সুনীল ছেত্রী। —ফাইল চিত্র।
সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে আগেই উঠে গিয়েছিল ভারত। মঙ্গলবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে ধারে-ভারে এগিয়ে থাকা কুয়েতকেও আটকে দিলেন সুনীল ছেত্রীরা। বলা ভাল, শেষবেলায় রক্ষণের ভুলে জয় হাত ছাড়া হল ইগর স্তিমাচের দলের। কাজে এল না সুনীলের গোল।
পাকিস্তান এবং নেপালকে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা আগেই পাকা করে নিয়েছিলেন সুনীলরা। সেই হিসাবে কুয়েতের বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল নিয়মরক্ষার। সেই ম্যাচও হালকা ভাবে নেয়নি ভারতীয় দল। তার পুরস্কারও পেলেন সুনীলরা। ভাল খেললেন গোলরক্ষক অমরিন্দর সিংহ। কুয়েতের একাধিক ভাল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছেন ভারতীয় দলের শেষ প্রহরী।
আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে প্রথম থেকেই জমে উঠেছিল ম্যাচ। শুরুটা অবশ্য কুয়েতই ভাল করেছিল তুলনায়। প্রথম ৫ মিনিট খেলা হয় মূলত ভারতের অর্ধেই। ভারতের প্রথম আক্রমণ ম্যাচের ৬ মিনিটে। আকাশের ক্রশ ধরতে পারেননি সুনীল। এর পর ধীরে ধীরে খেলার রাশ নিজেদের দখলে নিয়ে নেন ভারতীয়রা। প্রথম ১৬ মিনিটের ৬৬ শতাংশ সময় বল ছিল ভারতীয় দলের দখলে। মহেশ সিংহ, সুনীলদের আটকাতে কুয়েতের রক্ষণ অফ সাইডের ফাঁদ পেতে রেখেছিল প্রথম থেকেই। সেই ফাঁদে একাধিক বার পড়েছেন ভারতীয়রা। স্তিমাতের ছেলেরা খেলার রাশ ধরে নেওয়ার পর কুয়েত প্রতিআক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলতে শুরু করে। খেলার গতির কিছুটা বিরুদ্ধেই ২৫ মিনিটে গোল পেয়ে যায় কুয়েত। কিন্তু ভারতের অনুকূলে গোল কিক দেন রেফারি। গোল বাতিল হওয়ায় কুয়েতের ফুটবলাররা প্রতিবাদ করেন। কুয়েতের সহকারী কোচকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। পরে রিল্পেতে দেখা যায় সাইড নেট দিয়ে বল গোলের মধ্যে ঢুকে ছিল। প্রথমার্ধের শেষ দিকে কুয়েত আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ালেও লাভ হয়নি। বরং সংযুক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে গোল করে ভারতকে গোল করে এগিয়ে দেন সুনীল। কর্ণার থেকে অনিরুদ্ধ থাপা সুনীলকে লক্ষ্য করে বল দেন। গোল করতে ভুল করেননি ভারতীয় দলের অধিনায়ক। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে ভারত।
পিছিয়ে থাকা কুয়েত দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আগ্রাসী ফুটবল খেলতে শুরু করে। কিছুটা গাজোয়ারি ফুটবল খেলতেও দেখা যায় কুয়েতের ফুটবলারদের। তা নিয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৬৩ মিনিটে। দু’দলের ফুটবলারদের ঝগড়ার মধ্যে ঢোকায় হলুদ কার্ড দেখতে হয় ভারতের কোচ স্তিমাচকে। পরে ৮০ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড এবং লাল কার্ড দেখেন স্তিমাচ। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচেও লাল কার্ড দেখেছিলেন। চড়া মেজাজে দ্বিতীয়ার্ধে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রেফারিকে একাধিক বার হলুদ কার্ড দেখাতে হয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে কয়েকটি ভাল সেভ করেন অমরিন্দর। ঝামেলায় জড়িয়ে ৯০ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন ভারতের রহিম আলি এবং কুয়েতের হামাদ আলকাল্লাফ। ভারতের জয় যখন প্রায় নিশ্চিত মনে হচ্ছে, তখনই রক্ষণের ভুলে ছন্দপতন। ৯৩ মিনিটে আনোয়ার আলির আত্মঘাতী গোলে সমতা ফেরায় কুয়েত।
মঙ্গলবারের ম্যাচ ড্র হওয়ায় গোল পার্থক্যে গ্রুপে দ্বিতীয় হল ভারত। সেমিফাইনালে সুনীলদের খেলতে হবে লেবাননের বিরুদ্ধে। গ্রুপের অন্য ম্যাচে হেরে গেল পাকিস্তান। নেপালের কাছে ১-০ ব্যবধানে হারল তারা।