আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন সেনেগালের বিরুদ্ধে আজ, সোমবার কাতার বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে নেদারল্যান্ডস। ডাচ শিবিরের বড় স্বস্তির জায়গা নিশ্চিত ভাবে প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই বায়ার্ন মিউনিখ স্ট্রাইকার সাদিয়ো মানের ছিটকে যাওয়া।
একইসঙ্গে লুইস ফান হালের দলের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড মেম্ফিস দেপাইয়ের হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট, যা থেকে তিনি এখনও মুক্ত হতে পারেননি। ফলে তাঁকে বাদ দিয়ে সেনেগালের বিরুদ্ধে দল তৈরি করছেন ফান হাল।
প্রথম ম্যাচে দেপাইকে না পাওয়া নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে ফান হাল বলেছেন, ‘‘মানের ছিটকে যাওয়া যেমন সেনেগালের কাছে ধাক্কা, তেমনই আমাদের সমস্যা দেপাইয়ের চোট। ওকে ভাবনায় রেখে রণকৌশল ঠিক করেছিলাম। এখন সবকিছু নতুন করে ভাবতে হবে।’’
কাতার পৌঁছে দলের সঙ্গে অনুশীলন করেন দেপাই। শেষ দু’মাস ধরে তিনি হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যায় ভুগছেন। রবিবার অনুশীলন শেষ করে ডাচ তারকা বলেছেন, ‘‘খুব ভাল অনুশীলন করলাম। মনে হল ম্যাচে যা যা করি, সেটা সম্ভব একমাত্র ৯০ মিনিট খেলার অবস্থায় থাকলেই।’’
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমার সঙ্গে জাতীয় কোচের সহমত হওয়া বা না হওয়াটা কোনও বড় বিষয় নয়। আসল ব্যাপার তিনি কী ভাবছেন। দলের জন্য কোনটা ভাল অথবা কোনটা খারাপ, সেটা উনিই ঠিক করবেন। আমার খেলার বিষয়ও নির্ভর করছে কোচের সিদ্ধান্তের উপরে।’’
দেপাই আরও বলেছেন, ‘‘আমার লক্ষ্য একটাই। দলের জন্য দারুণ কিছু করা। তবে তা এক ম্যাচের ব্যাপার নয়। পুরো প্রতিযোগিতা জুড়ে সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। এটাও ঘটনা যে, কখনও নিজের সুরক্ষার কথা কিছুটা ভাবতে হয়। তার জন্য অবশ্য কোচও আছেন।’’ নিজের চোট নিয়ে দেপাই বলেছেন, ‘‘হ্যামস্ট্রিং নিয়ে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ভুগছি। এর মধ্যেও নিজেকে বিশ্বকাপের জন্য তৈরি রাখতে সব চেষ্টাই করেছি। অবশ্য প্রত্যেক খেলোয়াড়কেই সেটা করে যেতে হয়। আমি ব্যতিক্রমী নই। অনুশীলনটাই শেষ নয়। মানসিক ভাবেও শক্তিশালী থাকতে হয়।’’
এ দিকে, লিভারপুলে মানের প্রাক্তন সতীর্থ এবং এ বারও নেদারল্যান্ডস রক্ষণকে যিনি নেতৃত্ব দিতে তৈরি থাকবেন, সেই ভার্জিল ফান ডাইক বলেছেন, ‘‘সাদিয়োর জন্য সত্যিই খারাপ লাগছে। ব্যক্তিগত ভাবে জানি কাতারে ভাল কিছু করতে ও কী পরিমাণ পরিশ্রম করেছিল। মানে আমার খুবই কাছের বন্ধু। কেমন আছে জানতে কয়েক বার ওকে ফোনও করি। খারাপ লাগছে বন্ধু বিশ্বকাপটা খেলতে পারবে না ভেবেও।’’ ফান ডাইক অবশ্য এও বলেন, ‘‘আশা করব মানের না থাকা আমাদের কিছুটা সুবিধেও করে দেবে। আসলে যে কোনও প্রতিযোগিতাতে প্রথম ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুরুতেই ভাল জয় যে কোনও দলে ছন্দ তৈরি করে দেয়।’’
বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস আছে গ্রুপ এ-তে। ফান হালের দল নকআউট যেতে না পারলে সেটাই হবে অঘটন। সোমবারের পরে তাদের ম্যাচ রয়েছে যথাক্রমে ইকুয়েডর (২৫ নভেম্বর) ও কাতারের (২৯ নভেম্বর) বিরুদ্ধে। য়োহান ক্রুয়েফ, রুড খুলিট, মার্কো ফান বাস্তেনদের দেশ কখনও বিশ্বকাপ জেতেনি। অথচ নেদারল্যান্ডস তিন বারের ফাইনালিস্ট। যার মধ্যে ’৭৪ ও ’৭৮-এ পর দু’বার ফাইনালে তারা হেরে যায় যথাক্রমে পশ্চিম জার্মানি ও আর্জেন্টিনার কাছে। ১৯৯০ সালেও ফাইনালে পরাজিত হয় নেদাল্যান্ডস। সে বার স্পেনের কাছে। এখন দেখার মরুশহরে তারা দারুণ কিছু করতে পারে কি না।