গুরুতর অসুস্থ অবস্থাতেও বিশ্বকাপের কিছু খেলা দেখেছিলেন পেলে। ফাইল ছবি।
ফুটবলজীবনে আর্জেন্টিনাকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়েননি। অথচ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আর্জেন্টিনাকেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন পেলে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থাতেও হাসপাতালে বিশ্বকাপের খেলা দেখতেন। যদিও শারীরিক কারণে দেখা হয়নি লিয়োনেল মেসিদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মুহূর্ত।
মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখতে চেয়েছিলেন পেলে। এমনই ছিল তাঁর শেষ ইচ্ছা। অবাক করার মতো হলেও এটাই সত্যি। তিন বার বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিলের প্রাক্তন ফুটবলার আসলে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের স্বার্থেই এমন চেয়েছিলেন।
অসুস্থ পেলে বরাবরের মতোই চেয়েছিলেন ব্রাজিলের জয় দেখতে। নেমাররা ছিটকে যাওয়ার পর পেলে সরাসরি সমর্থন করতে শুরু করেন আর্জেন্টিনাকে। নেমাররা কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় নেওয়ার পর আর্জেন্টিনা ছাড়া কোনও দল জিতুক চাননি তিনি।
পেলের এই ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন তাঁর মেয়ে কেলি নাসিমেন্টো। মেসির স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ়োর সঙ্গে নিজের একটি ছবি সমাজমাধ্যমে দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘মেসির স্ত্রী খুব ভাল এক জন মানুষ। মেসির সঙ্গে দেখা করার সুযোগ এখনও হয়নি। তবে আন্তোনেল্লার সঙ্গে আমার দেখা হলে সব সময় মেসির জন্য কিছু না কিছু বার্তা পাঠিয়েছি। বিশ্বকাপে ব্রাজিল যখন ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে গেল, তখন বাবার শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। সকলেই চাইছিলেন আমার বাবার জন্য বিশ্বকাপ জিতুক ব্রাজিল। বাবা অবশ্য অনেকের থেকে ফুটবলটা অনেক ভাল বুঝতেন। হয়তো ব্রাজিলের খেলা দেখে খুব একটা আশাবাদী হতে পারেনি। তাই বলেছিলেন, যে কোনও দেশ চ্যাম্পিয়ন হলেই খুশি হবেন। ভাল ফুটবলেই তাঁর আনন্দ।’’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘ব্রাজিলের বিদায়ের পর বহু মানুষ হাসপাতালে আসতেন বাবাকে দেখতে। অনেকেই বাবাকে প্রশ্ন করতেন, আপনি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসাবে কাদের দেখতে চান? নিশ্চয় আর্জেন্টিনাকে দেখতে চান না! উত্তরে বাবার মুখে আর্জেন্টিনার নাম শুনে প্রায় সকলেই বিস্মিত হতেন। বাবা বলতেন, হ্যাঁ মেসির হাতেই বিশ্বকাপ দেখতে চাই।’’
কেলি জানিয়েছেন, ‘‘শরীর ভাল না থাকায় বাবা বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখতে পারেননি টেলিভিশনে। যদিও আর্জেন্টিনার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা শুনে খুব আনন্দ পেয়েছিলেন।’’ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে পেলে দেখেছিলেন কাতার বিশ্বকাপের বেশ কিছু খেলা। মাঝেমধ্যে টুইট করে জানাতেন নিজের অনুভূতি। গত ২৯ ডিসেম্বর ৮২ বছর বয়সে প্রয়াত হন পেলে। তার ঠিক ১১ দিন আগে ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা।