মোহনবাগান-রভশান ম্যাচের একটি মুহূর্ত। ছবি: সমাজমাধ্যম।
গোটা ম্যাচে একাধিক সুযোগ। একের পর এক পাস। তা সত্ত্বেও এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-এ এফসি রভশানের বিরুদ্ধে গোলমুখ খুলতে ব্যর্থ মোহনবাগান। প্রথমার্ধে তারা খারাপ খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়িয়ে বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেছিল যা থেকে তিন পয়েন্ট আসতেই পারত। তা হয়নি। তবু দলের পারফরম্যান্সে খুশি কোচ হোসে মোলিনা।
ম্যাচের পর মোলিনা বলেছেন, “দলের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। একটা কঠিন দলের বিরুদ্ধে ভাল ম্যাচ খেলেছি। রক্ষণ নিয়েও খুশি। দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের কাছে চার-পাঁচটা গোল করার সুযোগ এসেছিল। সেটা আমরা পারিনি। তবে দলের খেলায় খুশি।”
প্রথম একাদশে ভুল ফুটবলার বেছেছিলেন মানতে চাননি মোলিনা। বলেছেন, “আমি সেরা দলই নামিয়েছিলাম তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সে ভাবেই বেঞ্চ তৈরি রেখেছিলাম। জানতাম দ্বিতীয়ার্ধে খেলোয়াড়েরা ক্লান্ত হয়ে পড়বে। তখন রিজ়ার্ভ বেঞ্চের ফুটবলারদের দরকার লাগত। ওদের খেলোয়াড়েরা প্রথমার্ধে ভাল খেললেও শেষের দিকে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। আমরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। তবু বলব মনবীর, লিস্টন, দিমি প্রত্যেকে ভাল খেলেছে।”
ম্যাচের পরেই দর্শকাসন থেকে উঠেছে ‘গো ব্যাক মোলিনা’ স্লোগান। যদিও সেই প্রসঙ্গ উঠতেই হাসতে শুরু করলেন মোহনবাগান কোচ। বললেন, “সমর্থকদের সমীহ করি। ওদের কথায় কিছু মনে করছি না। আমি এখানে খুশি। নিজের কাজ করতে এসেছি। বৃহস্পতিবার নতুন করে শুরু করব। যত দিন না মোহনবাগান কিছু জিতছে তত দিন পর্যন্ত আমার কাজ চলতেই থাকবে। শুধু সমর্থকই নয়, সংবাদমাধ্যম, ম্যানেজমেন্ট সবাইকে নিয়ে খুশি। কেউ কেউ আমাকে নিয়ে অখুশি হতেই পারেন। ওদের মন জয় করতে চাই।”
দলের স্ট্রাইকারদের মধ্যে গোল করার ধারাবাহিকতা যে এখনও আসেনি তা মেনে নিয়েছেন মোহনবাগানের কোচ। বলেছেন, “জেসন, দিমির কাছ থেকে আমরা সব সময় গোল আশা করি। কিন্তু ওরা এখনও বেশি গোল করতে পারেনি। এই জায়গায় খামতি রয়েছে। ওদের আরও নিখুঁত হতে হবে। শারীরিক ভাবে শক্তিশালী হতে হবে।”
মোলিনার মতোই হতাশ দিমিত্রি পেত্রাতোসও। তাঁর একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়েছে। ম্যাচের পর পেত্রাতোস বলেন, “আমি হতাশ। চেষ্টার কোনও অভাব আমাদের মধ্যে ছিল না। সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। এই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের ম্যাচের জন্য তৈরি হতে হবে। এই ম্যাচে কোথায় ভুল হয়েছে জানি না। আমাদের আবার ম্যাচটা দেখতে হবে এবং শিখতে হবে।”
রেফারি সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ হলেও মুখে কিছু বললেন না পেত্রাতোস। তাঁর কথায়, “রেফারিকে নিয়ে কিছু বলতে চাই না। সবাই দেখেছে মাঠে কী হয়েছে। আমার পা থেকে রক্ত ঝরেছে। কিন্তু রেফারিকে নিয়ে আলাদা করে কিছু বলতে চাই না।”
মোহনবাগানের অধিনায়ক শুভাশিস বসু বলেছেন, “অনেক সুযোগ তৈরি করে কাজে লাগাতে পারিনি। সব মিলিয়ে দল ভাল খেলেছে। এসিএলের প্রথম ম্যাচে ড্র খারাপ ফল নয়। সবার কাছেই প্রথম একটা অভিজ্ঞতা ছিল। লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে পরের ম্যাচে ভুল না হয়। তবে এক পয়েন্টে খুশি। গোল খাইনি। রক্ষণ ভাল খেলেছে।”