পেলেকে এই টাকা দিয়েছিল একটি বিখ্যাত ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থা। ফাইল ছবি
কাজটা ছিল খুবই সামান্য। ম্যাচের মাঝে এক বার শুধু জুতোর ফিতে বাঁধতে হবে। সেই কাজের জন্যেই বিশ্বকাপের একটি ম্যাচে এক লক্ষ ২০ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি টাকা) পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যুর পর এই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। পেলেকে এই টাকা দিয়েছিল একটি বিখ্যাত ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থা।
পেলের মৃত্যুর পর গোটা ঘটনার বিবরণ টুইটারে দিয়েছেন আমেরিকার ব্যবসায়ী জো পমপ্লিনো। দুই ভাইয়ের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে লাভবান হয়েছিলেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার। ঠিক কী হয়েছিল ঘটনাটি?
তার আগে ফিরে যেতে হবে ১৯২৪ সালে। মায়ের কাপড় কাচার ঘর থেকেই জুতোর ব্যবসা শুরু করেন জার্মানির দুই ভাই অ্যাডলফ এবং রুডলফ ড্যাসলার। প্রথমে সেটির নাম ছিল ‘ড্যাসলার ব্রাদার্স শু ফ্যাক্টরি’। ১৯৪০-এর দশকে দুই ভাই আলাদা ভাবে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের সম্পর্ক তখন তলানিতে।
কয়েক বছরের মধ্যেই পেলের উত্থান। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারকে নিয়ে তখন দুই সংস্থার মধ্যে লড়াই শুরু হয়ে গেল। বিভিন্ন সংস্থাই তখন পেলেকে নিজের মুখ করতে আগ্রহী। তবে দুই ভাইয়ের সংস্থার মধ্যে লড়াই এমন জায়গায় পৌঁছল, যে তারা পারস্পরিক চুক্তি করে সিদ্ধান্ত নিল কেউই পেলেকে সই করাবে না।
১৯৭০ সালে সেই চুক্তি ভাঙে রুডলফের সংস্থা। পেলেকে বলা হয়, ব্রাজিল বনাম পেরুর কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ শুরু হওয়ার ঠিক আগে মিডফিল্ডের দিকে এগিয়ে যেতে এবং জুতোর ফিতে বাঁধতে। তার জন্যই পেলেকে এক লক্ষ ২০ হাজার ডলার দেওয়ার কথা বলা হয়। অর্থ দেওয়া হয়েছিল ক্যামেরাম্যানকেও। পেলে জুতোর ফিতে বাঁধার সময় ক্যামেরাম্যান ‘জুম’ করে শুধু মাত্র পেলের দিকেই ফোকাস করেন। পেলে কী জুতো পরে রয়েছেন, সেটা টিভির দর্শকদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়।
এর পরেই এক লাফে সেই সংস্থার জুতোর বিক্রি বেড়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে বিরোধী সংস্থা। চুক্তি সেখানেই ভেঙে যায়। এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থা তারাই। দুই সংস্থার মধ্যে রেষারেষিও রয়েছে।