ইস্টবেঙ্গল-মুম্বই ম্যাচে বল দখলের লড়াই। ছবি: ফেসবুক।
টানা ১১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর ইন্ডিয়ান সুপার লিগের শেষ ম্যাচে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের কাছে হেরে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। মঙ্গলবার ঘরের মাঠ যুবভারতীতেও মুম্বই সিটি এফসির কাছে ০-১ ব্যবধানে হেরে গেল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। ক্লেটন সিলভাহীন ইস্টবেঙ্গলকে এ দিন কার্যত দিশেহারা দেখাল। মুম্বইয়ের গোলদাতা ইকের গুয়ারোচেনা। মুম্বইয়ের হয়ে এ দিনই অভিষেক হল তাঁর।
সোমবারই ঘন ঘন ম্যাচ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন কুয়াদ্রাত। ইস্টবেঙ্গল কোচের চিন্তা ছিল ক্লেটনকে না পাওয়া নিয়েও। তাঁর আশঙ্কা যে অমূলক ছিল না, শক্তিশালী মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে তা প্রমাণ করে দিলেন ইস্টবেঙ্গলের অন্য ফুটবলারেরা। মুম্বইয়ের আগ্রাসী ফুটবলের সামনে কোনও সময়ই দানা বাঁধল না লাল-হলুদ ব্রিগেডের ফুটবল। রক্ষণ, মাঝমাঠ, আক্রমণ— তিন ক্ষেত্রেই পিছিয়ে থাকল সুপার কাপ চ্যাম্পিয়নেরা।
শুরু থেকেই মুম্বই আগ্রাসী ফুটবল খেলতে শুরু করে। দু’টো উইং ব্যবহার করে মুম্বইয়ের ফুটবলারেরা একের পর এক আক্রমণ তুলে আনেন ইস্টবেঙ্গল বক্সে। প্রতি আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলা কুয়াদ্রাতের ছেলেরা যে সুযোগ এক দম পাননি, তা নয়। কিন্তু কেউই কাজে লাগাতে পারলেন না। প্রথম ১০ মিনিট সমানে সমানে লড়াই হলেও খেলার বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় মুম্বই। ২৪ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের ভুলেই সহজ গোল করেন ইকের। সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে দ্বিতীয়ার্ধে কুয়াদ্রাত মাঠে নামান নন্দকুমার ও ভিক্টর ভাসকুয়েজক। তাতেও লাভের লাভ হয়নি। ৭৪ মিনিটে মহেশের কাছে থেকে মুম্বই বক্সে ভাল বল পেয়েছিলেন নন্দকুমার। গোল করার মতো জায়গায় থেকেও অকারণ বেশি সময় নিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। বিক্ষিপ্ত ভাবে দু’একটা সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। অন্য দিকে, মুম্বইয়ের সংগঠিত আক্রমণের সামনে একাধিক বার ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের। কুয়াদ্রাতকে দলের রক্ষণ সংগঠন নিয়ে এই ম্যাচের পর নিশ্চিত ভাবেই চিন্তা করতে হবে।
মঙ্গলবার যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গলকে দেখে কখনও মনে হয়নি, জিততে পারে। খেলায় পরিকল্পনার অভাব ছিল স্পষ্ট। রক্ষণের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব দেখা গিয়েছে একাধিক বার। আবার আক্রমণও ছিল নির্বিষ। গোটা ম্যাচে মুম্বইয়ের গোল লক্ষ্য করে মাত্র চারটে শট মেরেছেন লালহলুদ ফুটবলারেরা।
এ দিনের হারের ফলে আইএসএলের শেষ পাঁচ ম্যাচ জয়ের মুখ দেখতে পেল না ইস্টবেঙ্গল। ১৩ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের ১০ নম্বরে থাকল লাল-হলুদ শিবির।