বড় ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ আগেও অবিক্রিত বহু টিকিট। কতটা ভরবে যুবভারতীর গ্যালারি? ফাইল ছবি।
চেনা চাহিদা উধাও। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ ঘিরে টিকিটের যে চাহিদা থাকে তা নেই শনিবারের ডার্বি ঘিরে। খেলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেও অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে টিকিট। বড় ম্যাচ নিয়ে কি আগ্রহ নেই নতুন প্রজন্মের?
বুকমাইশো ডট কম-এর মাধ্যমে বড় ম্যাচের টিকিট অনলাইনে কেনার সুযোগ ছিল ফুটবলপ্রেমীদের। যে ম্যাচের টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি দেখতে অভ্যস্ত কলকাতা ময়দান, সেই ম্যাচের প্রচুর টিকিটই পড়ে রয়েছে ম্যাচ শুরুর দেড়-দু’ঘণ্টা আগে পর্যন্ত। পাওয়া যাচ্ছে ১০০, ১৫০ এবং ৪৯৯ টাকার টিকিট। অর্থাৎ, কোনও দামের টিকিটই সম্পূর্ণ বিক্রি হয়নি। সংশ্লিষ্ট সংস্থারটির কাছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের যে যে ব্লকের টিকিট ছিল, সেগুলির প্রায় কোনওটির আসনই ভর্তি হয়নি।
বড় ম্যাচের টিকিট বিক্রির এমন বেহাল দশা দেখে প্রশ্ন উঠতে পারে। বাঙালিকে কি তা হলে বাঙাল-ঘটির চিরাচরিত লড়াই আর আকর্ষণ করছে না? নাকি ফুটবল থেকেই মুখ ফেরাচ্ছে ক্রীড়াপ্রেমী বাঙালি? কারণ যাই হোক, ডার্বির টিকিট বিক্রির এমন করুণ হাল কিছুটা হলেও বিস্ময়কর। ইস্টবেঙ্গল গ্যালারির টিকিট বিক্রির হাল বেশি খারাপ।
প্রথমত, এটিকে মোহনবাগান আইএসএলের দ্বিতীয় পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে আগেই। অন্য দিকে ইস্টবেঙ্গলের আর কোনও সম্ভাবনা নেই। হতে পারে দুই ক্লাবের নিয়মরক্ষার ম্যাচ আকর্ষণ হারিয়েছে। দ্বিতীয়ত, গত সাতটি বড় ম্যাচে জয় পায়নি লাল-হলুদ শিবির। বার বার হেরে বিরক্ত ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা মুখ ফিরিয়েছেন মাঠ থেকে। মোহনবাগান সমর্থকরাও হয়তো বড় ম্যাচের আগের সেই উন্মাদনা বোধ করতে পারছেন না।
সাধারণ এই কারণগুলির পাশাপাশি আরও দু’টি কারণ শোনা যাচ্ছে ময়দানে কান পাতলে। মোহনবাগান সমর্থকদের একাংশ ক্লাবের নাম নিয়ে ক্ষুব্ধ। তাঁদের দাবি, মোহনবাগানের সামনে থেকে এটিকে শব্দটি সরালে আবার মাঠ ভরাবেন তাঁরা। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের একাংশের ক্ষোভ ক্লাবের শীর্ষ কর্তার বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, সেই কর্তার জন্যই গত কয়েক বছর ধরে সাফল্য নেই দলের। তাঁরাও বলছেন, সেই কর্তা সরলে মাঠ ভরাবেন তাঁরা। টিকিট বিক্রি না হওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে দু’দলের সমর্থকদের একাংশের এই বিদ্রোহী মনোভাব।
কারণ যাই হোক, কলকাতা ডার্বির টিকিট বিক্রির এই করুণ ছবি ক্রীড়াপ্রেমীর বাঙালির কাছে কিছুটা অপরিচিত। তবু মাঠে এসেছিলেন অনেকে। দু’দলের অনেক সমর্থকই প্রিয় দলকে সমর্থন করতে স্টেডিয়ামে এসেছিলেন। যতই হোক, মর্যাদার লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে তো আর এক দম ফাঁকা মাঠ ছেড়ে দেওয়া যায় না।