স্ত্রী সোনমের সঙ্গে সুনীল। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
খবরটা বাবাকে জানানোর পর তিনি স্বাভাবিক আচরণ করেছিলেন। কিন্তু মা এবং স্ত্রীকে জানানোর পর তাঁরা নিজেদের আবেগ সামলাতে পারেননি। কেঁদে ফেলেছিলেন সঙ্গে সঙ্গে। অবসর ঘোষণার ভিডিয়োবার্তায় এমনই বলেছেন সুনীল ছেত্রী। জানিয়েছেন, সতীর্থ বা কোচ নয়, সবার আগে নিজের পরিবারকেই অবসরের সিদ্ধান্ত জানানোর ব্যাপারে ভেবেছিলেন তিনি।
ভিডিয়োবার্তায় সুনীল বলেছেন, “অবসরের কথা সবার আগে নিজের পরিবারকে বলেছিলাম। মা, বাবা এবং স্ত্রীকে। বাবা স্বাভাবিক আচরণ করেছিল। খুশি হয়ে হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছিল। কিন্তু মা এবং স্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে কাঁদতে শুরু করেছিল। আমি ওদের বলেছিলাম, তোমরা তো প্রায়ই আমাকে বলো কত বেশি ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। আমাকে খেলতে দেখলে তোমাদের নাকি মানসিক চাপ কতটা বেড়ে যায়। এখন তো তোমাদের ভাল কথাই শোনাচ্ছি। পরের ম্যাচের পর আর দেশের হয়ে কোনও দিন খেলব না।”
সুনীলের সংযোজন, “এ কথা বলার পরেও ওরা আমাকে বোঝাতে পারেনি কেন কাঁদছে। এমন নয় যে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, এমন নয় যে এটা-ওটা ভেবে অবসর নিতে চাইছি। হঠাৎ করেই আমার মনে হয়েছে পরের ম্যাচটাই শেষ ম্যাচ। তার পরে যদিও এটা নিয়ে অনেক ভেবেছি।”
দেশের হয়ে খেলার যে আনন্দ এবং একই সঙ্গে অসহনীয় চাপ, সেটা বর্ণনা করেছেন সুনীল। তাঁর কথায়, “গত ১৯ বছরে অসহ্য চাপ এবং দেশের হয়ে খেলার আনন্দ, দুটোই আমার সঙ্গে সব সময় ছিল। ব্যক্তিগত ভাবে আমি কোনও দিন ভাবতে পারিনি দেশের হয়ে এতগুলো ম্যাচ খেলব, ভাল হোক বা খারাপ, এত কিছু করতে পারব। এখন আমি সেটা পেরেছি। গত এক-দেড় মাসে আমি সেটা পেরেছি এবং খুব অদ্ভুত লেগেছে। হয়তো করতে পেরেছি কারণ, আমি বুঝতে পেরেছিলাম পরের ম্যাচটা আমার শেষ ম্যাচ হতে চলেছে।”
সুনীলের সংযোজন, “যে মুহূর্তে নিজেকে বললাম যে পরের ম্যাচটাই আমার শেষ, তখনই স্মৃতিরা ভিড় করতে শুরু করল। ফুটবলের ব্যাপারে অনেক কথা ভাবতে শুরু করলাম। এই কোচ, ওই কোচ, সেই দল, সেই ফুটবলার, ওই মাঠ, সেই অ্যাওয়ে ম্যাচ, ওই ভাল ম্যাচ বা খারাপ ম্যাচ, সব ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স এক ঝটকায় আমার চোখের সামনে ভেসে এল।”