আস্থা: আক্রমণে সুনীলই প্রধান শক্তি স্তিমাচের। ফাইল চিত্র।
জাতীয় দল নিয়ে কলকাতায় পৌঁছনোর পরেই মাঠ নিয়ে অসন্তুষ্ট জাতীয় কোচ ইগর স্তিমাচ। এএফসি এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জনের জন্য কর্নাটকের বেল্লারিতে প্রথম পর্বের মহড়া সেরে সোমবার কলকাতায় পা দিয়ে স্টেডিয়াম সংলগ্ন প্রস্তুতি মাঠে অনুশীলন করেন সুনীল ছেত্রীরা। সূত্রের খবর, সেই মাঠ পছন্দ হয়নি স্তিমাচের। তাই মঙ্গলবার সেখানে অনুশীলন না করে দুপুরে দল নিয়ে তিনি চলে যান রাজারহাটে সবর্ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের জাতীয় উৎকর্ষবৃদ্ধি কেন্দ্রের মাঠে। সেখানেই ঘণ্টা দেড়েক অনুশীলন সেরে হোটেলে ফেরেন তিনি।
আজ, বুধবার এটিকে-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে জাতীয় দল। সে কথা জানিয়ে এ দিন ভাচুর্য়াল সাংবাদিক বৈঠকে স্তিমাচ বলেন, ‘‘বেল্লারিতে শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছিল। এখানে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে নিজেদের আরও তৈরি করে নিতে হবে এএফসি এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচের আগে।’’ ১৭ ও ২০ মে আই লিগ তারকাদের নিয়ে গঠিত দলের সঙ্গে দ্বিতীয় অনুশীলন ম্যাচ খেলার পরে দোহা উড়ে যাবে ভারতীয় দল। সেখানে জ়াম্বিয়া (২৫ মে) ও জর্ডনের (২৮ মে) বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ৩০ মে কলকাতায় ফিরবে ভারতীয় দল।
এটিকে-মোহনবাগানের প্রীতম কোটাল, লিস্টন কোলাসো, সন্দেশ জিঙ্ঘনেরা তাঁর দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তাঁদের সম্পর্কে স্তিমাচের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভারতীয় দলের আটজন ফুটবলার এটিকে-মোহনবাগানে রয়েছে। ওদের দেখে নেওয়া যাবে এই প্রস্তুতি ম্যাচে।’’বুধবারই দলের সঙ্গে যোগ দেবেন মুম্বই সিটি এফসি-র তিন ফুটবলার আপুইয়া, বিপিন সিংহ ও রাহুল ভেকে। কিন্তু ২৭ এপ্রিল এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে বেল্লারির শিবিরে যোগ না দিয়ে কেন এত দিন পরে তাঁরা জাতীয় শিবিরে যোগ দিচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও সে ব্যাপারে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ। চোটের কারণে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে রহিম আলি, নরেন্দ্র গহলৌত ও চিঙ্গলেনসানা সিংহকে।
আগামী বছর এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বের জন্য জুনে বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হবে কলকাতায়। ‘ডি’ গ্রুপে ভারতের (ফিফা র্যাঙ্কিং ১০৬) সঙ্গে রয়েছে আফগানিস্তান (১৫০), হংকং (১৪৭) ও কাম্বোডিয়া (১৭১)। প্রত্যেকেই ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের চেয়ে পিছিয়ে। গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হলেই মূলপর্বে চলে যাবে স্তিমাচের দল। তা না হলেও পাঁচটি সেরা রানার্স দলের মধ্যে থাকতে পারলেও মূলপর্বে যাওয়ার রাস্তা থাকবে। ১৩ দল ইতিমধ্যেই মূলপর্বে চলে গিয়েছে। এ বার গ্রুপ সেরা ছয় দল ও সেরা পাঁচ রানার্স দলের যাওয়ার পরীক্ষা মূলপর্বে।
স্তিমাচ যদিও এ ব্যাপারে মাথা না ঘামিয়ে বলছেন, ‘‘গ্রুপে আমরাই ফেভারিট। তা নিয়ে গোপনীয়তার কিছু নেই। ভারতকে মূলপর্বে দেখছি। এর আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচে কলকাতায় জিততে পারিনি। তাই এখানকার দর্শকদের সামনে এ বার ভাল খেলে শেষ ম্যাচের পরে ওঁদের সঙ্গে উৎসব করতে চাই।’’ যোগ করেছেন, ‘‘গ্রুপের সব দল সম্পর্কেই খোঁজখবর রাখছি। বিশেষ করে, আফগানিস্তানের জন্য প্রস্তুতি রাখছি। কারণ ওদের ফুটবলারেরা শারীরিক ভাবে শক্তপোক্ত। তা ছাড়া ওদের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাও রয়েছে। ওরা একটু অন্য ধারায় ফুটবল খেলে। হংকং দলেও তিন ব্রাজিল-জাত ফুটবলার রয়েছে। ওদের তথ্যও রাখছি।’’
স্তিমাচ আস্থা রাখছেন জাতীয় অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর উপরে। অক্টোবরে নেপালের বিরুদ্ধে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পরে ফের জাতীয় দলে ফিরেছেন সুনীল। ভারতীয় কোচের কথায়, ‘‘সুনীল আমার দলের আক্রমণ ভাগের প্রধান শক্তি। ভাল ছন্দে রয়েছে এখনও। প্রস্তুতি শিবিরেও ভাল করছে। এর আগে রহিম আলি ও সুনীলের ভাল জুটি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এ বার রহিম নেই।’’