সুনীল ছেত্রী। —ফাইল চিত্র
জন্ম সেকেন্দ্রাবাদে। মানুষ হয়েছেন দিল্লিতে। রাজ্য দলও দিল্লি। কিন্তু কলকাতার সঙ্গে সুনীল ছেত্রীর সম্পর্কের গভীরতা অতল। ফুটবল জীবনের প্রথম চার বছর খেলেছেন মোহনবাগানে। ইস্টবেঙ্গলে খেলেছেন দু’বছর। এই শহরের জামাই তিনি। সেই কলকাতাতেই দেশের জার্সি গায়ে জীবনের শেষ ম্যাচ খেলতে নামছেন। কিন্তু ৬ জুন যুবভারতীতে বিদায়বেলায় বিশেষ কিছুই চাইছেন না সুনীল।
সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে সুনীলকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, শেষ ম্যাচে তিনি কী চাইছেন। আর মাত্র ২১ দিনের জন্য ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক থাকা সুনীল পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কিছুই চাইছেন না। কল্যাণকে সুনীল অনুরোধ করেন, তাঁর জন্য কোনও বিশেষ ব্যবস্থা যেন করা না হয়। কল্যাণও আপাতত সুনীলের অনুরোধ মেনে নিয়েছেন। তাঁকে জানিয়েছেন, জেতার থেকে বড় সংবর্ধনা আর কিছু হয় না। তাই বিদায়ী ম্যাচে সুনীল যেন দেশকে জিতিয়ে যুবভারতী ছাড়তে পারেন।
সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে। — ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবার সকালে অবসরের সিদ্ধান্ত জানান সুনীল। তার আগে বুধবার রাতে তিনি কল্যাণকে মেসেজ করে জানান, বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৯টায় তিনি এক বার ফেডারেশন সভাপতির সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চান। কল্যাণ তখন ভারত অধিনায়ককে জানান, তিনি ওই সময় কনফারেন্সে থাকবেন। সেই কারণে যদি ফোন ধরতে না পারেন, তা হলে সুনীল যেন মেসেজ করে রাখেন।
সুনীল বৃহস্পতিবার সকাল ৮:৪৫ মিনিটে কল্যাণকে ফোন করেন। কনফারেন্সে থাকলেও কল্যাণ ফোন রিসিভ করেন। তখনই অবসরের সিদ্ধান্তের কথা ফেডারেশন সভাপতিকে জানান সুনীল। ভারতের ফুটবল সমর্থকদের মতো কল্যাণের কাছেও সুনীলের এই সিদ্ধান্ত আকস্মিক ছিল। খানিক্ষণ চুপ করে থাকার পর তিনি সম্মান জানিয়ে সুনীলের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বিশেষ সংবর্ধনার প্রস্তাব দেন তিনি। কিন্তু সুনীল রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত ফেডারেশন সভাপতির সম্মতির পর সকাল ৯:২২ মিনিটে অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করেন সুনীল।
ওই ভিডিয়োতে সুনীল নিজেই জানিয়েছেন, সবার আগে খবরটি তিনি বাবা, মা এবং স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। তার পর তিনি কল্যাণকে জানান। কোচ, সতীর্থদেরও এই খবর জানাননি। এমনকি শ্বশুর ও প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্যও আনন্দবাজার অনলাইনের থেকেই প্রথম জানতে পারেন সুনীলের অবসর নেওয়ার কথা।