—প্রতীকী চিত্র।
জঙ্গিদের কবলে পাকিস্তানের ছয় ফুটবলার! ভয়ঙ্কর এই ঘটনা ঘটেছে বালুচিস্তানের দেরা বুগতি জেলার সুই শহরে। অপহৃত ছয় ফুটবলারদের বয়স ১৭ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। অপহৃতদের উদ্ধার করতে তল্লাশি শুরু চালাচ্ছে পুলিশ। আভ্যন্তরীণ মন্ত্রী সরফরাজ় বুগতি বিবৃতি দিয়েছেন, ‘‘পুরো অঞ্চল ঘিরে ফেলা হয়েছে। অপহৃতদের উদ্ধারের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সংগ্রহ করা হচ্ছে তথ্যও।’’
পাকিস্তানে এই ধরনের ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের উপরে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। একাধিক ক্রিকেটার আহতও হয়েছিলেন। এ বারের ঘটনা বালুচিস্তানে। আয়তনের দিক থেকে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় অঞ্চল বালুচিস্তান। কিন্তু জনসংখ্যা সবচেয়ে কম। এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ রয়েছে। অভিযোগ আধুনিক সুবিধে থেকে তাঁদের সবসময় বঞ্চিত করে রাখা হয়। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে উন্নতি হলেও বালুচিস্তানে তার কোনও প্রতিফলন দেখা যায় না।
গত শনিবার একটি ফুটবল প্রতিযোগিতায় খেলতে বালুচিস্তানের দেরা বুগতি জেলার সুই শহরে ১৬ জন ফুটবলারকে নিয়ে দলটি যাচ্ছিল। গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে টিমবাস দাঁড় করায় জঙ্গিরা। অপহরণ করা হয় ছয় ফুটবলারকে। প্রশ্ন উঠছে, কেন শুধু ছয় ফুটবলারকেই অপহরণ করা হল? এর নেপথ্যে কি অন্য কোনও কারণ রয়েছে?
আমির হোসেন নামে ২০ বছরের এক অপহৃত ফুটবলারের বাবা জ়াকির হোসেন বলেছেন, ‘ফুটবল খেলা তো অপরাধ নয়। আমার ছেলে খুব ভাল খেলে। এই কারণেই কি ওকে অপহরণ করা হল?’’ যোগ করেছেন, ‘‘আমাদের পুরো পরিবার আতঙ্কের মধ্যে প্রতিটি মুহূর্ত কাটাচ্ছে। আমিরকে অপহরণ করার পর থেকে জঙ্গিদের তরফে কোনও যোগাযোগও করা হয়নি। জানি না ও সুস্থ আছে কি না।’’
ছয় ফুটবলারের অপহরণের ঘটনায় পাকিস্তানের সব মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সমালোচনাও শুরু হয়েছে সরকারের। আভ্যন্তরীণ মন্ত্রী সরফরাজ় বলেছেন, ‘‘ছয় বাচ্চাকে অপহরণের ঘটনা ভয়ঙ্কর। ওরা বালুচিস্তানের জঙ্গিদের হাতে বন্দি। এই ধরনের ঘটনা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’’
পাক মন্ত্রীর অভিযোগের তির বালুচিস্তানের জঙ্গি সংগঠন ‘বালুচ রিপাবলিকান আর্মি’-র দিকে। সরফরাজ় বলেছেন, ‘‘যে কোনও মূল্যে জঙ্গিদের হাত থেকে এই ছয় ফুটবলারকে উদ্ধার করাই একমাত্র লক্ষ্য। সর্বপ্রকার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি, ওরা সুস্থ রয়েছে। সকলকে দ্রুত উদ্ধার করতে সফল হব আমরা।’’