স্মরণীয়: কাতার বিশ্বকাপে মেসির সঙ্গে ম্যাকলারেন। —ফাইল চিত্র।
আইএসএল ফাইনালে মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে ১-৩ গোলে হারের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই শক্তিশালী দল গড়তে আসরে নেমে পড়ল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। আগামী মরসুমে সবুজ-মেরুন জার্সি পরে দিমিত্রি পেত্রাতস, জেসন কামিংসদের পাশে অস্ট্রেলীয় বিশ্বকাপার জেমি ম্যাকলারেনের খেলা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
অস্ট্রেলিয়া (এ) লিগের ইতিহাসে সর্বাধিক গোলদাতা ৩০ বছর বয়সি ম্যাকলারেন। কাতার বিশ্বকাপেও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিনটি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। গ্রুপ পর্বে টিউনিশিয়ার বিরুদ্ধে ৬৪ মিনিটে নেমেছিলেন। ডেনমার্কের বিরুদ্ধে নামেন ৮২ মিনিটে। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর ম্যাচে ৭১ মিনিটে মাঠে নেমেছিলেন ম্যাকলারেন। মেলবোর্ন সিটির হয়ে ১৬৩ ম্যাচে ১১৫ গোল করেছেন তিনি। চার বার সোনার বুট পেয়েছেন তিনি। ট্রফি জিতেছেন ছ’টি। একটি ক্লাবের হয়ে ‘এ’ লিগে ১০০তম গোল করার নজিরও ম্যাকলারেনের দখলে।
কয়েক দিন আগেই মেলবোর্ন সিটি এফসি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন ম্যাকলারেন। তার পরেই অস্ট্রেলীয় তারকাকে নেওয়ার জন্য ঝাঁপায় মোহনবাগান ও মুম্বই সিটি এফসি। কিন্তু এই মুহূর্তে দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে কলকাতার শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাব। কারণ, মেলবোর্ন ও মুম্বই দু’টি ক্লাবই সিটি গ্রুপের অধীনে। ম্যাকলারেন শুধু মেলবোর্ন এফসি নন, সার্বিক ভাবে সিটি গ্রুপই ছাড়তে চান। এখানেই অস্ট্রেলীয় তারকাকে বিরাট অর্থে নেওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গিয়েছে মোহনবাগান। ইতিমধ্যেই আইএসএলের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল অনুসরণ করছেন ম্যাকলারেন। রবিবার ‘এ’ লিগে (এলিমিনেশন ফাইনাল) মেলবোর্ন ভিকট্রির বিরুদ্ধে খেলা ছিল মেলবোর্ন সিটির। গোল পাননি ম্যাকলারেন। তাঁর দল টাইব্রেকারে ২-৩ হেরে যায়। সূত্রের খবর এই কারণেই সরকারি ভাবে ম্যাকলারেনের সঙ্গে চুক্তির খবর ঘোষণা করেনি মোহনবাগান।
শনিবার রাতে মুম্বইয়ের কাছে হারের পর থেকেই নতুন মরসুমের জন্য শক্তিশালী দল গড়ার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে মোহনবাগান শিবিরে। প্রথম লক্ষ্য ম্যাকলারেনকে চুক্তিবদ্ধ করা। রবিবার কলকাতা ছাড়ার আগে কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস বললেন, ‘‘আগামী মরসুমে আরও শক্তিশালী দল গড়ব আমরা।’’ সূত্রের খবর, আর্মান্দো সাদিকুর বিদায় কার্যত নিশ্চিত। চেন্নাইয়িন এফসি-তে যাচ্ছেন কিয়ান নাসিরি, লালরিনলিয়ানা হামতে। জনি কাউকো, ব্রেন্ডন হামিল ও হেক্তর ইউতসের চুক্তি কি নবীকরণ করা হবে? হাবাস বললেন, ‘‘ফুটবলারদের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’’ নেওয়া হতে পারে এক জন ভারতীয় ডিফেন্ডারও। আগামী সপ্তাহেই হাবাসের সঙ্গে দল গঠন নিয়ে আলোচনায় বসতে পারেন ক্লাব কর্তারা।
মরসুমের মাঝপথে দায়িত্ব নিয়ে মোহনবাগানকে বদলে দিয়েছিলেন হাবাস-ই। যুবভারতীতে মুম্বইকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবার লিগ-শিল্ড জিতিয়েছেন দলকে। স্বপ্ন দেখেছিলেন আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ারও। কিন্তু শনিবার যুবভারতীতে ফাইনালে মুম্বইয়ের কাছে ১-৩ গোলে হেরে তা ভেঙে যায়। কামিংসের গোলে ৪৪ মিনিটে এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কেন চ্যাম্পিয়ন হতে পারল না মোহনবাগান? হাবাসের ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা এগিয়ে গিয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু মুম্বই আমাদের চেয়ে অনেক ভাল খেলেছে। ওদের উপরে চাপ সৃষ্টি করার সুযোগই পাইনি আমরা। তা ছাড়া কোনও দলের পক্ষেই সব ম্যাচ জেতা সম্ভব নয়।’’ কোথায় সমস্যা হচ্ছিল? হাবাসের বিশ্লেষণ, ‘‘অন্যান্য ম্যাচগুলিতে ছেলেরা দারুণ ভাবেই রক্ষণ সামলে আক্রমণে উঠেছে। কিন্তু ফাইনালে তা হয়নি।’’