অভিযুক্ত কর্তা রুবিয়ালেস। — ফাইল চিত্র।
মহিলাদের বিশ্বকাপে চুমুকাণ্ডে অভিযুক্ত ফুটবল কর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করল স্পেনের সরকার। স্পেনের মহিলা ফুটবলার জেনিফার এরমোসো শারীরিক নিগ্রহ করেছেন কি না সে বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। লুইস রুবিয়ালেস নামে ওই কর্তা গত রবিবার থেকেই নিজের কাজের জন্যে সমালোচিত হচ্ছেন। তাঁকে নিলম্বিত করেছে ফিফা।
স্পেনের সর্বোচ্চ আদালতের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল কোর্টের বিচারকের রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছেন। শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগের তদন্ত করা হবে। ১৫ দিনের মধ্যে এরমোসো মামলা করতে পারেন। এ ছাড়া, এক নাবালিকার সামনে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সে দিন দর্শকাসনে স্পেনের রাজকন্যা ইনফান্তা সোফিয়া হাজির ছিল। তার সামনেই উচ্ছ্বাস করতে গিয়ে নিজের যৌনাঙ্গ চেপে ধরে অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন রুবিয়ালেস।
শোনা গিয়েছিল তিনি ইস্তফা দেবেন। কিন্তু দু’দিন আগেই রুবিয়ালেস স্পষ্ট করে দেন, তিনি পদত্যাগে রাজি নন। তার পরেই স্পেনের মহিলা দলের ৮২ জন ফুটবলার জানান, তাঁরা জাতীয় দলের হয়ে খেলবেন না। প্রধান কোচ জর্জ ভিলদা বাদে বাকি কোচিং স্টাফেরা পদত্যাগ করেছেন। এত কিছুর পরেও রুবিয়ালেসের দাবি, এরমোসোর সঙ্গে তাঁর চুম্বন সম্মতির ভিত্তিতেই হয়েছে। এরমোসো তা মানতে চাননি।
এ দিকে, ছেলেকে ক্রমাগত নানা ভাবে হেনস্থা হতে দেখে প্রতিবাদের পথ বেছে নিয়েছেন রুবিয়ালেসের মা বেজার। দক্ষিণ স্পেনের মট্রিলের ডিভিনা পাস্তোরা গির্জায় নিজেকে স্বেচ্ছাবন্দি করেছেন ৭১ বছরের বৃদ্ধা। জানিয়েছেন, যত দিন না তাঁর ছেলের অপমান, হেনস্থা বন্ধ হবে তত দিন অনশন চালাবেন। থাকবেন স্বেচ্ছাবন্দিও। এক দানা খাবারও দাঁতে কাটবেন না। অভিযোগের যথাযথ তদন্তের দাবি করেছেন।
বেজারের বিশ্বাস, তাঁর ছেলে কোনও ষড়যন্ত্রের শিকার। স্পেনের মহিলা ফুটবলার জেনিফার এরমোসো সত্য বলছেন না বলেও দাবি করেছেন রুবিয়ালেসের মা। তাঁর ছেলে নির্দোষ বলেই মনে করেন তিনি। ছেলে সুবিচার পাবে বলেও আশাবাদী তিনি। স্থানীয় সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘‘জানি না হঠাৎ কেন আমার ছেলের সঙ্গে এমন নিষ্ঠুর আচরণ করা হচ্ছে। এর পিছনে নিশ্চিত ভাবে অন্য গল্প রয়েছে। রুবিয়ালেস তো কারও ক্ষতি করেনি।’’
পরিবারের অন্য সদস্যেরা এক চিকিৎসককে নিয়ে বেজারের কাছে গিয়েছিলেন রবিবার দুপুরে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এক চিকিৎসকও। কারও সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি বৃদ্ধা। বেশ কিছু ক্ষণ গির্জার দরজায় ধাক্কা দেওয়ার পর খোলেন বেজার। কিন্তু দু’একটি কথা বলেই ভিতরে চলে যান। রবিবার সকালে গির্জা পরিষ্কার করার সময় ভিতরে ঢুকে পড়েছিলেন বেজার। সাফাই কর্মী কোনও কাজে বাইরে যেতেই ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন।