ। প্রথম বার সুযোগ পেয়েই সরাসরি সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়ে গেলেন। সভাপতি হিসাবে তাঁর প্রথম চ্যালেঞ্জ সুষ্ঠু ভাবে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ আয়োজন করা। ভারতের জাতীয় দল যাতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রচুর ম্যাচ খেলতে পারে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে তাঁকে।