— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
চলতি বছর কলকাতা লিগে ৩০ নভেম্বর হওয়ার কথা ছিল কলকাতা ডার্বি। কিন্তু খেলতে চায়নি মোহনবাগান। ডার্বির দিন পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিল তারা। কিন্তু সেই আবেদন মানতে চায়নি আইএফএ। ফলে নির্ধারিত দিনে দল নামায়নি মোহনবাগান। সেই কারণে ‘ওয়াকওভার’ দেওয়া হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। এই ঘটনা অবশ্য প্রথম নয়। সব মিলিয়ে কলকাতা ডার্বিতে মোট আট বার দল নামায়নি দুই প্রধান। তার মধ্যে মোহনবাগান পাঁচ বার ও ইস্টবেঙ্গল তিন বার। তার ফলে ইস্টবেঙ্গল পাঁচ বার ও মোহনবাগান তিন বার ‘ওয়াকওভার’ পেয়েছে। কোন কোন ম্যাচে সেই ঘটনা ঘটেছে দেখে নেওয়া যাক।
১৯৩৯ কলকাতা লিগ: দল নামায়নি ইস্টবেঙ্গল। ফলে ‘ওয়াকওভার’ পেয়ে যায় মোহনবাগান।
১৯৫৪ কলকাতা লিগ: দ্বিতীয় বারের জন্য দল নামায়নি লাল-হলুদ। ফলে সেই ম্যাচেও ‘ওয়াকওভার’ পায় সবুজ-মেরুন।
১৯৬৮ কলকাতা লিগ: সে বারও দল নামায়নি ইস্টবেঙ্গল। তৃতীয় বারের জন্য ‘ওয়াকওভার’ পায় মোহনবাগান।
১৯৭২ আইএফএ শিল্ড ফাইনাল: খেলায় এগিয়ে ছিল মোহনবাগান। প্রবল বৃষ্টিতে মাঝপথে খেলা বন্ধ করতে হয়। পরে আর একটি দিন ঠিক করা হয় খেলার। রিপ্লে খেলতে চায়নি মোহনবাগান। দল নামায়নি তারা। ফলে ইস্টবেঙ্গল ‘ওয়াকওভার’ পেয়ে শিল্ড জেতে।
১৯৭৪ কলকাতা লিগ: দু’বছর পরে আবার লিগের ম্যাচে দল নামায়নি মোহনবাগান। সে বারও ‘ওয়াকওভার’ পায় ইস্টবেঙ্গল।
১৯৮৫ কলকাতা লিগ: প্রথম লেগে খেললেও ফিরতি লেগে দল নামায়নি মোহনবাগান। ফলে ‘ওয়াকওভার’ পায় ইস্টবেঙ্গল।
২০১৬ কলকাতা লিগ: চতুর্থ বারের জন্য ডার্বিতে দল নামায়নি মোহনবাগান। ফলে ‘ওয়াকওভার’ পায় লাল-হলুদ।
২০২৩ কলকাতা লিগ: আইএফএ-র সঙ্গে মতপার্থক্যে দল নামায়নি মোহনবাগান। পঞ্চম বারের জন্য ‘ওয়াকওভার’ পায় ইস্টবেঙ্গল।
বৃহস্পতিবার ম্যাচের প্রায় দু’ঘণ্টা আগেই ইস্টবেঙ্গলের টিম বাস ফুটবলারদের নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল নৈহাটি স্টেডিয়ামে। কিছু ক্ষণ পরে লাল-হলুদ ফুটবলারেরা মাঠে নেমে ওয়ার্ম-আপ করতে থাকেন। কিন্তু কোথাও মোহনবাগানের দেখা মিলছিল না। রেফারি জানান, এক ঘণ্টা অপেক্ষা করা হবে। তার মধ্যেও মোহনবাগানের ফুটবলারেরা মাঠে হাজির না হলে ইস্টবেঙ্গলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। সেটাই হয়। দুপুর ২টো থেকে ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা ছিল। ৩টে বেজে গেলেও দেখা যায়নি মোহনবাগান দল বা তাদের কোনও কর্তাকে।
কলকাতা ডার্বি দু’দলের সমর্থকের কাছেই আবেগ। ডুরান্ড কাপে দু’টি ডার্বিতে সমর্থকদের উন্মাদনা দেখা গিয়েছিল। আইএসএল ডার্বি বাতিল হওয়ায় আগ্রহ ছিল কলকাতা লিগের ডার্বি ঘিরেও। সে যতই মহমেডান আগেই লিগ জিতে যাক বা দু’দলের রিজ়ার্ভ ফুটবলারেরা খেলুন, ডার্বি মানেই অন্য আবেগ। কিন্তু সেই ম্যাচই পুরোপুরি নিষ্প্রাণ হয়ে গেল।
ডার্বি হবে না জেনেই আগ্রহ ছিল না সমর্থকদের মধ্যে। ম্যাচের সময় হয়ে গেলেও নৈহাটি স্টেডিয়াম পুরোপুরি ফাঁকা ছিল। কোনও দলের সমর্থকই আসেননি খেলা দেখতে। ফলে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারেরা জয়ের উচ্ছ্বাস সমর্থকদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেননি। আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বলেন, “নিয়মমতোই ইস্টবেঙ্গল ওয়াকওভার পেয়েছে। তিন পয়েন্টও ওদের। মোহনবাগানকে কোনও শাস্তি দেওয়া হবে কি না এটা আইএফএ-র কমিটি ঠিক করবে।”
তথ্য: হরিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়